দিল্লিতে প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র সচিবালয় ও গোশালা তৈরির পরিকল্পনা শুরু। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা ভূমি নির্বাচন এবং কার্যক্রম দ্রুত করার জন্য ডিএম-দের নির্দেশ দিয়েছেন। এই প্রকল্প নাগরিক এবং পশু উভয়ের জন্যই উপকারী হবে।
দিল্লি: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা মঙ্গলবার ডিজিটাল মাধ্যমে সমস্ত ১১টি জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে জেলাস্তরে একটি ক্ষুদ্র সচিবালয়ের (Mini Secretariat) প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সমস্ত জেলায় গোশালা (Cow Shelters) স্থাপন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, বৈঠকে উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা এবং দিল্লি সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে গোশালা স্থাপন একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল।
প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র সচিবালয়ের প্রয়োজন কেন
বৈঠকে রেখা গুপ্তা বলেন যে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান দ্রুত এবং সহজ উপায়ে হওয়া উচিত। বর্তমানে লোকেদের তাদের কাজের জন্য সারা শহরে বিভিন্ন সরকারি অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে প্রতিটি জেলায় একটি করে ক্ষুদ্র সচিবালয় থাকলে নাগরিকরা সমস্ত জরুরি পরিষেবা এক জায়গায় পাবেন, যা তাঁদের সময় ও পরিশ্রম বাঁচাবে।
গুপ্তা আরও বলেন যে ক্ষুদ্র সচিবালয়ের উদ্দেশ্য হল প্রশাসনিক কাজকর্মকে জেলা স্তরে সহজলভ্য করা, যাতে লোকেদের ছোটোখাটো কাজের জন্য প্রধান সচিবালয় বা অন্যান্য দূরে অবস্থিত সরকারি দফতরগুলিতে যেতে না হয়।
গোশালা স্থাপনের উপর জোর
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন যে তাঁরা যেন তাঁদের নিজ নিজ জেলায় গোশালা স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জমি (Suitable Land) চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন যে গোশালাগুলি কেবল অসহায় গরুদের আশ্রয় দেবে তাই নয়, স্থানীয় লোকেদের জন্য কর্মসংস্থান এবং দুগ্ধজাত পণ্যের ক্ষেত্রেও সুযোগ তৈরি করবে।
গুপ্তা জানান যে এই উদ্যোগ পশু কল্যাণ (Animal Welfare) এর পাশাপাশি পরিবেশ এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে। এছাড়াও, গোশালাগুলির মাধ্যমে আশেপাশের অঞ্চলে পরিচ্ছন্নতা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।
জেলাশাসকদের প্রস্তুতি
বৈঠকের পর জেলাশাসকরা জানান যে ক্ষুদ্র সচিবালয় এবং গোশালা স্থাপন সংক্রান্ত নির্দেশগুলির উপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়ে গেছে। ভূমি নির্বাচন এবং অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। জেলাশাসকরা আশ্বাস দিয়েছেন যে তাঁরা এই প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেবেন এবং শীঘ্রই রিপোর্ট পেশ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত ডিএম-কে সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া গ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন।
নাগরিকরা সরাসরি উপকৃত হবেন
ক্ষুদ্র সচিবালয় তৈরি হওয়ার ফলে নাগরিকরা তাদের জেলাতেই সরকারি পরিষেবাগুলি উপলব্ধ করতে পারবেন। তা সে জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র হোক, রাজস্ব সংক্রান্ত কাজ হোক, জমির রেকর্ড হোক অথবা সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পের সুবিধা হোক, সমস্ত কিছুই এক জায়গায় পাওয়া যাবে। গোশালা স্থাপনের ফলে কেবল পশুদের সুরক্ষাই হবে না, দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের উপলব্ধতাও বাড়বে। এছাড়াও, এই পদক্ষেপ স্থানীয় কৃষক এবং দুগ্ধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকেদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক প্রমাণিত হবে।