দিল্লি আবগারি দুর্নীতি: কেজরিওয়ালের আবেদনে ইডি-কে নোটিশ

দিল্লি আবগারি দুর্নীতি: কেজরিওয়ালের আবেদনে ইডি-কে নোটিশ

দিল্লি হাইকোর্ট, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদনের শুনানি করে ইডি-কে নোটিশ জারি করেছে এবং ছয় সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে। এই মামলা আবগারি দুর্নীতিতে সমনকে চ্যালেঞ্জ করা সংক্রান্ত। আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ ১০ই সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে।

হাইকোর্ট: দিল্লি হাইকোর্ট, আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদনের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে নোটিশ জারি করে জবাব দাখিলের জন্য ছয় সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এই মামলাটি তথাকথিত দিল্লি আবগারি নীতি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, যেখানে ইডি কেজরিওয়ালকে প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA)-এর অধীনে একাধিকবার সমন পাঠিয়েছে।

পুরো ঘটনাটি কী?

এই বিতর্কটি দিল্লির তথাকথিত নতুন আবগারি নীতি নিয়ে, যার উপর দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়, ইডি কেজরিওয়ালকে একাধিকবার সমন পাঠিয়েছে, কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত কোনো সমনেই ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দেননি। তিনি সমনগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

আবেদনে কেজরিওয়াল ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪-এ বিশেষ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, যেখানে ইডি-র জারি করা সমনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়াও, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৪-এ দায়রা আদালত কর্তৃক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২৪শে অক্টোবর, ২০২৪-এর আদেশ বহাল রাখার সিদ্ধান্তকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যেখানে মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের আবেদন খারিজ করা হয়েছিল।

আদালতের কার্যক্রমের বিবরণ

বুধবারের শুনানির সময় বিচারপতি রবীন্দ্র ডুडेजा ইডি-কে নির্দেশ দেন যে তারা এই আবেদনের উপর ছয় সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দাখিল করুক। আদালত ইডি-কে স্পষ্ট করে জানায় যে তারা তাদের জবাবে প্রাথমিক আপত্তিসহ সমস্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করবে। পরবর্তী শুনানির তারিখ ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ধার্য করা হয়েছে।

ইডি-র আপত্তিগুলি কী?

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবী শুনানির সময় আবেদনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ইডি-র বক্তব্য, কেজরিওয়ালের এই আবেদন আসলে ফৌজদারি কার্যবিধি (CrPC)-র ধারা ৪৮২-এর অধীনে দায়ের করা দ্বিতীয় রিভিশন পিটিশন, যা আইনত গ্রহণ করা যায় না। ইডি আরও যুক্তি দিয়েছে যে এই ধরনের আবেদন বিচার বিভাগের প্রক্রিয়াকে অপব্যবহারের পর্যায়ে পড়ে এবং এর উদ্দেশ্য হল তদন্তকে বাধা দেওয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় আদালত জানায় যে ইডি যেন তাদের জবাবে প্রাথমিক আপত্তি সহ সমস্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে।

আদালত কী বলেছে?

যদিও আদালত এখনো ইডি-র আপত্তিগুলি গ্রহণ বা খারিজ করেনি, তবে তারা বলেছে যে সমস্ত আপত্তি জবাবী হলফনামায় অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আদালতের অবস্থান বর্তমানে নিরপেক্ষ এবং তারা উভয় পক্ষকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বলেছে।

আম আদমি পার্টির প্রতিক্রিয়া

আপ (AAP) এই ঘটনাকে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা'-র অংশ হিসাবে বর্ণনা করেছে। পার্টির মুখপাত্ররা বলেছেন যে ইডি এবং কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যমন্ত্রীকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। তারা দাবি করেছে যে পুরো বিষয়টি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, যেখানে আইনি হাতিয়ারগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?

এখন যেহেতু আদালত ইডি-র কাছ থেকে বিস্তারিত জবাব চেয়েছে, তাই এটা দেখা গুরুত্বপূর্ণ হবে যে ইডি তাদের জবাবে কী তথ্য ও যুক্তি উপস্থাপন করে। যদি আদালত ইডি-র যুক্তিকে পর্যাপ্ত না মনে করে, তাহলে সম্ভবত সমন বাতিল করা হতে পারে অথবা কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন স্বস্তি দেওয়া হতে পারে।

অন্যদিকে, যদি আদালত ইডি-র সঙ্গে একমত হয়, তাহলে কেজরিওয়ালকে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হতে পারে। এই মামলাটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এর আইনি ও রাজনৈতিক পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে।

Leave a comment