বাগেশ্বর ধামের মহন্ত পণ্ডিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী রাজস্থানের রেওয়াসা এবং সিকারের অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কাশ্মীর নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে হিন্দু রাষ্ট্র এবং গোমাতা সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়েছেন। শাস্ত্রী আসন্ন গোমাতা পদযাত্রার ঘোষণাও করেছেন এবং জনগণকে জাতীয়তাবাদ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
Sikar: বাগেশ্বর ধামের মহন্ত পণ্ডিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী রাজস্থানের রেওয়াসা এবং সিকারের ভাষণে সরাসরি পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। শাস্ত্রী বলেছেন কাশ্মীর তো নেওয়া হবেই এবং প্রয়োজন পড়লে 'দহেজে পাকিস্তানও তোলা হবে'। তিনি হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, গোমাতা সংরক্ষণ এবং জাতীয়তাবাদ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। শাস্ত্রী ৭ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত গোমাতা পদযাত্রা করার ঘোষণাও করেছেন।
রাজস্থানের বীরভূমি এবং হিন্দু রাষ্ট্রের সংকল্প
পণ্ডিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী রাজস্থানের বীরভূমির উল্লেখ করে বলেছেন, এটা মহারানা প্রতাপের ভূমি, যেখানে ঘোড়া এবং হাতিও कट्टर হিন্দু। তিনি জনগণের কাছে আবেদন করেছেন, তারা যেন জাতিভেদ নয়, বরং জাতীয়তাবাদ গ্রহণ করে। শাস্ত্রী বলেছেন, 'হিন্দু রাষ্ট্রের পতাকা যদি কোথাও ওড়ানো হয়, তাহলে প্রথম নাম রাজস্থানেরই হবে। আমাদের বেদ এবং সন্ত পরম্পরার ওপর ভরসা রাখতে হবে, কপালে তিলক লাগাতে হবে এবং গো-রক্ষক নয়, গো-সেবক হতে হবে।'
শাস্ত্রী এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, রাজস্থানের সমর্পণ এবং বীরত্বই একে দেশে বিশেষ করে তোলে। তাঁর মতে, হিন্দু সমাজকে ধর্ম এবং সংস্কৃতির প্রতি সচেতন থাকতে হবে।
শাস্ত্রী পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন
পণ্ডিত শাস্ত্রী পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “তোমাদের মিসাইল চীনের, কম চলে। আমাদেরটা ৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মার করতে পারে। এখন যদি ঘাঁটাও, তবে ছাড়া হবে না।” তিনি ভারতের সামরিক শক্তির উদাহরণ দিতে গিয়ে অপারেশন সিন্দুরের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন ভারতীয় সেনা শত্রুদের ভেতরে ৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঢুকে গিয়েও অ্যাকশন নিতে পারে।
শাস্ত্রীর এই বক্তব্যে শুধু মঞ্চে উপস্থিত লোকেরাই উৎসাহিত হননি, সোশ্যাল মিডিয়াতেও দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
গোমাতার জন্য জাতীয় পদযাত্রার ঘোষণা
ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী গোমাতাকে রাষ্ট্রমাতা বানানোর জন্য এবং হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ৭ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করার ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'ভারত তখনই হিন্দু রাষ্ট্র হবে, যখন গোমাতা বাঁচবে। আমাদের সংস্কৃতি এবং ধর্মের জন্য গোরু মায়ের সংরক্ষণ জরুরি।'
শাস্ত্রী উগান্ডার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে কন্যাদানে পণ নয়, বরং গরু দেওয়া হয়। তিনি বলেন, যে ব্যক্তির কাছে যত বেশি গরু থাকে, তিনিই সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী বলে মনে করা হয়। তিনি ভারতীয় সমাজকেও এই পরম্পরা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।
ধর্মীয় এবং সামাজিক বার্তা
পণ্ডিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী তাঁর ভাষণে ধর্ম এবং দেশভক্তির ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হিন্দু সমাজকে শুধুমাত্র ধর্মীয় পরম্পরার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, বরং তাকে রাষ্ট্র নির্মাণ এবং সামাজিক উত্থানের কাজেও সক্রিয় হতে হবে।
তিনি গো-সেবা এবং গরু সংরক্ষণকে হিন্দু রাষ্ট্রের পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের মাতৃভূমির সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় পরম্পরা সুরক্ষিত থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভারত সম্পূর্ণরূপে হিন্দু রাষ্ট্র হতে পারবে না। এই উদ্দেশ্যেই আমরা পদযাত্রা করছি।”
অনুষ্ঠানে ভক্তদের বিপুল ভিড়
রেওয়াসা ধামে পণ্ডিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর স্বাগত জানাতে প্রচুর ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন। মঞ্চে পৌঁছানোর জন্য জায়গায় জায়গায় ধস্তাধস্তিও হয়, এবং সেই সময় একজন মহিলা কনস্টেবল পড়ে যান। শাস্ত্রী বিশেষ বিমানে সিকার পৌঁছন এবং তাঁকে বিশাল সম্বর্ধনা জানানো হয়।
ভক্তরা শাস্ত্রীর বার্তাগুলিকে দেশভক্তি এবং ধর্মীয় অনুশাসন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।