বিহার নির্বাচন ২০২৫-এর আগে ভোটার তালিকা যাচাইকরণ নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন একটি স্পষ্টীকরণ দিয়েছে। কমিশনের মতে, এটি ৭৫ বছর ধরে চলে আসা একটি প্রক্রিয়া এবং স্বচ্ছতার জন্য জরুরি।
বিহার নির্বাচন ২০২৫: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর আগে রাজ্যে ভোটার তালিকা যাচাইকরণ নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কমিশনের বক্তব্য, এই প্রক্রিয়া নতুন নয়, বরং এটি ৭৫ বছর ধরে চলে আসা একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থার অংশ। বিহারে সবশেষ ব্যাপক যাচাইকরণ হয়েছিল ২০০৩ সালে। এবার যাচাইকরণ নিয়ে যেখানে কিছু দল বিরোধিতা করছে, সেখানে অনেক জনপ্রতিনিধি এর সমর্থন করছেন।
কেন ভোটার তালিকা যাচাইকরণ করা হচ্ছে?
নির্বাচন কমিশনের মতে, ভোটার তালিকা যাচাইকরণ এই কারণে জরুরি যে শুধুমাত্র যোগ্য নাগরিকদেরই ভোটার হিসাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, যা নিশ্চিত করে যে কোনো অযোগ্য ব্যক্তি ভোটাধিকারের অপব্যবহার করতে না পারে। এছাড়াও, বিহারে ২২ বছর ধরে ব্যাপক পুনরীক্ষণ হয়নি, যে কারণে এটি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল।
২০০৩ সালের পর প্রথমবার গভীর পুনরীক্ষণ
বিহার রাজ্যে সবশেষ গভীর ভোটার তালিকা যাচাইকরণ হয়েছিল ২০০৩ সালে। যেখানে সারা দেশে ১৯৫২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোট নয় বার গভীর যাচাইকরণ হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি ছয় বছরে একবার। বিহারে ২২ বছর ধরে এমন কোনো ব্যাপক অভিযান চালানো হয়নি। এমতাবস্থায় এই যাচাইকরণ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাচাইকরণের প্রধান কারণগুলো কী?
স্থানান্তর এবং ডুপ্লিকেট EPIC: অনেক নাগরিক এক স্থান থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পরেও তাদের পুরনো ভোটার আইডি কার্ড (EPIC) বজায় রেখেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে হোক বা অনিচ্ছাকৃতভাবে, এটি আইনত অপরাধ। এমন ঘটনা শনাক্ত করা জরুরি।
পুরনো ছবির সমস্যা: অনেক EPIC কার্ডে ভোটারদের ছবি এত পুরনো হয়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে নতুন ছবি আপলোড করা হচ্ছে, যাতে শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া সহজ হয়।
অযোগ্য নাগরিকদের প্রবেশ: ২০০৩ সালের পর যাচাইকরণ না হওয়ার কারণে, অনেক অযোগ্য ব্যক্তি EPIC সংগ্রহ করেছেন। তাদের যোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ বৈধ কাগজপত্র নেই। এই যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন লোকেদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে।
রাজনৈতিক সমর্থনের দৃষ্টান্ত
হাথুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD) বিধায়ক রাজেশ কুমার সিং কুশওয়াহা প্রকাশ্যে নির্বাচন কমিশনের শুরু করা যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার সমর্থন করেছেন। তিনি একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করে জনগণকে এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়া ভোটার তালিকাকে স্বচ্ছ করার দিকে একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
প্রবাসী ইস্যুকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে
নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কিছু নির্বাচনী এলাকায় প্রবাসী ভোটারদের সংখ্যা জয়ের ব্যবধানের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে। এর ফলে গণতন্ত্রের অখণ্ডতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশে ৩১ কোটি প্রবাসী ছিলেন এবং ২০২১ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে ৪৫ কোটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঠিক পরিচয় এবং EPIC-এর বৈধতা নিশ্চিত করা জরুরি।