দিল্লীর পুরাতন দিল্লী রেলওয়ে স্টেশনের নাম পরিবর্তনের দাবি আবারও জোরালো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এই বিষয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন, স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে 'মহারাজা অগ্রসেন রেলওয়ে স্টেশন' রাখা হোক।
পুরাতন দিল্লী রেলওয়ে স্টেশন: দিল্লীর সবচেয়ে পুরনো এবং ঐতিহাসিক রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম পুরাতন দিল্লী রেলওয়ে স্টেশনের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এই বিষয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন, যাতে এই স্টেশনের নাম মহারাজ অগ্রসেন রেলওয়ে স্টেশন রাখা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা তাঁর চিঠিতে লিখেছেন যে মহারাজ অগ্রসেন কেবল সমাজসেবা এবং পরোপকারের প্রতীক ছিলেন না, বরং ন্যায়পরায়ণ এবং জনকল্যাণকামী শাসক হিসেবেও তাঁর ভাবমূর্তি ঐতিহাসিকভাবে খুবই উঁচু ছিল। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এবং নতুন প্রজন্মকে তাঁর অনুপ্রেরণা থেকে যুক্ত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বিজেপির দুই সিনিয়র নেতা এই চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রী ১৯ জুন এই চিঠি রেলমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন। চিঠিটি বর্তমানে সর্বজনীন হয়েছে, যা রাজধানী রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
পুরাতন দিল্লী স্টেশনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব
উল্লেখযোগ্য যে পুরাতন দিল্লী রেলওয়ে স্টেশন (আগে যা দিল্লী জংশন নামে পরিচিত ছিল) উনিশ শতকে নির্মিত হয়েছিল এবং ব্রিটিশ আমল থেকে এর একটি বিশাল ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এই স্টেশনটি রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ত এবং পুরনো রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে একটি, যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী আসে-যায়। এখান থেকে শুধু দিল্লী এবং উত্তর ভারত নয়, সারা দেশের বিভিন্ন অংশের জন্য ট্রেন চলাচল করে। এমতাবস্থায়, এর নাম পরিবর্তনের বিষয়টি মানুষের অনুভূতির সঙ্গেও জড়িত হয়েছে।
মহারাজা অগ্রসেন: সমাজসেবার প্রতীক
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা চিঠিতে লিখেছেন যে মহারাজ অগ্রসেন প্রাচীন ভারতে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি ব্যবসা, দান এবং ন্যায়পরায়ণ শাসনের মাধ্যমে সমাজে সমৃদ্ধি ও শান্তি আনার কাজ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা, রাজধানীর এত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনের নাম তাঁর নামে রাখলে সমাজে তাঁর অবদানের কথা আরও ভালোভাবে স্মরণ করা হবে। এছাড়াও, যুবকদের মধ্যে তাঁর আদর্শ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে।
যদিও রেল মন্ত্রকের তরফে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সূত্র মারফত জানা গেছে, নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় সময় লাগে, কারণ এর জন্য রেলওয়ে বোর্ডের অনুমোদন, ভাষা কমিটির পরামর্শ এবং স্থানীয় জনগণের মতামতের মতো অনেকগুলো ধাপ পেরোতে হয়। এছাড়াও, স্টেশনের নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রশাসনিক এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলিও একটি বিশাল প্রক্রিয়ার অংশ, যেখানে টিকিট ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সাইনবোর্ড এবং ডিজিটাল ম্যাপ পর্যন্ত সবকিছু আপডেট করতে হয়।