দিল্লিতে পথকুকুর আতঙ্ক: পুনর্বাসনের পথে সরকার, সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ

দিল্লিতে পথকুকুর আতঙ্ক: পুনর্বাসনের পথে সরকার, সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ

দিল্লিতে পথকুকুরের আক্রমণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে রোহিণীর পুঠ কালাঁ এলাকায় ৬ বছর বয়সী একটি শিশুর মৃত্যুর পর থেকে। একের পর এক এমন ঘটনা সামনে আসার পরে, সরকার এখন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার সভাপতিত্বে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়, যেখানে পথকুকুর ও গবাদি পশুর কারণে হওয়া আক্রমণ মোকাবিলা করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট এবং কার্যকর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পুনর্বাসনের প্রস্তুতি

বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল পথকুকুরদের পুনর্বাসন, অর্থাৎ তাদের অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা। বর্তমান নিয়ম, অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল (ABC) রুলস, ২০২৩ শুধুমাত্র নির্বীজকরণের অনুমতি দেয়, কিন্তু পুনর্বাসনের কোনও বিধান নেই। এমন পরিস্থিতিতে সরকার এখন এই নিয়মগুলোতে সংশোধনের কথা ভাবছে এবং সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সূত্র মারফত জানা গেছে, যদি আদালত অনুমতি দেয়, তাহলে সরকার গুরুতর ক্ষেত্রে কুকুরদের অন্য জায়গায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এই বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এখন শুধুমাত্র সচেতনতামূলক প্রচারে কাজ হবে না, বরং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে দিল্লির নাগরিকরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ প্রকাশ

পুঠ কালানের ঘটনার পরে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজধানী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে কুকুর কামড়ানোর ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আদালত বলেছে যে এই হামলাগুলো শুধু শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও মানুষকে প্রভাবিত করছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এর শিকার হচ্ছেন সহজে এবং তাদের ওপর এর গভীর প্রভাব পড়ছে।

আদালতের কঠোর মন্তব্যের পর সরকারের ওপর এখন ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নেওয়ার চাপ বেড়েছে। বুধবারের বৈঠকে শিশু ও বয়স্কদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কি?

আপাতত, দিল্লি সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে আইনি পরামর্শ এবং আদালতের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু যেভাবে সরকার ও বিচার বিভাগ উভয়ই এই বিষয়ে সক্রিয়, তাতে এটা স্পষ্ট যে এখন এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দিকে গুরুতর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আদালত পুনর্বাসনের অনুমতি দেয়, তবে এই সিদ্ধান্ত শুধু দিল্লি নয়, পুরো দেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। দেশজুড়ে পথকুকুর ও গবাদি পশুর সমস্যায় জর্জরিত শহরগুলোর জন্য এটি একটি ইতিবাচক এবং বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হতে পারে।

Leave a comment