দিল্লিকে আবর্জনা থেকে মুক্তি: মুখ্যমন্ত্রীর পরিচ্ছন্নতা অভিযান

দিল্লিকে আবর্জনা থেকে মুক্তি: মুখ্যমন্ত্রীর পরিচ্ছন্নতা অভিযান

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা 'দিল্লিকে আবর্জনা থেকে মুক্তি' নামে এক মাসব্যাপী পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সূচনা করলেন। সচিবালয়ের অবস্থা দেখে নতুন ভবন নির্মাণের কথাও বললেন।

দিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা শুক্রবার দিল্লি সরকারের বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান 'দিল্লিকে আবর্জনা থেকে মুক্তি'র সূচনা করলেন। এই এক মাসব্যাপী অভিযানের উদ্দেশ্য হল রাজধানী শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সরকারি দপ্তরগুলোর অবস্থার উন্নতি ঘটানো। এই অভিযানের সূচনা মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঝাঁটা দিয়ে করেন। তিনি মহিলা ও শিশু বিকাশ বিভাগের কাশ্মীরি গেটের অফিসে যান এবং সেখানকার অব্যবস্থা দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেন।

অফিসের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ

মুখ্যমন্ত্রী প্রথমবার এই বিভাগীয় অফিস পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতিকে অত্যন্ত খারাপ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, "এটা দেখে দুঃখ হয় যে আমাদের আধিকারিকরা এই অবস্থায় কাজ করছেন। ছাদ থেকে জল পড়ছে, পাখাগুলো পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছে এবং পুরো buildingটি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।" তিনি জানান যে এই building-এ ২০২১ সালে আগুন লেগেছিল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো মেরামত করা হয়নি।

মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঝাঁটা লাগালেন, ই-আবর্জনা সরালেন

মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা শুধুমাত্র পরিদর্শনই করেননি, তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশও নিয়েছেন। তিনি ঝাঁটা লাগিয়েছেন, পুরনো পোস্টার সরিয়েছেন, অপ্রয়োজনীয় ফাইল ফেলেছেন এবং ই-আবর্জনাও পরিষ্কার করেছেন। তিনি অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন যে তাঁরাও যেন এই অভিযানে বেশি করে অংশ নেন এবং অফিসগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সহযোগিতা করেন।

নতুন সচিবালয়ের ঘোষণা

অফিসের অবস্থা দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে আজ থেকেই আমরা একটি নতুন সচিবালয় নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করব। তিনি জানান যে এমন একটি জায়গা চিহ্নিত করা হবে যেখানে সমস্ত বিভাগ একটি ভবনেই অবস্থিত হবে। এতে কাজকর্মের স্বচ্ছতা এবং গতি আসবে। তিনি বলেন যে একটি শক্তিশালী এবং আধুনিক সচিবালয়ের দিল্লির প্রয়োজন।

পূর্ববর্তী সরকারের প্রতি কটাক্ষ

মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা এই উপলক্ষে পূর্ববর্তী আম আদমি পার্টি (AAP) সরকারের প্রতিও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন যে আগের সরকার শীশ মহলের মতো অফিসগুলোর ওপর কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে, কিন্তু সাধারণ কর্মচারী ও আধিকারিকদের কর্মস্থলের অবস্থার প্রতি কোনো নজর দেয়নি। "তাদের কাছে প্রচার জরুরি ছিল, ব্যবস্থা নয়," তিনি বলেন।

ই-আবর্জনা এবং বাতিল জিনিসপত্র নিষ্পত্তি করার নিয়মে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে সরকারি দপ্তরগুলোতে জমা হওয়া ই-আবর্জনা এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র শুধু জায়গা দখল করে না, বরং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজেও বাধা সৃষ্টি করে। তিনি টেন্ডার (Tender) প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত জটিলতা দূর করতে এবং নতুন নিয়ম তৈরি করার কথা বলেন যাতে আবর্জনা নিষ্পত্তি করতে সুবিধা হয়।

সমস্ত বিভাগে চলবে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

মুখ্যমন্ত্রী জানান যে এই অভিযান শুধু একটি বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আগামী দিনে সমস্ত সরকারি বিভাগকে এর অধীনে নিজেদের অফিস পরিষ্কার করতে হবে। এর উদ্দেশ্য শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং সরকারি দপ্তরগুলোকে একটি নতুন রূপে তৈরি করা যা কার্যকারিতা এবং ইতিবাচক পরিবেশকে বাড়িয়ে তুলবে।

গণभागीदारीতে যুক্ত হবে অভিযান

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে এই অভিযান কেবল সরকারি স্তরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সাধারণ জনগণকেও এতে শামিল করা হবে। দিল্লির সকল নাগরিককে এই দায়িত্ব নিতে হবে যে তারা তাদের আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখবে। তিনি বলেন, "একটি পরিচ্ছন্ন দিল্লি আমাদের সকলের দায়িত্ব।"

Leave a comment