বেহালা খুনের চেষ্টা: শনিবার রাতে ঠাকুরপুকুর থানার আনন্দনগরে চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা। স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন মিলন বালা নামে এক যুবক। সেই সন্দেহ থেকেই শুরু হয় অশান্তি, আর তারই পরিণতিতে ঘটে রক্তাক্ত কাণ্ড। স্ত্রী কাজল বালার মুখ ও মাথায় ভারী পাথর দিয়ে আঘাত করেন তিনি। তারপর থানায় গিয়ে শান্ত গলায় জানান, “শেষ করে দিয়েছি।” মুহূর্তে স্তম্ভিত পুলিশ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার করেন রক্তাক্ত মহিলাকে।

সন্দেহ আর অশান্তির আগুনেই দগ্ধ সংসার
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনন্দনগরের এক ছোটো বাড়িতে থাকতেন দম্পতি মিলন ও কাজল বালা। প্রতিবেশীদের মতে, বহুদিন ধরেই তাঁদের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল। স্বামী মিলন প্রায়ই স্ত্রীকে নানা বিষয়ে সন্দেহ করতেন। ঝগড়া, অশান্তি, চিৎকার—এসব যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল তাদের জীবনে। শনিবার রাতেও এমনই এক তর্কাতর্কির মধ্যেই সীমা ছাড়িয়ে যায় রাগ।
‘শেষ করে দিয়েছি’— থানায় গিয়েই জানালেন স্বামী
ঘটনার পরে মিলন বাড়ি ছেড়ে সরাসরি ঠাকুরপুকুর থানায় পৌঁছে যান। পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে ঠান্ডা গলায় বলেন, “শেষ করে দিয়েছি।” তাঁর পোশাক তখন রক্তে ভেজা। প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়েন ডিউটিরত পুলিশকর্মীরা। পরে তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন কাজল বালা। মাথা ও মুখে গভীর ক্ষতচিহ্ন, পাশে রক্তে মাখা পাথর।
হাসপাতালে ভর্তি, শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক
প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গুরুতর জখম কাজল বালাকে। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর মাথা ও মুখে একাধিক সেলাই পড়েছে। বর্তমানে তিনি আইসিইউ-তে ভর্তি। চিকিৎসকেরা নজরদারিতে রেখেছেন তাঁকে।ওই তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে ঠাকুরপুকুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশের তদন্তে পুরনো মানসিক দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক অস্থিরতা ও অবিশ্বাস থেকেই এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিলন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই স্ত্রীকে সন্দেহ করছিলেন। তবে তাঁর কথার সত্যতা যাচাই করছে তদন্তকারীরা। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।ঠাকুরপুকুর থানার এক আধিকারিক বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস। অভিযুক্তের মানসিক অবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এলাকায় চাঞ্চল্য, প্রতিবেশীদের আতঙ্ক
রাতের বেলাতেই ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। সকলে স্তম্ভিত এমন নৃশংস ঘটনার পর। প্রতিবেশীদের একাংশ জানান, “ওদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত, কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর কিছু ঘটবে ভাবিনি।” গোটা আনন্দনগর এলাকায় এখন আতঙ্ক ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই রক্তাক্ত ঘটনা।

বেহালার ঠাকুরপুকুরে মর্মান্তিক ঘটনা। সন্দেহের জেরে স্ত্রী কাজল বালার মাথা-মুখ পাথর দিয়ে থেঁতলে দেন স্বামী মিলন বালা। এরপর সোজা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি, আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। পুলিশের হাতে আটক মিলনকে জেরা করছে তদন্তকারীরা।
                                                                        
                                                                            
                                                










