শিবহর জেলায় বিহার নির্বাচন ২০২৫-এ দুই ভাই ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মধু-বনে বিজেপির রানা রণধীর এবং ঢাকাতে এআইআইএমআইএম-এর রানা রণজিতের মধ্যে লড়াই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ওওয়েসি রণজিৎকে ময়দানে নামিয়েছিলেন।
Bihar Election 2025: বিহারের শিবহর জেলায় প্রাক্তন মন্ত্রী প্রয়াত সীতারাম সিং-এর দুই পুত্র এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ভিন্ন ভিন্ন ধারার রাজনীতি করছেন। বড় ছেলে ই. রানা রণধীর সিং মধু-বন বিধানসভা থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)-এর প্রার্থী এবং টানা তৃতীয়বারের মতো এই আসনে নির্বাচনী ময়দানে আছেন। অন্যদিকে, ছোট ছেলে রানা রণজিৎ সিংকে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIIMIM)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওওয়েসি ঢাকা বিধানসভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে নামিয়েছেন। এবার দুই ভাই ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যার ফলে উভয় বিধানসভা আসনে নির্বাচনী লড়াই অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
বড় ছেলে রানা রণধীর সিংয়ের শক্তিশালী অবস্থান
মধু-বন বিধানসভায় ই. রানা রণধীর সিংয়ের বিজেপিতে শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। তিনি টানা দুইবার নির্বাচনে জিতেছেন এবং রাজ্য সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ও অভিজ্ঞতা তাঁকে মধু-বন এলাকার একজন প্রধান প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এবারও তিনি বিজেপির টিকিটে ময়দানে আছেন এবং বিরোধীদের সামনে তাঁর শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
ছোট ছেলে রানা রণজিৎ সিংয়ের এআইআইএমআইএম-এ যোগদান
ছোট ছেলে রানা রণজিৎ সিং প্রথমবারের মতো এআইআইএমআইএম-এর টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি ঢাকা বিধানসভা থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং তাঁর প্রচারণার শুরুতে কপালে তিলক, মাথায় সাদা টুপি এবং গলায় লাল গামছা পরে সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে চলার কথা বলেছেন। রণজিতের এই পদক্ষেপকে এআইআইএমআইএম-এর বিহারে প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং একই সাথে এটি বিজেপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জও তৈরি করে।
লোকসভা নির্বাচনে পথ আলাদা হয়েছিল
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান যে, আগে দুই ভাই একই রাজনৈতিক মঞ্চে কাজ করতেন, কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের পথ আলাদা হয়ে যায়। রানা রণধীর সিং জেডিইউ-এর প্রার্থী লাভলী আনন্দের পক্ষে প্রচার করেছিলেন, যেখানে রানা রণজিৎ একই নির্বাচনে এআইআইএমআইএম-এর পক্ষ থেকে শিবহর সংসদীয় আসনে তাঁর ভাগ্য পরীক্ষা করেছিলেন। সে সময় রণজিৎ সফল হননি, কিন্তু এবার তিনি ঢাকা বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক পবন জয়সওয়ালের সামনে দাঁড়িয়েছেন।
বাবার রাজনীতি থেকে প্রাপ্ত উত্তরাধিকার
প্রয়াত সীতারাম সিং মধু-বনের বঞ্জারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD)-এর একজন শক্তিশালী নেতা ছিলেন। তিনি ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা মধু-বন বিধানসভার বিধায়ক পদ সামলেছেন এবং বিহার সরকারে বেশ কয়েকবার মন্ত্রী পদও অলংকৃত করেছেন। ২০০৪ সালে তিনি শিবহর লোকসভা আসন থেকে নির্বাচন জিতে সংসদ সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তাঁর প্রয়াণের পর বড় ছেলে ই. রানা রণধীর বিজেপিতে যোগ দেন এবং বিধায়ক হন। ছোট ছেলে রানা রণজিৎও রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছেন, কিন্তু এখন তিনি তাঁর ভাইয়ের থেকে ভিন্ন পথে পা বাড়িয়েছেন।
দুটি বিধানসভা আসনে নির্বাচনী যুদ্ধ
এবারের পরিস্থিতিতে মধু-বন এবং ঢাকা বিধানসভায় দুই ভাইয়ের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয় এবং দলের শক্তি নির্বাচনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। মধু-বনে বিজেপির অবস্থান শক্তিশালী থাকা সত্ত্বেও ঢাকায় এআইআইএমআইএম প্রার্থী রণজিৎ সিংয়ের প্রবেশ নির্বাচনী সমীকরণ বদলে দিতে পারে।