ঝুনঝুনু পুলিশ ৫,০০০ টাকার পুরস্কার ঘোষিত কুখ্যাত অপরাধী রোহিত ওরফে মনুকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত গ্রেফতারি এড়াতে মহিলার পোশাক পরে এবং হালকা মেকআপ করছিল। পুলিশ প্রযুক্তিগত নজরদারি ও ঘেরাও করে তাকে ধরে ফেলে এবং পুরো এলাকায় তার শোভাযাত্রা করে।
ঝুনঝুনু: সুরজগড় থানা এলাকার তোলা সেহি গ্রামের বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সী রোহিত, যার মাথার উপর ৫,০০০ টাকার পুরস্কার ছিল, সে সরপঞ্চ সন্দীপ এবং তার সহযোগী দেবী সিংয়ের উপর দিনের আলোতে হামলার ঘটনায় পলাতক ছিল। পুলিশ প্রযুক্তিগত নজরদারি এবং গুপ্তচরের সহায়তায় নদীর ধারে মহিলার ছদ্মবেশে তাকে ধরে ফেলে। গ্রেফতারের পর অভিযুক্তকে সেই বাজারে শোভাযাত্রা করানো হয়, যেখানে সে হামলা করেছিল।
মহিলার বেশে লুকিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা
এসপি ব্রিজেশ জ্যোতি উপাধ্যায় জানান, অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল এবং গ্রেফতারি এড়াতে মহিলার ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। যখন পুলিশ এলাকায় ঘেরাও করে, তখন নদীর ধারে একটি মেয়েকে বসে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ কাছে গিয়ে যখন ঘোমটা সরায়, তখন দেখা যায় আসলে সেটি সেই পলাতক দুষ্কৃতী। পুলিশের মতে, রোহিত মনু শীর্ষ দশ অপরাধীর তালিকায় ছিল এবং তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ গ্রেফতারের পর অভিযুক্তকে সেই বাজারে শোভাযাত্রা করায়, যেখানে সে অপরাধ করেছিল। সালোয়ার-কামিজ এবং ওড়না পরিহিত অভিযুক্তকে দেখে স্থানীয় মানুষজন হতবাক হয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত স্বীকার করেছে যে সে শুধুমাত্র নিজের পরিচয় লুকানোর জন্য মহিলার ছদ্মবেশ নিয়েছিল।
ঘটনার আসল সত্য
১৫ জুলাই, ২০২৫ তারিখে সুরজগড়ের রঘুনাথপুরা টোলের কাছে সরপঞ্চ সন্দীপ কুমার এবং তার সঙ্গীর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। অভিযুক্তরা পিকআপ, কেম্পার এবং বোলেরো গাড়ি দিয়ে বারবার ধাক্কা মেরে সরপঞ্চের গাড়িকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং লাঠি-সরিয়া দিয়ে হামলা করে। পুলিশের ধারণা, পুরনো বিবাদের মীমাংসা করার চাপের কারণে এই হামলা করা হয়েছিল।
এই হামলায় জড়িত অন্যান্য আট অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল, কিন্তু রোহিত ওরফে মনু পলাতক ছিল। মহিলার ছদ্মবেশে পালানোর পরিকল্পনা অনেক দিন ধরে পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিল।
প্রযুক্তিগত এবং স্থানীয় সহায়তায় গ্রেফতার
এসপি ব্রিজেশ জ্যোতি উপাধ্যায় জানান, থানা আধিকারিক ধর্মেন্দ্র কুমার মীনা এবং এজিটিএফ চিড়াওয়ার দল ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রযুক্তিগত নজরদারির মাধ্যমে অভিযুক্তের সন্ধান পায়। গুপ্তচরদের কাছ থেকে খবর পেয়ে এবং এলাকায় ক্রমাগত নজরদারি চালিয়ে রোহিতকে তোলা সেহির জোহার এলাকা থেকে ধরা হয়।
পুলিশের বক্তব্য, এই গ্রেফতারি প্রমাণ করে যে অপরাধী যতই চালাকি করুক না কেন, আইনের হাত সব সময় শক্তিশালী থাকে। মহিলার ছদ্মবেশে ঘোরাফেরা করা দুর্ধর্ষ অপরাধীও আইনের জাল থেকে বাঁচতে পারেনি।
অভিযুক্তের অপরাধের তালিকা
এসপি জানান, রোহিত ওরফে মনুর অপরাধের ইতিহাস দীর্ঘ। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই মারামারি, প্রাণঘাতী হামলা এবং হুমকি দেওয়ার মতো অপরাধে ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখন অভিযুক্তকে তার সহযোগী এবং নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে যাতে বাকি দলের সদস্যদেরও ধরা যায়।