কেন্দ্রীয় সরকার সমবায় ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২৫-২৬ থেকে ২০২৮-২৯ পর্যন্ত চার বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ক্ষেত্র scheme 'জাতীয় সমবায় উন্নয়ন নিগমকে অনুদান সহায়তা' অনুমোদন করেছে।
নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর अध्यक्षता অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে বৃহস্পতিবার জাতীয় সমবায় উন্নয়ন নিগমকে (এনসিडीसी) ₹২,০০০ কোটি টাকার আর্থিক অনুদান সহায়তা দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সহায়তা ২০২৫-২৬ থেকে ২০২৮-২৯ অর্থবছর পর্যন্ত চার বছরের জন্য প্রদান করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সমবায় সংস্থাগুলির অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব, পরিকাঠামোর বিস্তার এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই আর্থিক সহায়তার উদ্দেশ্য কী?
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল এনসিডিসিকে খোলা বাজার থেকে ₹২০,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম করা, যাতে তারা সমবায় সমিতিগুলিকে স্বল্প সুদে ঋণ দিতে পারে। এই তহবিলগুলি নিম্নলিখিত কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে:
- নতুন প্রকল্প স্থাপন
- বিদ্যমান প্ল্যান্ট এবং সুবিধাগুলির সম্প্রসারণ
- সমবায় সমিতিগুলিকে দীর্ঘমেয়াদী এবং কার্যকরী মূলধন ঋণ
- মহিলা ও শ্রমিক সমবায় সমিতিগুলিকে সমর্থন
এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানান, এই সহায়তা সমবায় ক্ষেত্রগুলিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে গতি দেবে।
কারা লাভবান হবেন?
সরকার জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত ১৩,২৮৮টি সমবায় সমিতির প্রায় ২.৯ কোটি সদস্য সরাসরি উপকৃত হবেন। এদের মধ্যে রয়েছে:
- ডেইরি এবং দুগ্ধ উৎপাদন
- পশুপালন
- মৎস্য চাষ
- চিনি শিল্প
- textile ক্ষেত্র
- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
- সংগ্রহস্থল ও কোল্ড স্টোরেজ
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষভাবে মহিলা পরিচালিত এবং শ্রমিক ভিত্তিক সমবায় সমিতিগুলিকে শক্তিশালী করা হবে, যা সামাজিক ন্যায়বিচার এবং নারী ক্ষমতায়নকে উৎসাহিত করবে।
এনসিডিসি-র ভূমিকা ও কর্মক্ষমতা
জাতীয় সমবায় উন্নয়ন নিগম ভারতের অন্যতম প্রধান সমবায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এটি ৮.২৫ লক্ষেরও বেশি সমবায় সমিতিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, যার প্রায় ২৯ কোটি সদস্য রয়েছে।
- এদের মধ্যে ৯৪% সদস্য কৃষক
- বর্তমানে ঋণ আদায়ের হার ৯৯.৮%
- এনপিএ শূন্য হওয়ার কারণে এটিকে একটি নির্ভরযোগ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হয়
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, এনসিডিসি-র শক্তিশালী আর্থিক মডেলকে আরও সক্ষম করার জন্য সরকার এটিকে চার বছরের জন্য ₹২,০০০ কোটি টাকার মূলধন অনুদান সহায়তা দিয়েছে। ক্যাবিনেট বৈঠকে সমবায় ক্ষেত্র ছাড়াও রেলওয়ে পরিকাঠামোর সম্প্রসারণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
- ইটারসি-নাগপুরের মধ্যে চতুর্থ রেললাইন তৈরির সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে
- এই লাইনটি দিল্লি-চেন্নাই এবং মুম্বাই-হাওড়ার মতো উচ্চ-ঘনত্বের corridorগুলির সাথে যুক্ত হবে
- প্রধানমন্ত্রী এটিকে চারটি দিকের মিলনস্থল হিসেবে বর্ণনা করেছেন
এর পাশাপাশি, ক্যাবিনেট চারটি মাল্টিট্র্যাকিং প্রকল্প অনুমোদন করেছে, যা ভারতীয় রেলওয়ে নেটওয়ার্কে ৫৭৪ কিলোমিটার যুক্ত করবে।
মাল্টিট্র্যাকিং প্রকল্প: রাজ্যগুলি বড় সুবিধা পাবে
এই রেল প্রকল্পগুলি থেকে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের ১৩টি জেলা উপকৃত হবে।
- মোট খরচ: ₹১১,১৬৯ কোটি
- এর ফলে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন উভয়ই দ্রুত হবে
- রেলওয়ে পরিকাঠামোর সম্প্রসারণের ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে
এনসিডিসি-কে আর্থিক সহায়তা এবং রেলওয়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের উপর ক্যাবিনেটের এই সিদ্ধান্ত ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’-এর দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি কেবল সমবায় খাতকে শক্তিশালী করবে না, সেই সাথে গ্রামীণ ভারত, নারী উদ্যোক্তা এবং অবকাঠামো উন্নয়নেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।