বিহারে রূপান্তরকামী কল্যাণ বোর্ড গঠন: ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

বিহারে রূপান্তরকামী কল্যাণ বোর্ড গঠন: ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

বিহারে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নের দিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। সমাজ কল্যাণ বিভাগ 'বিহার রাজ্য কিন্নর কল্যাণ বোর্ড'-এর বিজ্ঞপ্তি জারি করলো। বোর্ডে ৭ জন রূপান্তরকামী সদস্য থাকবেন।

Bihar: বিহার সরকার রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা এবং তাদের সামাজিক-অর্থনৈতিক বিকাশকে উৎসাহিত করার জন্য একটি বড় এবং ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্য সরকার 'বিহার রাজ্য কিন্নর কল্যাণ বোর্ড'-এর গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই সিদ্ধান্তকে সামাজিক অন্তর্ভূক্তির দিকে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

এই বোর্ডের মাধ্যমে সরকার রূপান্তরকামী সম্প্রদায়কে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে চায়, যেখানে তারা শুধু নিজেদের সমস্যাগুলোই বলতে পারবে না, বরং সেগুলোর সমাধানের প্রক্রিয়ায় অংশও নিতে পারবে।

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী হবেন বোর্ডের সভাপতি

রাজ্যের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মদন সাহনীকে এই ২৮ সদস্যের বোর্ডের সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে। বোর্ডের নেতৃত্ব দেবেন একজন উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রী, যা এর কার্যকারিতা এবং প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সমাজ কল্যাণ বিভাগের সচিব বন্দনা প্রেয়সী জানিয়েছেন যে এই বোর্ডে সাতজন সদস্য সরাসরি রূপান্তরকামী সম্প্রদায় থেকে থাকবেন। এর উদ্দেশ্য হল এটা সুনিশ্চিত করা যে সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছায় এবং তারা যেন প্রতিনিধিত্ব করার সম্পূর্ণ অধিকার পায়।

বোর্ডের প্রধান কাজ ও উদ্দেশ্য

কিন্নর কল্যাণ বোর্ডের প্রধান উদ্দেশ্য হল রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা, সেগুলো কার্যকর করা এবং সেগুলোর ওপর নজর রাখা। এই বোর্ড সরকার ও সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি সেতুর মতো কাজ করবে।

বোর্ডের মাধ্যমে এটা সুনিশ্চিত করা হবে যে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের লোকেরা যেন সম্মানজনক জীবন যাপনের সুযোগ পায়। সমাজ কল্যাণ বিভাগের লক্ষ্য হল এই সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোতে অন্তর্ভুক্ত করে সামাজিক, শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

শিক্ষা ও রোজগারের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ

রাজ্য সরকারের ফোকাস শুধু অধিকার রক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের শিক্ষা ও রোজগারেও সুযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সরকার তাদের শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেবে, যাতে তারা স্বনির্ভর হতে পারে এবং সমাজে সম্মানজনক স্থান লাভ করতে পারে।

সমাজ কল্যাণ সচিব বলেছেন যে সরকার রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের জন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে চায়, যেখানে তারা নিজেদের সুরক্ষিত এবং সমান মনে করতে পারে। এর জন্য প্রশিক্ষণ, কাউন্সেলিং ও সুযোগ-ভিত্তিক কর্মসূচি চালানো হবে।

সমাজে পরিবর্তনের শুরু

এই বোর্ড সামাজিক চিন্তাভাবনাকেও প্রভাবিত করবে। দীর্ঘ সময় ধরে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়কে অবহেলা করা হয়েছে। কিন্তু এই পদক্ষেপের ফলে তাদের প্রতি চিন্তাভাবনার পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা যায়। সরকারি স্তরে স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে শুধু এই সম্প্রদায়ের অবস্থার উন্নতি হবে না, বরং সমাজকেও এই বার্তা দেওয়া যাবে যে প্রত্যেক নাগরিকের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত, সে যে লিঙ্গ পরিচয়েরই হোক না কেন।

Leave a comment