বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের আমেজ এখন তীব্র হতে শুরু করেছে, এবং এরই মধ্যে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ড. মোহন যাদব পাটনার দিঘা বিধানসভা কেন্দ্রে একটি জমজমাট রোড শো করে বিরোধীদের উপর তীব্র আক্রমণ করেছেন।
পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার অভিযান জোরদার হয়েছে, এবং শাসক-বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক আক্রমণ ক্রমাগত তীব্র হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায়, বেশ কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা বিহারে নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ড. মোহন যাদব শুক্রবার সপ্তমবারের মতো বিহারে প্রচার চালান এবং পাটনা জেলার দিঘা বিধানসভায় সন্ধ্যায় একটি রোড শো আয়োজন করেন। রোড শো চলাকালীন তিনি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর তীব্র আক্রমণ করেন।
বিহারের নির্বাচনী যুদ্ধ, এনডিএ-র ঢেউ: মোহন যাদব
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর সন্ধ্যায় পাটনার দিঘা বিধানসভা কেন্দ্রে আয়োজিত রোড শো-তে হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপচে পড়েছিল। ভিড়কে উদ্দেশ্য করে মোহন যাদব বলেন যে, বিহারে এনডিএ-র বিজয়ের পরিবেশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এবং এবার জনগণ আবারও নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ সরকার গঠন করতে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেন, “বিহারের এটি আমার সপ্তম সফর এবং প্রতিটি স্থানেই জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি। বিহারের মানুষ জানেন যে উন্নয়ন, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের সুরক্ষা কেবল বিজেপিই করতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী সনাতন সংস্কৃতির বৃহত্তম রক্ষক – মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্ব গুণের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন যে, “প্রধানমন্ত্রী মোদী কেবল উন্নয়নের প্রতীক নন, বরং ভারতের সনাতন সংস্কৃতির সর্ববৃহৎ রক্ষকও। তিনি বলেন,
'প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে উজ্জয়নে বাবা মহাকালের ‘মহালোক’-এর শুভ সূচনা হয়েছে। এখন মথুরার যমুনা তীরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি বিশাল তীর্থক্ষেত্র তৈরি হতে চলেছে। এটি ভারতের সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।'
মোহন যাদব বলেন যে, মধ্যপ্রদেশের মতো বিহারও দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং বিজেপির শাসনে উন্নয়নের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।
বিরোধীদের উপর তীব্র আক্রমণ: ছট পূজার অপমানকারীদের জনগণ শিক্ষা দেবে
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বিরোধী দলগুলোর উপর তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন যে রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদবের মতো নেতারা জনগণের অনুভূতি নিয়ে খেলছেন। রাহুল গান্ধী, যাঁর ঠাকুমা জরুরি অবস্থা জারি করে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করেছিলেন, তিনি আজও সেই একই মানসিকতা নিয়ে কথা বলেন। তেজস্বী যাদব এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা গোটা বিহারকে লজ্জিত করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারের মানুষকে অপরাধী বলেন। আর কংগ্রেস নেতারা এই মহান রাজ্যকে ‘ছোটখাটো’ বলে থাকেন। এমন চিন্তাভাবনার নেতাদের গণতন্ত্রে কোনো স্থান নেই। তিনি বলেন যে, ছট পূজা বিহারের আত্মা, এবং যে এর পবিত্রতাকে অপমান করবে, জনগণ তাকে কখনও ক্ষমা করবে না। ছট মাইয়ার অপমানকারীদের জনগণ এবার পদ্ম চিহ্নে বোতাম টিপে শিক্ষা দেবে।
একজন সাধারণ কর্মীও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন – এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। ড. যাদব তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন যে, বিজেপিতে একজন সাধারণ কর্মীও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পান। আমিও একজন সাধারণ কর্মী, যাকে দল ও জনগণ সেবার সুযোগ দিয়েছে। এটাই গণতন্ত্রের আসল সৌন্দর্য। অন্যদিকে, বিরোধীদের মধ্যে ক্ষমতা পরিবারতন্ত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বিহারে আজও সেই পুরনো মুখ, সেই পারিবারিক রাজনীতিই বিদ্যমান।












