দিল্লি বিধানসভায় বাদল অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়ক তারবিন্দর সিং মারওয়াহ নিজের সরকারের প্রতি স্পষ্ট ভাষায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অধিবেশন চলাকালীন তাঁর ভাষণে তিনি স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্তকে অনুরোধ করেন যে নিয়ম ২৮০-এর অধীনে মন্ত্রীদের অবশ্যই সভায় উপস্থিত থাকতে হবে।
Tarvinder Singh Marwah: দিল্লি বিধানসভার বাদল অধিবেশন এইবার রাজনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী ছিল, যখন শাসক দলেরই বিধায়ক তারবিন্দর সিং মারওয়াহ নিজের সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। বিজেপি বিধায়ক সভায় মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন যে জনস্বার্থের বিষয় উত্থাপন করলে শোনার কেউ নেই। তিনি স্পষ্ট করেন যে নিয়ম ২৮০-এর অধীনে যখন বিধায়করা জনহিতের বিষয় তোলেন, তখন মন্ত্রী ও আধিকারিকদের সভায় উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক।
তারবিন্দর সিং মারওয়াহর সভায় বক্তব্য
দিল্লি বিধানসভায় বাদল অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়ক তারবিন্দর সিং মারওয়াহ নিজের দলের সরকারের প্রতি কটাক্ষ করে বলেন, “দয়া করে নিয়ম ২৮০-এর অধীনে মন্ত্রীরা সভায় অবশ্যই উপস্থিত থাকলে ভালো হয়।” এই বিষয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিজেন্দ্র গুপ্ত জবাব দেন যে নিয়ম ২৮০-এ এমন কোনো নির্দেশ নেই।
কিন্তু এর উত্তরে মারওয়াহ বলেন, “আমি মানছি যে এমন কোনো নিয়ম নেই, কিন্তু মন্ত্রীদের এটা কর্তব্য যে তাঁরা সভায় উপস্থিত থাকবেন। যখন আমরা বিধায়করা সভায় বলি, তখন কেউ শোনার জন্য থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন যে শুধু মন্ত্রী নয়, নিয়ম ২৮০-এর সঙ্গে সম্পর্কিত আধিকারিকদেরও সভায় উপস্থিত থাকা উচিত যাতে জনস্বার্থের বিষয়গুলোতে কার্যকর আলোচনা হতে পারে।
আধিকারিকদের অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন
তারবিন্দর সিং মারওয়াহ সভায় আধিকারিকদের অনুপস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি সভার অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসা করেন যে আধিকারিকদের সভায় উপস্থিত থাকা নিয়মের অধীনে জরুরি কি না? এই বিষয়ে বিজেন্দ্র গুপ্ত বলেন যে এটা একটা সঠিক কথা এবং এই বিষয়ে নজর রাখা হবে। মারওয়াহর এই বক্তব্যে বিধানসভার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিরোধী দলের পাশাপাশি কিছু শাসক দলের বিধায়কও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে সমর্থন করেন।
অন্যদিকে, বিরোধী দল আম আদমি পার্টি (AAP) বিজেপি বিধায়ক তারবিন্দর সিং মারওয়াহর এই কঠোর বক্তব্যের সমর্থন করে দিল্লি সরকারের কার্যশৈলীর সমালোচনা করেছে। AAP বিধায়ক সঞ্জীব ঝা তাঁর ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে মারওয়াহর সভায় দেওয়া ভাষণের একটি অংশ শেয়ার করে লিখেছেন, “বিজেপির নিজের বিধায়কই সরকারের পর্দা ফাঁস করলেন।
তিনি বলেন, শাসক দলের বিধায়ক সভায় বলেছেন যে যখন নিয়ম ২৮০-এর অধীনে বিধায়করা জনহিতের বিষয় তোলেন, তখন মন্ত্রীদের সভায় উপস্থিত থাকা তাঁদের কর্তব্য। আধিকারিকদেরও সভায় থাকা উচিত। সঞ্জীব ঝা আরও লিখেছেন, “যখন শাসক দলের বিধায়ককে এটা বলতে হয় যে জনস্বার্থের বিষয় শোনার কেউ নেই, তো এটা স্পষ্ট করে যে দিল্লি সরকার জনহিতের বিষয়গুলোতে কতটা গুরুতর। সভা খালি, মন্ত্রী অনুপস্থিত, আধিকারিক গায়েব এবং মুখ্যমন্ত্রী ফুর্তিতে মত্ত — এটাই দিল্লি সরকারের শাসন।
রাজনৈতিক পরিবেশ এবং গভর্নেন্সের উপর প্রশ্নচিহ্ন
তারবিন্দর সিং মারওয়াহর বক্তব্যে দিল্লি সরকারের বিধানসভা অধিবেশনগুলোতে সক্রিয়তা এবং জবাবদিহিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। সাংসদ এবং বিধায়করা জনহিতের বিষয় সভায় তোলেন যাতে সরকার তাঁদের কথা শুনতে পারে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু মন্ত্রী ও আধিকারিক যদি সভায় উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এই বিষয়গুলোর সঠিক সমাধান সম্ভব নয়।
এই সমস্যা শুধু দিল্লির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের অনেক রাজ্যেই বিধানসভা অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রী ও আধিকারিকদের অনুপস্থিতি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের আশা এবং বিধায়কের প্রচেষ্টার মধ্যে একটা বড় ব্যবধান তৈরি হয়।