জমির নথিতে ভুল? বিহার সরকারের রাজস্ব মহা-অভিযান!

জমির নথিতে ভুল? বিহার সরকারের রাজস্ব মহা-অভিযান!

ভূমি নথিপত্রের ত্রুটি সংশোধনের জন্য বিহার সরকার ১৬ আগস্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে রাজস্ব মহা-অভিযান চালাবে। শিবিরগুলিতে জমা-বন্দী ত্রুটি, নামান্তর এবং ডিজিটালাইজেশনের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হবে।

Bihar: বিহার সরকার ভূমি সংক্রান্ত বিবাদ এবং নথিপত্রের ত্রুটি দূর করার জন্য রাজ্যজুড়ে একটি বিশেষ রাজস্ব মহা-অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মহা-অভিযানটি ১৬ আগস্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলবে, যার উদ্দেশ্য হল ভূমি-মালিকানা সম্পর্কিত সমস্যাগুলির সমাধান করে জনগণকে স্বস্তি দেওয়া।

কেন এই অভিযান জরুরি

বিহারের ভূমি বিবাদ একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায়শই লোকেদের নামান্তর, জমা-বন্দীর ত্রুটি, ভাগ-বাঁটোয়ারা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মাসের পর মাস ধরে অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হয়। এই সমস্যাগুলি বিবেচনা করে বিহার সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে জমির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত নথি ডিজিটাল এবং নির্ভুল হতে পারে।

জমা-বন্দী ত্রুটি সংশোধন এবং নামান্তর হবে প্রাথমিক কাজ

এই মহা-অভিযানের সময় সরকারের মূল লক্ষ্য হল জমা-বন্দী ত্রুটি সংশোধন, উত্তরাধিকার সূত্রে নামান্তর, ভাগ-বাঁটোয়ারার নামান্তর এবং বাদ যাওয়া জমা-বন্দীগুলির ডিজিটালাইজেশন (Online Entry)। জেলাশাসক ডঃ নवल কিশোর চৌধুরী জানিয়েছেন যে এই সমস্ত কাজ জনগণের জন্য স্বচ্ছ, সরল এবং দ্রুত পরিষেবা প্রদানের জন্য করা হবে।

রাজস্ব শিবিরগুলিতে মিলবে সমাধান

১৬ আগস্ট থেকে জেলার প্রতিটি হালকা এলাকায় বিশেষ রাজস্ব শিবির স্থাপন করা হবে। প্রতিটি শিবিরে রাজস্ব কর্মচারী এবং ১০ জন সার্ভে আমিন উপস্থিত থাকবেন। এই সকলে জনগণের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করবেন এবং সংশ্লিষ্ট আবেদন সিস্টেমে আপলোড করবেন।

প্রতিটি শিবির এক সপ্তাহ পর পর পুনরায় একই স্থানে স্থাপন করা হবে যাতে মুলতুবি থাকা আবেদনগুলি পুনরায় পর্যালোচনা করা যায় এবং জনগণের সমস্যার সমাধান দ্রুত করা যায়।

তিনটি পর্যায়ে হবে বাস্তবায়ন

রাজস্ব মহা-অভিযানটি তিনটি প্রধান পর্যায়ে পরিচালিত হবে:

  • পূর্ব প্রস্তুতি পর্যায়: যেখানে আঞ্চলিক স্তরে কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি যাচাই করা হবে।
  • প্রধান বাস্তবায়ন পর্যায়: এতে শিবির আয়োজন করা হবে এবং জনগণের আবেদন গ্রহণ করা হবে।
  • অনুবর্তী কাজ: এতে মুলতুবি থাকা মামলার পর্যালোচনা, নিষ্পত্তি এবং পুনরায় শিবির আয়োজন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

জনগণ এই সুবিধাগুলো পাবেন

  • ভূমি নথিপত্রের ত্রুটি সময় মতো সংশোধন করা হবে।
  • নামান্তর এবং জমা-বন্দী সম্পর্কিত মামলাগুলির নিষ্পত্তি দ্রুত হবে।
  • স্বচ্ছ এবং ডিজিটাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুর্নীতি কমবে।
  • স্থানীয় স্তরে পরিষেবা পাওয়ার ফলে মানুষ স্বস্তি পাবে।

রাজস্ব কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ

এই অভিযানের সাফল্যের জন্য জেলা এবং আঞ্চলিক স্তরের রাজস্ব কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ৭ আগস্ট পর্যন্ত সমস্ত অঞ্চলে রাজস্ব কর্মচারী এবং সার্ভে আমিনদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর পরে, ১৬ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত রায়তদের অনলাইন জমা-বন্দী রেজিস্ট্রারের প্রিন্ট এবং তিন ধরনের ফর্ম দেওয়া হবে।

রাজস্ব বিভাগের প্রযুক্তিগত কাঠামোও প্রস্তুত

এই মহা-অভিযানে প্রযুক্তিগত দিকগুলোর দিকেও নজর রাখা হয়েছে। সমস্ত রাজস্ব কর্মীকে ল্যাপটপের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে আবেদন এবং নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল করা যায়।

অনেক জেলায় জোর প্রস্তুতি শুরু

ভাগলপুর সহ অনেক জেলায় রাজস্ব মহা-অভিযান নিয়ে প্রশাসনিক প্রস্তুতি জোরদার হয়েছে। পর্যালোচনা ভবনে জেলা-স্তরের প্রশিক্ষণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে উপ-বিকাশ কমিশনার, অতিরিক্ত সমাহর্তা, জেলা বন্দোবস্ত আধিকারিক, কানুনগো, Circle Officer-এর মতো প্রধান আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment