ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে ১০৩ জন মাওবাদী অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করেছে, যাদের মধ্যে ৪৯ জনের উপর মোট ১ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা ছিল। অন্যদিকে, মাওবাদীরা গুপ্তচরের অভিযোগে এক গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
বিজাপুর: ছত্তিশগড়ের বস্তার বিভাগের বিজাপুর জেলায় বৃহস্পতিবার ১০৩ জন মাওবাদী সিনিয়র পুলিশ এবং আধা-সামরিক কর্মকর্তাদের সামনে অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করেছে। এদের মধ্যে ৪৯ জন এমন নকশালও ছিল যাদের উপর মোট ১ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। ছত্তিশগড় সরকারের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে, প্রতিটি আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীকে অবিলম্বে ৫০,০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য তাদের উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গুপ্তচরের অভিযোগে গ্রামবাসীকে হত্যা
এই গুরুত্বপূর্ণ আত্মসমর্পণের মাঝে বিজাপুর জেলায় একটি মর্মান্তিক ঘটনাও সামনে এসেছে। মাওবাদীরা মাদকম ভীমা নামে এক গ্রামবাসীকে পুলিশ সোর্স হওয়ার অভিযোগে তার বাড়ি থেকে টেনে বের করে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
পুলিশ এটিকে ভীতি ছড়ানোর ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছে। কর্মকর্তাদের মতে, এই ধরনের সহিংসতার উদ্দেশ্য ছিল কেবল গ্রামবাসীদের আতঙ্কিত করা নয়, বরং এটিও দেখানো যে মাওবাদীরা এখনও সক্রিয়। এই ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের মাঝে ঘটেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে দান্তেওয়াড়া রেঞ্জের ডিআইজি কমললোচন কাশ্যপ, সিআরপিএফ বিজাপুরের ডিআইজি বি এস নেগি এবং বিজাপুরের এসপি জিতেন্দ্র কুমার যাদব উপস্থিত ছিলেন।
এসপি যাদব অনুষ্ঠানে বলেন যে, আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নীতি শুধুমাত্র মাওবাদীদের নয়, তাদের পরিবারকেও মূল স্রোতে ফিরে আসার সুযোগ দেয়। তিনি জঙ্গলে সক্রিয় বাকি মাওবাদীদের প্রতি আবেদন জানান যে তারাও যেন অস্ত্র ত্যাগ করে সরকারের প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করে এবং একটি শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ ও গ্রেপ্তার
সিনিয়র কমান্ডারদের সংঘর্ষে নিহত হওয়া এবং শীর্ষ ক্যাডারদের আত্মসমর্পণের ফলে মাওবাদী নেতৃত্বে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। নিম্ন স্তরের সদস্যরা এখন অস্ত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে।
১লা জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে, বিজাপুর জেলায় মোট ৪১০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। একই সময়ে ৪২১ জন মাওবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৩৭ জন মাওবাদী সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান নিরাপত্তা বাহিনীর সক্রিয়তা এবং আত্মসমর্পণ নীতির কার্যকারিতা নির্দেশ করে।