নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীর ভোট চুরি ও ভোটার তালিকা গরমিলের অভিযোগের জবাব দিয়ে বলেছে, প্রমাণ ছাড়া এমন শব্দ ব্যবহার গণতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। কমিশন প্রমাণ পেশ করার আবেদন করেছে এবং রাহুল বিহারে ১৭ই আগস্ট থেকে ভোটার অধিকার যাত্রা করার ঘোষণা করেছেন।
নয়াদিল্লি: ভারতীয় নির্বাচন কমিশন কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী কর্তৃক উত্থাপিত ভোট চুরি এবং ভোটার তালিকায় গরমিলের অভিযোগের বৃহস্পতিবার জবাব দিয়েছে। কমিশন স্পষ্টভাবে বলেছে যে ‘ভোট চুরি’র মতো শব্দ ব্যবহার করা কেবল মিথ্যা গল্প তৈরি করার মতো নয়, এটি লক্ষ লক্ষ সৎ ভোটার এবং নির্বাচন কর্মীদের মর্যাদার উপরও প্রশ্ন তোলে। কমিশন রাহুল গান্ধীকে অনুরোধ করেছে যে তাঁর কাছে যদি কোনও প্রকারের গরমিল বা অপব্যবহারের প্রমাণ থাকে, তবে তা যেন হলফনামার মাধ্যমে সরাসরি কমিশনে জমা দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ
নির্বাচন কমিশন তাদের বিবৃতিতে বলেছে যে ভারতে ‘এক ব্যক্তি-এক ভোট’ নিয়ম প্রথম সাধারণ নির্বাচন (১৯৫১-৫২) থেকে लागू আছে এবং এই আইন দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মেরুদণ্ড। কমিশন বলেছে, “যদি কারও কাছে এই প্রমাণ থাকে যে কোনও ব্যক্তি দুই বা ততোধিক ভোট দিয়েছেন, তবে কোনও প্রমাণ ছাড়াই কোটি কোটি ভোটারকে ‘চোর’ বলা उचित নয়। এই ধরনের অভিযোগ ভারতীয় গণতন্ত্র এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর अनावश्यक সন্দেহ তৈরি করে।"
কমিশন এই বিষয়ের উপর জোর দিয়েছে যে কেবল অভিযোগ করলেই চলবে না। 'ভোট চুরির মতো নোংরা শব্দ ব্যবহার মিথ্যা গল্প তৈরি করার মতো এবং এর ফলে কোটি কোটি ভোটার এবং লক্ষ লক্ষ নির্বাচন কর্মীদের পরিশ্রম ও সততার উপর আঘাত লাগে। যদি কারও কাছে কোনও তথ্য থাকে তবে তা কমিশনের কাছে পেশ করা আবশ্যক।'
এক লক্ষ ভোট চুরির অভিযোগ
আসলে, রাহুল গান্ধী সম্প্রতি একটি প্রেস কনফারেন্সে অভিযোগ করেছিলেন যে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে। তিনি বলেন যে এই কারণেই কংগ্রেস প্রার্থী হেরে গেছেন। রাহুল আরও দাবি করেন যে নির্বাচন কমিশনের ডেটা এই গরমিলের সত্যতা প্রমাণ করে।
তবে, নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীর কাছে তাঁর দাবির প্রমাণ চেয়েছিল। কমিশন বলেছে যে অভিযোগ করার পরিবর্তে তাঁকে লিখিত প্রমাণের সাথে হলফনামা জমা দিতে হবে।
রাহুলের কমিশনের দাবি প্রত্যাখ্যান
রাহুল গান্ধী কমিশনের কাছে হলফনামা দাখিল করতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন যে নির্বাচন কমিশনের ডেটা তাদের ওয়েবসাইটে উপলব্ধ এবং এই ডেটা তিনি सार्वजनिक তথ্য হিসাবে নিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে কমিশন এই ইস্যু থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে। রাহুল বলেন, 'আমাকে ওই ডেটাতে স্বাক্ষর করার প্রয়োজন নেই। আমরা গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার জন্য এই বিষয়টি উত্থাপন করতে থাকব।'
কংগ্রেসের বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রা
রাহুল গান্ধী এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন যে কংগ্রেস ১৭ই আগস্ট থেকে বিহারে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ বের করবে। এই যাত্রা বিশেষভাবে বিহারে হওয়া স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR)-এর বিরুদ্ধে হবে। তিনি এটিকে গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার জন্য লড়াই বলেছেন। রাহুল लोगोंকে এই আন্দোলনে যোগ দিতে और अपने मताधिकारের সুরক্ষার জন্য आवाज উঠাতে अपील করেছেন।
এই যাত্রার উদ্দেশ্য ভোটার অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা বলা হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, এই অভিযান ভোটার তালিকায় যেকোনো প্রকার গরমিল বা ত্রুটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক।
