ভারতে eSIM প্রযুক্তি দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে, তবে বর্তমানে এটি কেবল নির্বাচিত প্রিমিয়াম স্মার্টফোন এবং বড় অপারেটরদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রচলিত SIM কার্ডের তুলনায় eSIM অনেক সুবিধা প্রদান করে, যেমন অপারেটর পরিবর্তন করার সহজতা এবং হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি না থাকা, কিন্তু জটিল সেটআপ এবং সীমিত সমর্থন এর প্রধান চ্যালেঞ্জ।
ভারতে eSIM: ভারতের টেলিকম সেক্টর এখন প্রচলিত SIM কার্ড থেকে ডিজিটাল eSIM-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। Jio, Airtel এবং Vi-এর মতো কোম্পানিগুলি iPhone, Pixel এবং Samsung Galaxy-এর মতো প্রিমিয়াম স্মার্টফোনগুলিতে এর সমর্থন দিচ্ছে। eSIM-এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল যে এতে SIM কার্ড ঢোকানোর বা বের করার প্রয়োজন হয় না, যা ব্যবহারকারীদের আরও সুবিধা দেয়। তবে, সীমিত ডিভাইস সমর্থন, জটিল সেটআপ এবং ফোন পরিবর্তনের অসুবিধাগুলি এখনও এর পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
সাধারণ SIM কার্ড কী
প্রচলিত SIM বা Subscriber Identity Module হল একটি ছোট প্লাস্টিকের চিপ যা মোবাইল ফোনে প্রবেশ করাতে হয়। এতে ব্যবহারকারীর মোবাইল নম্বর, নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত তথ্য এবং কিছু মৌলিক কন্ট্যাক্ট সংরক্ষিত থাকে। ভারতে বর্তমানে ন্যানো-সিম (nano-SIM) সবচেয়ে বেশি প্রচলিত এবং প্রায় সব আধুনিক স্মার্টফোন এটি সমর্থন করে।
eSIM কী
eSIM অর্থাৎ Embedded SIM হল প্রচলিত SIM-এর একটি ডিজিটাল সংস্করণ। এটি সরাসরি ফোনের মাদারবোর্ডে বিল্ট-ইন থাকে এবং এটি সরানো যায় না। সক্রিয়করণের জন্য আলাদা কার্ড ঢোকানোর প্রয়োজন হয় না, বরং টেলিকম অপারেটর QR কোড বা ফোনের সেটিংসের মাধ্যমে এটি সক্রিয় করে দেয়। ভারতে iPhone, Google Pixel এবং কিছু Samsung Galaxy মডেল ইতিমধ্যেই eSIM সমর্থন সহ আসে।
eSIM এবং সাধারণ SIM-এর মধ্যে পার্থক্য
- সাধারণ SIM একটি ফিজিক্যাল কার্ড, যেখানে eSIM ফোনের ভিতরে আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকে এবং সরানো যায় না।
- eSIM-এ অপারেটর পরিবর্তন করার জন্য শুধুমাত্র QR কোড স্ক্যান করতে হয়, কিন্তু সাধারণ SIM পরিবর্তন করার জন্য কার্ড বদলাতে হয়।
- eSIM-এর সাথে ব্যবহারকারীরা একই সাথে ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল উভয় SIM ব্যবহার করতে পারেন।
- eSIM হারানোর বা চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে না, যেখানে ফিজিক্যাল SIM সহজে হারিয়ে যেতে পারে।
- eSIM ফোনের ভিতরে অতিরিক্ত জায়গা বাঁচায়, যার ফলে কোম্পানিগুলি স্লিম ডিজাইন বা বড় ব্যাটারি বসাতে পারে।
ভারতে eSIM-এর সুবিধা
eSIM ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরণের সুবিধা প্রদান করে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হল দোকান ছাড়াই অপারেটর পরিবর্তন করা যায়। ফিজিক্যাল SIM-এর মতো ভেঙে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে না। যারা বিদেশে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এই প্রযুক্তি অত্যন্ত উপযোগী, কারণ নতুন SIM না কিনেই তাৎক্ষণিকভাবে আন্তর্জাতিক প্ল্যান সক্রিয় করা যেতে পারে। এছাড়াও, ডুয়াল SIM-এর সুবিধাও পাওয়া যায়, যার ফলে একটি নম্বর কাজের জন্য এবং অন্যটি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য রাখা যেতে পারে।
ভারতে eSIM-এর চ্যালেঞ্জ
বর্তমানে eSIM-এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এর সীমিত ডিভাইস সমর্থন। এই প্রযুক্তি বর্তমানে কেবল প্রিমিয়াম স্মার্টফোন যেমন iPhone, Google Pixel এবং কিছু Samsung Galaxy মডেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হল এর জটিল সেটআপ। ফিজিক্যাল SIM-এর মতো তাৎক্ষণিকভাবে লাগিয়ে ব্যবহার করা যায় না, বরং QR কোড এবং সেটিংসের মাধ্যমে এটি সক্রিয় করতে হয়।
ফোন পরিবর্তন করাও eSIM-এ সহজ নয়। সাধারণ SIM-এর মতো এটিকে অন্য ডিভাইসে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানান্তর করা যায় না এবং প্রতিবার পুনরায় সেটআপ করতে হয়। এছাড়াও, বর্তমানে কেবল Jio, Airtel এবং Vi-এর মতো বড় কোম্পানিগুলি eSIM সমর্থন করে, যখন ছোট নেটওয়ার্কগুলি পিছিয়ে আছে। ফোন হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সমস্যা হয়, কারণ eSIM তাৎক্ষণিকভাবে স্থানান্তর করা যায় না এবং এর জন্য অপারেটরের কাছ থেকে পুনরায় অনুরোধ করতে হয়।