চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দং জুন তাইওয়ান দখলের হুমকি দিয়েছেন। চীন ক্রমাগত তাইওয়ানের আশেপাশে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। তাইওয়ান সরকার চীনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে তাদের ভবিষ্যত তাদের জনগণই নির্ধারণ করবে।
বিশ্ব আপডেট: চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দং জুন সম্প্রতি আবারও তাইওয়ান দখলের হুমকি দিয়েছেন। বেইজিংয়ে আয়োজিত শিয়াংশান ফোরামে তিনি বলেছেন যে তাইওয়ানের উপর চীনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। দং-এর এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চীন ক্রমাগত তাইওয়ানের আশেপাশে সামরিক মহড়া চালিয়ে আসছে এবং দ্বীপটির উপর তাদের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছে।
তাইওয়ানের ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি
তাইওয়ান একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে প্রায় ২.৩ কোটি মানুষ বসবাস করে। ১৯৪৯ সাল থেকে এটি চীন থেকে আলাদাভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। বেইজিং এটিকে চীনের অংশ বলে মনে করে এবং দাবি করে যে তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ কেবল চীনের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি লাই চিং-তে এবং তাঁর দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি চীনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে যে তাইওয়ানের জনগণই তাদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেবে।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্য
নিরাপত্তা ফোরামে দং জুন বলেছেন যে তাইওয়ানের স্বাধীনতার যেকোনো প্রচেষ্টাকে চীন কখনোই সফল হতে দেবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে চীন যেকোনো বাহ্যিক সামরিক হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। দং আমেরিকার নাম না নিয়ে বিশ্বশক্তিগুলির সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে বাহ্যিক হস্তক্ষেপ এবং অন্যদের পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত সৃষ্টি করে।
বেইজিংয়ের সামরিক শক্তির প্রদর্শন
এই ফোরাম এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যখন বেইজিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকীতে একটি বড় সামরিক কুচকাওয়াজ করেছিল। এই কুচকাওয়াজে চীনা সেনাবাহিনী তাদের উন্নত অস্ত্র যেমন হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জামের প্রদর্শন করে। এটি স্পষ্ট বার্তা ছিল যে চীন তাইওয়ান এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনে প্রস্তুত।
তাইওয়ানের উপর চাপ ও উত্তেজনা
চীন প্রতিদিন তাইওয়ানের কাছে যুদ্ধজাহাজ এবং বিমান পাঠিয়ে দ্বীপটির উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপ তাইওয়ানের জনগণ ও সরকার উভয়ের জন্যই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাইওয়ান সরকার ক্রমাগত চীনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে যে তাইওয়ান স্বাধীনভাবে তার ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেবে।
তাইওয়ানের নেতৃত্বের অবস্থান
তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর দল বলেছেন যে চীনের চাপ তাদের গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারবে না। তাইওয়ান সরকার নিরাপত্তা বাড়াতে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করতে কাজ করছে। তারা বিশ্বাস করে যে তাইওয়ানের জনগণের ভবিষ্যত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনো বাহ্যিক শক্তি এটি নির্ধারণ করতে পারে না।