হতাস জেলায় একটি বিড়ালের নামে আবাসিক শংসাপত্রের আবেদন জমা পড়ায় প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত হয়েছে। আবেদনে নাম, অভিভাবকের নাম ও ছবি—সবকিছুই ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যা ই-গভর্নেন্সের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
Bihar: বিহারের রোহতাস জেলায় একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে একটি বিড়ালের নামে আবাসিক শংসাপত্রের আবেদন দাখিল করা হয়েছে। আবেদনকারীর নাম ক্যাট কুমার, বাবার নাম ক্যাটি বস এবং মায়ের নাম কাটিয়া দেবী লেখা ছিল, যেখানে আবেদনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ছবিটিও ছিল একটি বিড়ালের। তদন্তে এই আবেদনটি সম্পূর্ণ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে, যার পরে প্রশাসন একটি এফআইআর দায়ের করে সাইবার সেলকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে।
রোহতাস থেকে চমকে দেওয়া ঘটনা
বিহারের রোহতাস জেলায় প্রশাসনিক গাফিলতির একটি অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে একটি বিড়ালের নামে আবাসিক শংসাপত্রের আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এতে আবেদনকারীর নাম ক্যাট কুমার, বাবার নাম ক্যাটি বস এবং মায়ের নাম কাটিয়া দেবী লেখা ছিল। আবেদনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ছবিটিও মানুষের নয়, বরং একটি বিড়ালের ছিল। এই ঘটনা কেবল স্থানীয় প্রশাসনের কাজকর্মের ওপর প্রশ্ন তোলে না, সেই সঙ্গে অনলাইন পরিষেবা ব্যবস্থার নজরদারি ক্ষমতার ওপরও গুরুতর সন্দেহ সৃষ্টি করে।
তদন্তে জালিয়াতি প্রকাশ
এই আবেদনটি ২৯ জুলাই, ২০২৫ তারিখে বিহারের আরটিপিএস (রিয়াল-টাইম পাবলিক সার্ভিস) পোর্টালে নথিভুক্ত হয়েছিল, যেখানে ঠিকানা হিসেবে গ্রাম আতিমিগঞ্জ, ওয়ার্ড নম্বর ০৭, পোস্ট মহাদেওয়া, থানা নাছরিগঞ্জ, জেলা রোহতাস এবং উদ্দেশ্য হিসেবে পড়াশোনা লেখা ছিল। নাছরিগঞ্জ অঞ্চলের রাজস্ব কর্মচারী কৌশল প্যাটেল তদন্তের সময় জানতে পারেন যে আবেদনে দেওয়া সমস্ত তথ্য এবং জুড়ে দেওয়া ছবিটি ভুয়া। প্রাথমিক তদন্তে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে সরকারি ব্যবস্থার ভাবমূর্তি খারাপ করতে এবং প্রযুক্তিগত প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার করার উদ্দেশ্যে এই কাজ করা হয়েছে।
প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ
জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাছরিগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ষড়যন্ত্র এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সাইবার সেলকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে, যাতে আবেদনকারীর আইপি অ্যাড্রেস ও মোবাইল নম্বর খুঁজে বের করা যায়। আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে ভবিষ্যতে এই ধরনের আবেদনগুলোর আরও ভালোভাবে যাচাই করা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনো রকম গাফিলতি হলে সরাসরি দায় বর্তানো হবে।
আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে
এই ঘটনা বিহারের আরটিপিএস পোর্টালে আসা একাধিক অদ্ভুত ঘটনার வரிতে আরেকটি উদাহরণ। এর আগে পাটনার মাসৌড়িতে ডগ বাবুর নামে আবাসিক শংসাপত্র জারি হয়েছিল, যেখানে বাবার নাম কুত্তা বাবু এবং মায়ের নাম কুত্তিয়া বাবু লেখা ছিল। পূর্ব চম্পারনে ভোজপুরী অভিনেত্রী মোনালিসার ছবি দিয়ে সোনালীকা ট্র্যাক্টর নামে আবেদন করা হয়েছিল। সম্প্রতি খাগাড়িয়ায় ভগবান শ্রীরাম, সীতা এবং কাকের নামেও আবেদন নথিভুক্ত হয়েছিল। এই ঘটনাগুলো পোর্টালের যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার ওপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
বিরোধীপক্ষের আক্রমণ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা
একের পর এক এমন ঘটনা ঘটায় বিরোধী দলগুলো সরকারের ওপর তোপ দেগেছে এবং একে প্রশাসনের ব্যর্থতা বলেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, যখন বিড়াল এবং কুকুরের নামে শংসাপত্র তৈরি হতে পারে, তখন এটা ই-গভর্নেন্স সিস্টেমের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর সরাসরি প্রশ্ন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বিষয়টি দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা মজার ছলে লিখছেন যে যদি ক্যাট কুমার আবাসিক শংসাপত্র পেতে পারে, তাহলে খুব শীঘ্রই বিড়াল মাসি রেশন কার্ডও পেয়ে যাবে। অনেকে আরটিপিএস সিস্টেমে অ্যান্টি-ভাইরাসের প্রয়োজন আছে বলেও মন্তব্য করছেন।