বিহারের ভাগলপুর জেলার নaugachia থেকে একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর আর্থিক কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে। 'সমাজ উন্নতি কেন্দ্র' নামক একটি এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত একজন আদায়কারী গ্রামের মহিলাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তির নামে প্রায় ₹1.40 কোটি টাকা সংগ্রহ করে, কিন্তু সেই টাকা ব্যাংকে জমা না করেই পালিয়ে যায়। মহিলারা তখন এই প্রতারণার শিকার হন, যখন ক্যানারা ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের ঋণ পরিশোধ না করার জন্য একটি নোটিশ ধরানো হয়।
মহিলারা ব্যাংকে গেলে ফাঁস হয় রহস্য
নোটিশ পাওয়ার পর গ্রামের তিন ডজনেরও বেশি মহিলা একসাথে নওগাচিয়া বাজারের ক্যানারা ব্যাংকের শাখায় যান এবং শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে জবাবদিহি চান। মহিলাদের অভিযোগ, তারা প্রতি মাসে সততার সাথে ঋণের কিস্তি এজেন্টকে দিতেন, কিন্তু এখন ব্যাংক বলছে যে টাকা জমা হয়নি। এই প্রতারণায় ক্ষুব্ধ মহিলারা ব্যাংক ম্যানেজারের যোগসাজশের অভিযোগ করেন এবং বলেন যে এজেন্ট ব্যাংকের সম্মতিক্রমে ₹1.40 কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
মহিলারা ব্যাংকে ব্যাপক হট্টগোল করেন এবং এখন এফআইআর (FIR) দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং গ্রামীণ মহিলারা নিজেদের প্রতারিত মনে করছেন।
কীভাবে ঘটল আর্থিক প্রতারণা
ক্যানারা ব্যাংক নওগাচিয়ার শাখা ব্যবস্থাপক ইমরান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, এনজিও 'সমাজ উন্নতি কেন্দ্র'-এর মাধ্যমে ব্যাংক প্রায় 95 জন মহিলাকে ঋণ দিয়েছিল। প্রতি দলে 5 থেকে 6 জন মহিলা ছিলেন, যাদের ₹1 লক্ষ থেকে ₹2 লক্ষ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়েছিল। এজেন্ট অমরেশ এবং সঞ্জিতের দায়িত্ব ছিল প্রতি মাসে কিস্তি সংগ্রহ করা এবং ব্যাংকে জমা করা।
প্রথমে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছিল, কিন্তু গত এক বছরে এই এজেন্টরা অনেক মহিলার চার থেকে পাঁচটি কিস্তি জমা করেনি। এর ফলস্বরূপ, ঋণের হিসাবগুলি এনপিএ (NPA - Non-Performing Asset) তে পরিণত হতে শুরু করে। শাখা ব্যবস্থাপকের মতে, এই কেলেঙ্কারির প্রভাব মহিলাদের সিভিল স্কোর (ক্রেডিট হিস্টোরি)-এর উপরও পড়েছে, যার ফলে তাদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি
কেলেঙ্কারি প্রকাশ পাওয়ার পর, ক্ষতিগ্রস্ত মহিলারা এখন আইনি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকেও ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে, এজেন্টদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত মহিলারা চান দোষীদের দ্রুত ধরা হোক এবং তাদের কষ্টের উপার্জন তাদের ফেরত দেওয়া হোক।
এই ঘটনা কেবল আর্থিক গাফিলতির নয়, বরং মহিলাদের বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার মতো একটি গুরুতর ঘটনা, যা বিহারের গ্রামীণ ব্যাংকিং সিস্টেমের উপর প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে।