গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা সত্ত্বেও সংঘাত অব্যাহত

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা সত্ত্বেও সংঘাত অব্যাহত

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত। ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা সত্ত্বেও সংঘাত অব্যাহত। মানবিক সংকট গভীর, হাসপাতালে জায়গার অভাব এবং মৌলিক সুবিধার ঘাটতি বিদ্যমান।

Israel Air Attack on Gaza: গাজায় সংঘাত থামার নাম নিচ্ছে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনা (peace plan) এর মাঝে ইসরায়েল বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় বড় ধরনের বিমান হামলা (air strike) চালিয়েছে। দির আল-বালাহ (Deir al-Balah) স্থিত নাসের হাসপাতালের কর্মকর্তাদের মতে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলা হামলা ও গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ৪০ জন ফিলিস্তিনি (Palestinians) নিহত হয়েছেন।

 এদের মধ্যে শুধুমাত্র দক্ষিণ গাজাতেই ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন যে এদের মধ্যে ১৪ জন ইসরায়েলি সামরিক করিডোর (military corridor) এ নিহত হয়েছেন, যা প্রায়শই মানবিক সাহায্য (humanitarian aid) বিতরণের সময় লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে।

মধ্য গাজাতেও নেমে এলো তাণ্ডব

ইসরায়েলের হামলা থেকে মধ্য গাজাও রেহাই পায়নি। দির আল-বালাহতে অবস্থিত আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল (Al-Aqsa Martyrs Hospital) এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এখানে হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। গাজা সিটির শিফা হাসপাতাল (Shifa Hospital) এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান যে, তারা একটি মৃতদেহ পেয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আরও জানান যে, ক্রমাগত হামলার কারণে হাসপাতালে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ইসরায়েল শহরটি দখল (occupation) করার জন্য একটি বড় অভিযান চালাচ্ছে, যার ফলে নাগরিকদের সমস্যা আরও বেড়ে গেছে।

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ভাবনা

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার জন্য ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা (peace plan) পেশ করেছেন। এই পরিকল্পনা প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধ (war) শেষ করার একটি প্রচেষ্টা। পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাস (Hamas) কে ৪৮ জন জিম্মিকে (hostages) মুক্তি দিতে হবে, যার মধ্যে প্রায় ২০ জনের জীবিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে (Palestinian prisoners) মুক্তি দেবে।

পরিকল্পনায় হামাসকে ক্ষমতা ত্যাগ এবং অস্ত্র জমা দেওয়ার শর্ত রাখা হয়েছে। তবে, এই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র (Palestinian state) প্রতিষ্ঠার কোনো উল্লেখ নেই। এই কারণেই এই পরিকল্পনা নিয়ে ফিলিস্তিনি দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা যাচ্ছে।

নেতানিয়াহু প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) ট্রাম্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তবে, সমালোচকদের বক্তব্য যে, এই পরিকল্পনা বেশিরভাগই ইসরায়েলের স্বার্থে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন যে, এই চুক্তিতে ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থায়ী সমাধানের (permanent solution) সম্ভাবনা কম।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি দলগুলো এখনও এই পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছে। হামাসের এক কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP) কে বলেছেন যে, প্রস্তাবের কিছু বিষয় তাদের জন্য অগ্রহণযোগ্য (unacceptable) তবে তিনি স্পষ্ট করেননি যে সেগুলো কোন কোন বিষয়। কর্মকর্তা বলেন যে, অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলগুলোর (Palestinian factions) সাথে আলোচনার (consultation) পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

গাজায় অবনতিশীল মানবিক সংকট

গাজায় ক্রমাগত হামলা মানবিক সংকটকে (humanitarian crisis) আরও গভীর করেছে। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং হাসপাতালগুলোতে জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। সীমিত সংস্থান এবং ক্রমাগত বোমাবর্ষণের মাঝে নাগরিকদের খাদ্য, জল এবং ওষুধের মতো মৌলিক প্রয়োজনগুলো মেটানোও কঠিন হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন যে, আহতদের চিকিৎসা করা ক্রমাগত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ এবং ওষুধের অভাবে অনেক সময় রোগীরা সময়মতো চিকিৎসা পান না।

Leave a comment