রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরের মধ্যে বৈঠকের জল্পনার মধ্যে, কংগ্রেস মুম্বাই পুরসভা নির্বাচন একাই লড়ার কৌশল তৈরি করেছে। ৭ জুলাই এই বিষয়ে মুম্বাইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতি: দিল্লিতে কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং মহারাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত রমেশ চেন্নিথালা সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল আসন্ন মুম্বাই পুরসভা নির্বাচনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা। সূত্রানুসারে, কংগ্রেস এই নির্বাচনে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
৭ জুলাই মুম্বাইয়ে চূড়ান্ত বৈঠক
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ৭ জুলাই মুম্বাইয়ে আরও একটি বৈঠক হবে, যেখানে স্পষ্ট করা হবে যে কংগ্রেস মুম্বাই পুরসভা নির্বাচন মহাবিকাশ আঘাড়ি-র সঙ্গে জোট করে লড়বে, নাকি একাই। দল এই মুহূর্তে বিভিন্ন সমীকরণ বিবেচনা করে তাদের ভবিষ্যৎ কৌশল তৈরি করছে।
আগের বার শিবসেনার বিরুদ্ধে লড়েছিল কংগ্রেস
কংগ্রেস নেতাদের ধারণা, আগের নির্বাচনে দল শিবসেনার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল। এখন যদি আবার মহাবিকাশ আঘাড়ি জোট হয়, তাহলে কংগ্রেসের আসন সমন্বয় করা কঠিন হবে। এই কারণেই দল তাদের ভিত্তি এবং কৌশলগত সুবিধার কথা বিবেচনা করে একাই নির্বাচন লড়ার কথা ভাবছে।
পুরসভায় কংগ্রেসের শক্তিশালী অবস্থান
বৈঠকে এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে যে মুম্বাই পুরসভায় কংগ্রেসের ভালো ভিত রয়েছে। বিশেষ করে প্রবাসী সম্প্রদায়ে দলের ভালো প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়। এই কারণে, দল একাই নির্বাচন লড়ার বিকল্পটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।
রাজ-উদ্ধবের সম্ভাব্য কাছাকাছি আসা
এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আরও একটি বড় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে এবং শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান উদ্ধব ঠাকরের মধ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে দেখা যাচ্ছে। দুই নেতার প্রতিনিধিরা ৫ জুলাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হতে চলেছেন, যেখানে সম্ভাব্য 'বিজয়ী র্যালি' নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকটি তাই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরের আলাদা হওয়ার পর এই প্রথমবার উভয় পক্ষের নেতারা একসঙ্গে কোনো কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন।
এমএনএস-এর সঙ্গে জোটের বিষয়ে কংগ্রেস কঠোর
কংগ্রেস স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে যদি শিবসেনা এবং এমএনএস জোট করে, তাহলে তা কংগ্রেসের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না। দলের ধারণা, এমএনএস-এর আদর্শ এবং রাজনৈতিক শৈলী কংগ্রেসের মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়াও, কংগ্রেস মুম্বাইয়ে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করার পক্ষপাতী।
কংগ্রেসের শক্তিশালী জন সমর্থন
কংগ্রেস নেতারা আরও বলছেন যে মুম্বাইয়ের মতো শহরে দলের জন সমর্থন এখনও শক্তিশালী। বিশেষ করে উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় এবং অন্যান্য প্রবাসী সম্প্রদায়ে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রয়েছে। দলের অনেক স্থানীয় নেতার মতে, যদি কংগ্রেস একাই নির্বাচন লড়ে, তাহলে তারা ভালো ফল করতে পারবে এবং তাদের বিষয়গুলি স্পষ্টভাবে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে।
শিবসেনা এবং এমএনএস-এর চ্যালেঞ্জ
অন্যদিকে, যদি শিবসেনা (ইউবিটি) এবং এমএনএস একই মঞ্চে আসে, তাহলে এটি কংগ্রেসের জন্য কৌশলগতভাবে কঠিন হতে পারে। দুই ঠাকরে নেতার সম্ভাব্য ঘনিষ্ঠতা কেবল মারাঠি ভোট ব্যাংককে একত্রিত করতে পারে না, বরং মুম্বাইয়ের রাজনৈতিক চিত্রও পরিবর্তন করতে পারে। যদিও, এই জোটের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এখনও পাওয়া যায়নি।
মহাবিকাশ আঘাড়ির দ্বিধা
মহাবিকাশ আঘাড়িতে কংগ্রেস, শিবসেনা (ইউবিটি) এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি-শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এখন যেহেতু রাজ ঠাকরের দল সম্ভবত এই সমীকরণে প্রবেশ করতে পারে, তাই কংগ্রেসকে তাদের কৌশল পুনরায় বিবেচনা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, কংগ্রেস ৭ জুলাইয়ের বৈঠকে কী অবস্থান নেয়, তা দেখতে আকর্ষণীয় হবে।