বৃষ্টির কামনায় বিজেপি নেতাকে কাদা-জলে স্নান: ভাইরাল ভিডিও

বৃষ্টির কামনায় বিজেপি নেতাকে কাদা-জলে স্নান: ভাইরাল ভিডিও

উত্তর প্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলা থেকে একটি চাঞ্চল্যকর এবং অভিনব ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। তীব্র গরম এবং বৃষ্টি না হওয়ায় অতিষ্ঠ নৌতনওয়া শহরের মহিলারা একটি ঐতিহ্যবাহী রীতির অংশ হিসেবে বিজেপি নেতা এবং প্রাক্তন পৌরসভা সভাপতি গুড্ডু খানকে ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে কাদা ও জল দিয়ে স্নান করান। মহিলাদের বক্তব্য, এই রীতি ইন্দ্রদেবকে সন্তুষ্ট করার জন্য পালন করা হয়, যাতে বৃষ্টি হয় এবং মানুষ গরম থেকে মুক্তি পায়।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মহিলারা গুড্ডু খানের হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ক্ষেতে নিয়ে যায় এবং ঐতিহ্যবাহী কজরি গান গাইতে গাইতে তাকে কাদা দিয়ে স্নান করায়। এই দৃশ্যটি কেবল লোকবিশ্বাসের প্রতীকই নয়, বরং প্রশাসনিক উদাসীনতার প্রতি একটি তীব্র ব্যঙ্গও বটে।

 প্রশাসন করছে উপেক্ষা

মহিলারা জানিয়েছেন, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সংকট চলছে। বহুবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও প্রশাসন কোনো ठोस পদক্ষেপ নেয়নি। অবশেষে, আশাভঙ্গ হলে তারা এই লোকপরম্পরার আশ্রয় নেয়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পালিত হয়ে আসছে।

স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে, যখন গ্রাম বা এলাকার প্রধান ব্যক্তিকে এইভাবে জল ও কাদা দিয়ে স্নান করানো হয়, তখন ইন্দ্রদেব সন্তুষ্ট হয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। মহিলারা জানান, এটি শুধু প্রতিবাদের প্রতীক নয়, বরং একটি আস্থারও প্রতীক, যেখানে পুরো গ্রামের মঙ্গলের কামনা করা হয়।

লোকের মঙ্গলের জন্য প্রতি বছর প্রস্তুত আছি

বিজেপি নেতা গুড্ডু খানও এই প্রথার প্রতি তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি কোনো নতুন বিষয় নয়, বরং বহু বছর ধরে চলে আসা একটি ঐতিহ্য। আগের দিনেও বৃষ্টি না হলে রাজা-মহারাজাদের এভাবেই স্নান করানো হতো, যাতে ইন্দ্রদেবকে প্রসন্ন করা যায়।

তিনি আরও বলেন, যদি এই প্রথা থেকে মানুষের মুক্তি মেলে এবং বৃষ্টি হয়, তাহলে আমি প্রতি বছর এর জন্য প্রস্তুত। এটা জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা, এবং আমি তার সম্মান করি।

ভাইরাল ভিডিও বিতর্কের বিষয়

এই পুরো ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। কেউ কেউ এটিকে গ্রামীণ বিশ্বাস ও সংস্কৃতির উদাহরণ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে প্রশাসনের প্রতি জনগণের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বর্ণনা করছেন। যাই হোক না কেন, এই ভিডিওটি কেবল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে না, সেইসাথে শাসন-প্রশাসনের জন্য একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—জনগণ আর চুপ নেই, তা সে প্রতিবাদ ঐতিহ্যবাহী হোক বা প্রতীকী।

Leave a comment