হাড়ের জন্য ক্ষতিকর খাবার: যা আপনার এড়িয়ে চলা উচিত

হাড়ের জন্য ক্ষতিকর খাবার: যা আপনার এড়িয়ে চলা উচিত

হাড়কে মজবুত রাখতে শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং সেই খাবারগুলি থেকেও দূরে থাকা জরুরি, যা ধীরে ধীরে হাড়কে দুর্বল করে দেয়। অতিরিক্ত লবণ, কোমল পানীয়, ক্যাফিন, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত মিষ্টি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার ক্যালসিয়ামের শোষণে বাধা দিয়ে হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়।

Unhealthy foods: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের মজবুতি কমতে থাকে, তবে ডায়েটে থাকা কিছু খাবার এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করে তোলে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত লবণ, কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস, ক্যাফিন, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত মিষ্টি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার হাড় থেকে ক্যালসিয়াম এবং মিনারেলস কমিয়ে দেয়, যার ফলে হাড় দুর্বল হতে শুরু করে। এই সমস্যা ফ্র্যাকচার এবং जोड़ों ব্যথার মতো সমস্যা তৈরি করে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য শুধুমাত্র সঠিক জিনিস খাওয়াই নয়, ক্ষতিকর খাদ্যগুলি ডায়েট থেকে বাদ দেওয়াও জরুরি।

বেশি লবণ খাওয়া হাড়ের শত্রু

লবণের বেশি ব্যবহার হাড়ের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। যখন শরীরে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সোডিয়াম পৌঁছায়, তখন তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ার সময়ে শরীর থেকে ক্যালসিয়ামও বেরিয়ে যায়। ক্রমাগত এমন হওয়ার কারণে হাড়ে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা যায় এবং হাড় দুর্বল হয়ে যায়। প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, আচার, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিপসের মতো জিনিস এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে।

কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস থেকে বিপদ

সফট ড্রিঙ্কস এবং কোল্ড ড্রিঙ্কসে ফসফোরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। এই অ্যাসিড রক্তে ক্যালসিয়ামের স্তরকে ভারসাম্য রাখার জন্য হাড় থেকে ক্যালসিয়াম টানতে শুরু করে। এই কারণে হাড়ের ক্যালসিয়াম ধীরে ধীরে কম হয়ে যায়। ক্রমাগত এই ড্রিঙ্কস পান করলে হাড়ের ঘনত্বে খারাপ প্রভাব পড়ে।

ক্যাফিন যুক্ত ড্রিঙ্কসও ক্ষতিকর

কফি, চা এবং এনার্জি ড্রিঙ্কসের বেশি সেবন হাড়কে দুর্বল করে। ক্যাফিন শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণ কমিয়ে দেয় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বের করার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে। যদি দিনে এক-দু কাপ চা বা কফি পান করা হয়, তাহলে সমস্যা হয় না, তবে এর মাত্রা বাড়ালে হাড়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

অ্যালকোহলের সরাসরি প্রভাব হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর

অ্যালকোহল সেবন হাড়কে দুর্বল করার একটি বড় কারণ। এটি হাড়ের গঠনে সাহায্যকারী কোষ অর্থাৎ অস্টিওব্লাস্টের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও এটি শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ডি-এর শোষণকেও বাধা দেয়। বেশি অ্যালকোহল পান করলে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে এবং ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মিষ্টি বেশি খেলেও দুর্বল হয় হাড়

মিষ্টি শুধু মেদ বা ডায়াবেটিসই বাড়ায় না, হাড়েরও ক্ষতি করে। মিষ্টি, কেক, পেস্ট্রি এবং সিরিয়াল-এর মতো বেশি সুগার যুক্ত জিনিস শরীরে অ্যাসিড ও ইনফ্লেমেশন বাড়িয়ে দেয়। এর কারণে শরীর হাড় থেকে ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেলস নিতে শুরু করে। ফলস্বরূপ হাড়ের ঘনত্ব ক্রমাগত কমতে থাকে।

প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেজড খাবার থেকে বাড়ে বিপদ

আজকালকের লাইফস্টাইলে মানুষ সহজলভ্যতার জন্য প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেজড খাবারের উপর বেশি নির্ভরশীল। ফ্রোজেন মিল, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, রেডি-টু-ইট স্ন্যাকস এবং চিপসের মতো জিনিসগুলিতে শুধু লবণের পরিমাণ বেশি থাকে তাই নয়, এগুলোতে প্রিজারভেটিভ এবং কেমিক্যালও মেশানো হয়। এই সব জিনিস শরীরের মিনারেল ব্যালেন্সকে নষ্ট করে দেয় এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

বদলাতে থাকা ডায়েট থেকে খারাপ হচ্ছে স্বাস্থ্য

বদলাতে থাকা লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাসের সরাসরি প্রভাব পড়েছে মানুষের হাড়ের উপর। আগে যেখানে মানুষ ঘরের তৈরি সুষম খাবার খেত, এখন সেখানে ফাস্ট ফুড এবং জাঙ্ক ফুডের চল বেড়ে গেছে। এগুলোতে থাকা সোডিয়াম, সুগার এবং প্রিজারভেটিভ ধীরে ধীরে হাড়ের মজবুতি কেড়ে নেয়। এটাই কারণ যে কম বয়সেই লোকেদের जोड़ों ব্যথা এবং ফ্র্যাকচারের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

Leave a comment