গুজরাটের গান্ধীনগরে নবরাত্রির কেশরিয়া গরবা অনুষ্ঠানে প্রদীপের আলোয় 'অপারেশন সিঁদুর'-এর এক বিশাল চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বীরত্বকে স্যালুট জানানো এই মহাআরতির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে।
গান্ধীনগর: গুজরাটের রাজধানী গান্ধীনগরে নবরাত্রি ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত কেশরিয়া গরবা অনুষ্ঠান এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর অদম্য সাহস ও বীরত্বকে স্যালুট জানিয়েছে। গরবার অষ্টম দিনে মহাআরতির সময় হাজার হাজার জ্বলন্ত প্রদীপ দিয়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর এক মনোরম চিত্র তৈরি করা হয়েছিল। এই অনন্য উৎসবে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহও উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি এই অসাধারণ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রদীপ দিয়ে লেখা হলো অপারেশন সিঁদুর
গান্ধীনগরের কেশরিয়া গরবায় এবার মা দুর্গার আরাধনার সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্বের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ দেখা গেল। মহাআরতির সময় প্রদীপের আলোয় অপারেশন সিঁদুরের আকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়, যা দেখতে হাজার হাজার মানুষ মাঠে জড়ো হয়েছিলেন। এই সময় ড্রোন ক্যামেরায় পুরো দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করা হয়, যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই অনুষ্ঠান দ্রুত ভাইরাল হয়।
গরবার আয়োজক সহায় ফাউন্ডেশনের মতে, প্রদীপের আলো দিয়ে তৈরি করা আকৃতিটি অপারেশন সিঁদুরের বীরত্ব ও পরাক্রমকে জীবন্তভাবে তুলে ধরেছে। হাজার হাজার প্রদীপের আলো যেন যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর শক্তি ও সাহসের ঝলক দেখিয়েছে। এই আয়োজন ধর্মীয় ও জাতীয় অনুভূতির এক অনন্য মিশ্রণ উপস্থাপন করেছে।
মহাআরতিতে সেনাকে স্যালুট
কেশরিয়া গরবার আয়োজকরা জানিয়েছেন যে, এই বছরের অনুষ্ঠানটি বিশেষ ছিল কারণ এতে पहलगাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরাক্রমকে স্মরণ করা হয়েছিল। মহাআরতির সময় প্রদীপ দিয়ে তৈরি আকৃতিতে অপারেশন সিঁদুর-এর নাম লিখে সেনাকে স্যালুট জানানো হয়। এই উদ্যোগটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় শাহের অনুপ্রেরণা ও উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছিল।
এই উপলক্ষে আয়োজকরা জানান যে, অপারেশন সিঁদুরকে স্যালুট জানানোর উদ্দেশ্য শুধু সেনাবাহিনীর বীরত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া ছিল না, বরং তরুণ ও সাধারণ জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম ও সুরক্ষার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করাও ছিল। গরবার এই রূপটি নবরাত্রি উৎসবকে এক নতুন পরিচয় দিয়েছে।
কেশরিয়া গরবা গড়ল বিশ্ব রেকর্ড
কেশরিয়া গরবা ২০২৫-এর অষ্টম দিনের মহাআরতি গ্লোবাল এক্সেলেন্স বুক অফ রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। হাজার হাজার প্রদীপ দিয়ে তৈরি বিশাল ও জীবন্ত আকৃতিটি বিশ্বজুড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্ব এবং অপারেশন সিঁদুরের সাহসকে তুলে ধরেছে। আয়োজকদের মতে, এই গরবা শুধু সাংস্কৃতিক নয়, জাতীয় গর্বেরও প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ভিডিও এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হাজার হাজার ভক্ত প্রদীপের আলো ও গরবার জাঁকজমক উপভোগ করেছেন। আয়োজক রীতাবেন প্যাটেল বলেছেন যে, এই ধরনের আয়োজন দেশপ্রেমের অনুভূতিকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এক অনন্য মাধ্যম।
কেশরিয়া গরবা দিল সামাজিক ও জাতীয় বার্তা
সহায় ফাউন্ডেশন এবং গরবার আয়োজকরা জানিয়েছেন যে, গরবার উদ্দেশ্য কেবল নবরাত্রি উৎসব উদযাপন করা নয়, বরং এটিকে জাতীয় চেতনা এবং সেনাবাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধার মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করা। অপারেশন সিঁদুরের এই চিত্রটি তরুণদের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগিয়েছে এবং নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
আয়োজকরা বলেন যে, ভবিষ্যতেও কেশরিয়া গরবায় এমন অনন্য আয়োজন করা হবে, যা সাংস্কৃতিক উৎসবের পাশাপাশি জাতীয় সম্মান ও সামাজিক সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করবে। এই বছরের অনুষ্ঠান গুজরাটের গরবা উৎসবকে দেশজুড়ে এক নতুন পরিচিতি দিয়েছে।