এষা দেওল ও ভরত তখতানির সম্পর্কের নতুন মোড়
বলিউডের বিখ্যাত তারকা দম্পতি এষা দেওল এবং ভরত তখতানি একসময় ছিলেন আদর্শ জুটি। ২০১২ সালে জাঁকজমক করে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। তবে একসঙ্গে ১১ বছর কাটানোর পর ২০২৪ সালে তাঁদের দাম্পত্য জীবনে ভাঙন ধরে এবং পরিণতিতে আসে বিচ্ছেদ। যদিও দুজনেই একটি যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তাঁদের আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে ‘পারস্পরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ’।
প্রাক্তন স্বামীর জীবনে নতুন অধ্যায়
এষার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ভরত তখতানি নিজেকে নতুন সম্পর্কের মধ্যে খুঁজে পান। সম্প্রতি তিনি ইনস্টাগ্রামে মেঘনা লাখানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে লিখেন—“পরিবারে স্বাগতম, এটি আনুষ্ঠানিক।” মেঘনাও ছবিটি রিপোস্ট করে তাঁদের সম্পর্ককে প্রকাশ্যে আনেন। এই ঘোষণা ভক্তদের অবাক করলেও, অনেকেই তাঁদের নতুন যাত্রার জন্য শুভেচ্ছা জানান।
বিচ্ছেদের কারণ ও সন্তানের প্রতি দায়বদ্ধতা
এষা-ভরতের বিচ্ছেদের খবর শোনার পর বলিউড মহল যথেষ্ট অবাক হয়েছিল। দুজনের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছিল, তাঁদের দুই মেয়ে রাধ্যা ও মিরায়ার ভবিষ্যতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যক্তিগত সম্পর্ক শেষ হলেও সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব তাঁরা কখনও এড়িয়ে যাবেন না। “আমাদের সিদ্ধান্ত সন্তানদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখেই,”—এমনটাই বলেছিলেন এষা।
গর্ভাবস্থায় ফের বিয়ের প্রতিজ্ঞা
২০১৭ সালে যখন এষা প্রথমবার মা হতে চলেছেন বলে ঘোষণা করেন, তখনই তিনি ও ভরত এক অনন্য সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা জুহুর ইসকন মন্দিরে সিন্ধি রীতি অনুযায়ী গোধ ভরাই অনুষ্ঠান করেন। সেই সময়ই ফের একবার পবিত্র আগুনের চারপাশে ফেরা দেন দুজন। অর্থাৎ প্রেগন্যান্সির মধ্যেই পুরনো প্রতিজ্ঞাকে নতুন করে বেঁধেছিলেন তাঁরা। অনেকের মতে, এটি ছিল দাম্পত্য জীবনে নতুন আশা ও নতুন শুরুর প্রতীক।
বলিউডি তারকাদের ভিড়ে বিশেষ অতিথি জয়া বচ্চন
এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলিউডের একাধিক নামী মুখ। হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, রশ্মি ঠাকরে এবং ডিম্পল কাপাডিয়া সহ পরিবারের ঘনিষ্ঠরা এই আনন্দের মুহূর্ত ভাগ করে নেন। বিশেষ করে জয়া বচ্চনের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা যোগ করে। শোনা যায়, তিনি নিজেও ‘তেল কুমকুম’ আচারে অংশ নেন, যা ছিল এক আবেগঘন মুহূর্ত।
ধর্মেন্দ্রর ইচ্ছা ও পারিবারিক চাপ
এষা দেওলের বাবা ধর্মেন্দ্রও মেয়ের এই দাম্পত্য ভাঙনের ঘটনায় গভীরভাবে কষ্ট পেয়েছিলেন। একটি সূত্রের দাবি, তিনি চাননি যে এষার সংসার ভেঙে যাক। যদিও তিনি মেয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি, তবুও নাতনিদের কথা ভেবে মনে করেছিলেন—“বিয়েটা যদি রক্ষা করা যায়, তবে সেটা চেষ্টা করা উচিত।” অভিজ্ঞ অভিনেতা হিসেবে নয়, একজন বাবার ভূমিকাতেই ধর্মেন্দ্র চেয়েছিলেন মেয়ের ঘরে আবার সুখ ফিরুক।
বাচ্চাদের উপর প্রভাব নিয়ে চিন্তা
এষা-ভরতের দুই মেয়ে রাধ্যা এবং মিরায়া তাঁদের দাদু-দিদিমার খুব কাছের। বিচ্ছেদের কারণে তাঁদের মানসিক অবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে—এমনটাই আশঙ্কা করতেন ধর্মেন্দ্র। তিনি মনে করতেন, বাবা-মা একসঙ্গে থাকলে সন্তানেরা সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে। আর সেই কারণেই হয়তো তিনি চাইছিলেন, এষা ও ভরত তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন।
বলিউডে গসিপের ঝড়
এষা দেওলের দাম্পত্য জীবন ঘিরে এমন নাটকীয় মোড় অবশ্যই বলিউড গসিপপ্রেমীদের কৌতূহল বাড়িয়েছে। একদিকে ভরত নতুন সম্পর্কে এগিয়ে গেছেন, অন্যদিকে এষার সংসার নিয়ে গুঞ্জন থামছেই না। বিশেষ করে তাঁর মা হেমা মালিনী ও বাবা ধর্মেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া অনেককেই টেনে এনেছে আলোচনায়। ভক্তদের মতে, এই পরিবারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত যেন সরাসরি প্রভাব ফেলে বলিউডি আলোচনায়।
সম্পর্কের জটিলতা ও নতুন শুরু
এষা দেওল ও ভরত তখতানির সম্পর্ক বারবার ভাঙন ও জোড়ার সাক্ষী হয়েছে। প্রেগন্যান্সির সময় ফের বিয়ের প্রতিজ্ঞা, বিচ্ছেদের ঘোষণা, আবারও পুনর্মিলনের ইঙ্গিত—সব মিলিয়ে তাঁদের যাত্রা রূপকথার গল্পের মতোই জটিল ও নাটকীয়। তবে একটি জিনিস স্পষ্ট—দুজনের জীবনেই তাঁদের সন্তানরাই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। ভবিষ্যতে তাঁদের সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে এখনো কৌতূহল তুঙ্গে।