আমেরিকান চাকরির ডেটা ও সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি

আমেরিকান চাকরির ডেটা ও সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি

দুর্বল আমেরিকান চাকরির ডেটা এবং ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার কারণে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ড প্রতি আউন্স ৩,৫৮৬ ডলারে লেনদেন করছে, যেখানে এই বছর এখন পর্যন্ত সোনা ৩৭% বেশি দামী হয়েছে। ডলারের দুর্বলতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়ও দাম বৃদ্ধির কারণ।

আজ সোনার দাম: সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি স্থিতিশীল ছিল। আমেরিকান ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সেপ্টেম্বরে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বাড়িয়েছে। স্পট গোল্ড প্রতি আউন্স ৩,৫৮৬.৮১ ডলারে লেনদেন করছে, যেখানে শুক্রবার এটি ৩,৫৯৯.৮৯ ডলারের সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। দুর্বল আমেরিকান কর্মসংস্থান ডেটা, ডলারের দুর্বলতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ধারাবাহিক ক্রয় সোনার দামকে সমর্থন জুগিয়েছে। এই বছর এখন পর্যন্ত সোনা ৩৭% বেশি দামী হয়েছে, যেখানে রূপা ০.৫% কমে প্রতি আউন্স ৪০.৭৫ ডলারে নেমে এসেছে।

সোনার দাম কেন বাড়ছে দ্রুত

সোনার দাম বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে আমেরিকান চাকরির ডেটাকে বিবেচনা করা হচ্ছে। আগস্ট মাসে চাকরির বৃদ্ধি অত্যন্ত দুর্বল ছিল এবং বেকারত্বের হার বেড়ে ৪.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি গত চার বছরের সর্বোচ্চ স্তর।

ক্যাপিটাল ডট কমের আর্থিক বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেছেন যে এখন বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বরে ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত সুদের হার কমাতে পারে। যদিও এর সম্ভাবনা কম, তবে আগের তুলনায় এটি একটি বড় পরিবর্তন। রোডার মতে, বর্তমান সময়ে সোনার জন্য সব দিক থেকে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যদি মুদ্রাস্ফীতির কোনো বড় ধাক্কা না আসে, তাহলে সোনা প্রতি আউন্স ৩,৬০০ ডলারের স্তর অতিক্রম করতে পারে।

এই বছর এখন পর্যন্ত ৩৭ শতাংশ দামী হয়েছে সোনা

সোনা বিনিয়োগকারীদের প্রথম পছন্দ হয়ে আছে। এই বছর এখন পর্যন্ত এর দাম ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালেও সোনার দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

সোনার এই দাম বৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। ডলারের দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ধারাবাহিক সোনা ক্রয় এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এর দাম বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়াও, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা এবং মন্দার সংকেতও সোনার চাহিদা বাড়িয়েছে।

চীনের ব্যাংকের সোনার প্রতি আস্থা

আগস্ট মাসে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক টানা ১০ম মাস ধরে তার সোনার মজুদ বাড়িয়েছে। এটিও আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামকে শক্তিশালী করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে যখন বড় অর্থনীতির কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সোনা কেনে, তখন এটি বাজারে একটি ইতিবাচক সংকেত দেয় এবং বিনিয়োগকারীরাও সোনায় বিনিয়োগকে নিরাপদ মনে করে।

আমেরিকান অর্থনীতি এবং সোনার সম্পর্ক

আমেরিকান অর্থনীতির দুর্বল ডেটা প্রায়শই সোনার দামকে শক্তিশালী করে। চাকরির গতির ধীরতা এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির ফলে এই সম্ভাবনা বেড়ে যায় যে ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমাতে হবে। সুদের হার কমালে তার সরাসরি প্রভাব ডলারের উপর পড়ে এবং ডলার দুর্বল হয়। যখন ডলার দুর্বল হয়, তখন বিনিয়োগকারীরা সোনার মতো নিরাপদ বিকল্পের দিকে ঝোঁকে। এই কারণেই সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সোনা ক্রমাগত নতুন উচ্চতা ছুঁচ্ছে।

রূপা এবং অন্যান্য ধাতুর অবস্থা

সোনার তুলনায় রূপার চাল দুর্বল ছিল। স্পট সিলভার ০.৫% কমে প্রতি আউন্স ৪০.৭৫ ডলারে নেমে এসেছে। অন্যদিকে প্লাটিনামে সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে এবং এটি ০.১% বেড়ে প্রতি আউন্স ১,৩৭৪.৩৫ ডলারে পৌঁছেছে। প্যালাডিয়ামের দাম প্রতি আউন্স ১,১০৯.৭১ ডলারে স্থিতিশীল ছিল।

Leave a comment