শ্রাবণ মাসে দেওঘরগামী তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ ট্রেন পরিষেবা

শ্রাবণ মাসে দেওঘরগামী তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ ট্রেন পরিষেবা

পবিত্র শ্রাবণ মাসে বাবা বৈদ্যনাথ ধাম, দেওঘর-এ যাত্রা করা ভক্তদের জন্য একটি স্বস্তির খবর। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, তীর্থযাত্রীদের সুবিধার জন্য আগামী ৯ই জুলাই থেকে ১১ই আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন পরিষেবা চালু করা হবে।

ভারতীয় রেল: শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথেই সারা দেশ থেকে ভক্তরা ভগবান শিবের প্রধান ধাম - বাবা বৈদ্যনাথ মন্দির (দেওঘর, ঝাড়খণ্ড)-এর উদ্দেশ্যে কাওঁড় যাত্রা শুরু করেন। এই অবস্থায়, পূর্বাঞ্চলের তীর্থযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেলওয়ে একটি বড় সুবিধা এনেছে। গোরক্ষপুর-বঢ়নি রুট ধরে দেওঘর পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন পরিষেবা চালু হচ্ছে, যা শ্রাবণ মাসে হাজার হাজার ভক্তের যাত্রা সহজ ও সুবিধাজনক করবে।

৯ই জুলাই থেকে ১১ই আগস্ট পর্যন্ত চলবে বাবা ধাম শ্রাবণী মেলা স্পেশাল ট্রেন

উত্তর-পূর্ব রেলওয়ে প্রশাসন জানিয়েছে যে, ৯ই জুলাই থেকে ১১ই আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন নম্বর 05028/05027 গোরক্ষপুর হয়ে বঢ়নি থেকে দেওঘরের উদ্দেশ্যে চলবে। এই ট্রেনটি শ্রাবণী মেলাকে মাথায় রেখে চালানো হচ্ছে, যেখানে গোরক্ষপুর এবং দেওরিয়া জেলার লক্ষ লক্ষ ভক্ত প্রতি বছর দেওঘরে জল (পবিত্র জল) অর্পণ করতে যান।

এই ট্রেনের পরিচালনা পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এই অঞ্চলটি কাওঁড় যাত্রীদের প্রধান কেন্দ্র। এই ট্রেন চালু হওয়ার ফলে, তাদের আর বাস অথবা ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড়-এর সম্মুখীন হতে হবে না।

যাত্রার বিবরণ: কোথা থেকে কখন ছাড়বে ট্রেন?

১. ট্রেন নম্বর 05028 (বঢ়নি থেকে দেওঘর)

  • শুরুর তারিখ: ৯ই জুলাই, ২০২৫
  • ছাড়ার সময়: বিকেল ৫:৩০ (বঢ়নি থেকে)
  • পথ: সিদ্ধার্থনগর, আনন্দনগর, গোরক্ষপুর (রাত ৮:০০), চৌরি চৌরা, দেওড়িয়া, ভাটনি, মৈরা, সিওয়ান, ছপরা, সোনপুর, হাজীপুর, বারউনি, সুলতানগঞ্জ, ভাগলপুর
  • গন্তব্য: দেওঘর (পরের দিন দুপুর ১:০০)

২. ট্রেন নম্বর 05027 (দেওঘর থেকে বঢ়নি)

  • শুরুর তারিখ: ১০ই জুলাই, ২০২৫
  • ছাড়ার সময়: সন্ধ্যা ৬:৪৫ (দেওঘর থেকে)
  • পথ: ভাগলপুর, সুলতানগঞ্জ, বেগুসরাই, বারউনি, হাজীপুর, ছপরা, সিওয়ান, মৈরা, ভাটনি, দেওড়িয়া, গোরক্ষপুর (সকাল ৯:৩০), আনন্দনগর, সিদ্ধার্থনগর
  • গন্তব্য: বঢ়নি (দুপুর ১২:৩০)
  • কোচ ব্যবস্থা: সমস্ত ভক্তদের জন্য পর্যাপ্ত স্থান

উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক পঙ্কজ কুমার সিং জানিয়েছেন যে, এই স্পেশাল ট্রেনে মোট ১৫টি কোচ থাকবে। এর মধ্যে:

  • ৬টি কোচ শয়নযান (Sleeper Class) এর হবে
  • ৭টি কোচ সাধারণ শ্রেণী (General Class) এর হবে
  • ২টি কোচ গার্ড ও ব্রেক ভ্যানের জন্য সংরক্ষিত থাকবে

এই ব্যবস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, সকল শ্রেণীর যাত্রী, বিশেষ করে আর্থিকভাবে দুর্বল তীর্থযাত্রীরা, কোনো প্রকার অসুবিধা ছাড়াই তাদের যাত্রা সম্পন্ন করতে পারবেন।

গোরক্ষপুর থেকে মিলবে বড় সুবিধা

গোরক্ষপুর জংশন থেকে এই ট্রেন ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। গোরক্ষপুর শুধুমাত্র পূর্বাঞ্চলের প্রধান রেলওয়ে জংশন নয়, বরং এখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত বাবা ধামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রেলওয়ে কর্তৃক এই স্টেশনকে প্রধান স্টপেজ (poda) বানানো যাত্রীদের সুবিধার জন্য একটি সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে বাবা বৈদ্যনাথের জলাভিষেক যাত্রার জন্য উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলার লক্ষ লক্ষ ভক্ত দেওঘরে আসেন। এই স্পেশাল ট্রেনটি এই তীর্থযাত্রীদের জন্য শুধু সুবিধাজনকই নয়, বরং কাওঁড় যাত্রার ভাবনাকেও উৎসাহিত করে।

Leave a comment