পাটনায় গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্র হত্যা: পুরুলিয়া জেলে ষড়যন্ত্র, কলকাতায় গ্রেফতার প্রধান শুটার

পাটনায় গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্র হত্যা: পুরুলিয়া জেলে ষড়যন্ত্র, কলকাতায় গ্রেফতার প্রধান শুটার

পাটনার পারস হাসপাতালে গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্র হত্যা মামলায় বড়ো রকমের পর্দাফাঁস হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলো পুরুলিয়া জেলে বন্দী শেরু সিং। এসটিএফ কলকাতা থেকে প্রধান শুটার সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

Chandan Mishra Case: পাটনার পারস হাসপাতালে গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার পরিকল্পনা পশ্চিম বাংলার পুরুলিয়া জেলে বন্দী গ্যাংস্টার শেরু সিং করেছিল। সে তার ঘনিষ্ঠ শুটার তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশাকে সুপারি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করিয়েছিল। বিহার এবং বাংলার এসটিএফ কলকাতা থেকে প্রধান শুটার সহ দশ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

পারস হাসপাতালে গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রের হত্যা

পাটনার পারস হাসপাতালে দিনের আলোতে গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি অপরাধমূলক ঘটনা নয়, এটি একটি সংগঠিত ষড়যন্ত্র। পুলিশ প্রথম থেকেই এই কেসে বাইরের কোনো গ্যাংয়ের জড়িত থাকার সন্দেহ করছিল, যা এখন প্রমাণিত।

কলকাতা থেকে শুটারদের গ্রেফতার

হত্যার তদন্তে নিযুক্ত বিহার পুলিশ শীঘ্রই জানতে পারে যে এতে বাংলার যোগসূত্র রয়েছে। এরপর বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ এসটিএফের যৌথ অভিযানে কলকাতার আনন্দপুর এলাকার একটি গেস্ট হাউস থেকে প্রধান শুটার তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশা সহ পাঁচ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও আরও পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

পুরুলিয়া জেলে রচিত হয়েছিল ষড়যন্ত্র

তদন্তে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, এই হত্যার ষড়যন্ত্র পশ্চিম বাংলার পুরুলিয়া জেলে রচিত হয়েছিল। সেখানে বন্দী কুখ্যাত গ্যাংস্টার শেরু সিং তার পুরনো সাথী তৌসিফকে এই হত্যার সুপারি দিয়েছিল। জানা যাচ্ছে, শেরু ও তৌসিফের বন্ধুত্ব পাটনার বেউর জেলে হয়েছিল, যখন তারা দুজনে একসঙ্গে বন্দী ছিল।

জেল থেকেই হচ্ছিল পরিকল্পনা ও যোগাযোগ

পুলিশ সূত্রে খবর, শেরু সিং জেল থেকেই ফোন এবং অন্যান্য মাধ্যমে তার সঙ্গীদের নির্দেশ দিত। এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সকল অভিযুক্তের মোবাইল ফোন, কল রেকর্ড এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে যে, জেলের ভেতর থেকেই পুরো পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং বাইরে থাকা গ্যাং সদস্যদের সক্রিয় করা হয়েছিল।

আগেও গ্যাংস্টাররা ছিল সক্রিয়

উল্লেখযোগ্য যে, কলকাতার নিউটাউনে যে স্থান থেকে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেখানেই ৯ জুন, ২০২১ তারিখে পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের এনকাউন্টার হয়েছিল। এতে স্পষ্ট যে, এই এলাকা অপরাধীদের কার্যকলাপের একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠছে।

পুলিশ কী বলছে?

পাটনা পুলিশ এবং এসটিএফ এই পুরো ঘটনাকে একটি সংগঠিত গ্যাংওয়ার এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এসটিএফ কর্মকর্তাদের বক্তব্য, গ্রেফতারকৃত সকল অভিযুক্ত শেরু সিং গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত এবং তাদের ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অন্যান্য রাজ্যের এজেন্সির সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।

চন্দন মিশ্রের প্রোফাইল

চন্দন মিশ্র বিহারের অপরাধ জগতে একটি পরিচিত নাম ছিল। তার বিরুদ্ধে অনেক অপরাধমূলক মামলা চলছে এবং সে আগে থেকেই সাজাপ্রাপ্ত ছিল। তবে, হাসপাতালে তার এই ধরনের হত্যাকাণ্ড রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।

Leave a comment