ঠাকুরজি বিরাজমান মন্দির আখ্যা দিয়ে ১১ই আগস্টের গোলযোগের তদন্ত রিপোর্ট সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রয়াগরাজের কমিশনার বিজয় বিশ্বাস পান্ত এবং আইজি অজয় কুমার মিশ্র ছ’দিন ধরে সেখানে থেকে ৭৫ পাতার এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন।
Fatehpur Tomb Dispute: ফতেপুরে ১১ই আগস্টের বিতর্কিত ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন একটি মাজারকে "ঠাকুরজি বিরাজমান মন্দির" বলা হয় এবং জনতা সেখানে ঢুকে পূজা-অর্চনা করে, সেই সময় মাজার ও সমাধিগুলির ক্ষতি করা হয়। এই ঘটনা পুরো জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং সরকারের কাছে পাঠানো ৭৫ পাতার তদন্ত রিপোর্টে পুলিশ ও প্রশাসনের গাফিলতি প্রকাশ পেয়েছে।
রিপোর্টটি তৈরি করেছেন কমিশনার প্রয়াগরাজ মন্ডল বিজয় বিশ্বাস পান্ত এবং আইজি অজয় কুমার মিশ্র। জেলায় ছ’দিন ধরে ক্যাম্প করে পরিদর্শন, পুরনো নথি, সেল ডিড এবং আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দুই অফিসারই তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে পুলিশ-প্রশাসন এই বিবাদ আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতির প্রকাশ
তদন্ত রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, জনতা মাজারের ভেতরে প্রবেশ করে, কিন্তু সেই সময় কোনো বড় অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র লোকেশন জানতে চাওয়ার পরেই কর্মকর্তারা সেখানে পৌঁছন। রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যারিকেড লাগানো হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু জনতা যখন কর্পুরী ঠাকুর চৌরাস্তায় জমা হয়েছিল, তখন কোনো প্রতিরোধ করা হয়নি। যখন ব্যারিকেড ভেঙে জনতা মাজারের ভেতরে প্রবেশ করে, তখনও পুলিশ কঠোরতা দেখায়নি।
রিপোর্টে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে মঠ-মন্দির সংরক্ষণ সংঘর্ষ সমিতি, ভিএইচপি এবং বিজেপির শীর্ষ কর্মকর্তারা ১১ই আগস্ট জনতাকে জড়ো করার সাথে জড়িত ছিলেন। জনতার এই পদক্ষেপে মাজারের ক্ষতি হয় এবং এর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
রিপোর্টে দেওয়া বিস্তারিত তথ্য
কমিশনার এবং আইজি রিপোর্টে ৭5৩ নম্বর প্লটে অবস্থিত মাজারের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। এছাড়াও, আশেপাশের আরও আটটি প্লটের ইতিহাসও রিপোর্টে সংকলিত করা হয়েছে। রিপোর্টে মাজারের মালিকানা, জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণার অবস্থা এবং উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডে নথিভুক্ত হওয়ার তথ্যও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত রিপোর্টে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে মাজারের মালিকানা নিয়ে দায়ের করা কোনো দেওয়ানি মামলা অথবা হাইকোর্টের মামলায় সরকারকে পক্ষ করা হয়নি। এছাড়াও, সরকার কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কখনও আপিল করেনি। এতে স্পষ্ট হয় যে প্রশাসনিক স্তরেও এই বিবাদ নিয়ে আগে থেকে গাফিলতি ছিল।
অফিসার ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সম্ভাবনা
রিপোর্ট সরকারের কাছে পাঠানোর পরে অফিসার ও কর্মচারীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে এই ঘটনায় অনেক পুলিশ অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। যদিও, সরকারি স্তর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো প্রকার পদক্ষেপের বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি। ডিএম রবীন্দ্র সিং বলেছেন যে তিনি রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত নন, অন্যদিকে এসপি অনুপ সিংয়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।