সোনার দামে ওঠানামা জারি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—‘বাই দ্য ডিপ’ কৌশলেই মুনাফার সুযোগ

সোনার দামে ওঠানামা জারি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—‘বাই দ্য ডিপ’ কৌশলেই মুনাফার সুযোগ

সোনার দাম আজ: গত সপ্তাহের প্রফিট বুকিংয়ের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বড়সড় পতন দেখা গিয়েছিল সোনা ও রুপোর দামে। মঙ্গলবার প্রতি আউন্সে সোনার দাম ৪,০০০ ডলারের নিচে নামলেও, বুধবার ফের ঘুরে দাঁড়ায় ‘ইয়েলো মেটাল’। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাজার এখন কনসলিডেশনের পর্যায়ে আছে এবং নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দামে নতুন ঊর্ধ্বগতি আসতে পারে। ক্রেতারা তাই আতঙ্ক না হয়ে ‘বাই দ্য ডিপ’ কৌশলে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন।

আন্তর্জাতিক বাজারে পতনের পর ফের ছন্দে সোনা-রুপো

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছিল সোনার দামে বড়সড় পতন। এক সপ্তাহের মধ্যে সোনার দাম সর্বোচ্চ শিখর থেকে প্রায় ৯% নেমে আসে। কিন্তু বুধবার এশিয়ান ট্রেডে দাম ফের বাড়ে, প্রতি আউন্সে পৌঁছে যায় ৪,০২৪ ডলারে (১,২৬,৭৮৬ টাকা প্রতি ১০ গ্রাম)। একই সঙ্গে রুপোর দামও প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে ৪৮.৩৭ ডলারে (১,৫২,৪০৯ টাকা প্রতি কেজি) পৌঁছায়।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: আতঙ্ক নয়, বিনিয়োগের সুযোগ

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক পতন শুধুমাত্র স্বাভাবিক ‘কনসলিডেশন ফেজ’। ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার অনুমান অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে সোনার দাম ৫,০০০ ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছাতে পারে। তাঁদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৭০ সালের পরে দেখা গিয়েছে এমন কয়েকটি বুল র‍্যালি—এ বছর তারই পুনরাবৃত্তি হতে পারে।

ফেড রেট ও বিশ্ব অর্থনীতি প্রভাব ফেলবে সোনার দামে

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ যদি আগামী দিনে নীতি সুদহার কমায়, তাহলে সোনার দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। কারণ, সুদের হার কমলে মূল্যবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে, আর সেই অনিশ্চয়তায় ‘সেফ হেভেন’ হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ বাড়বে। অন্য দিকে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘর্ষও সোনার চাহিদা বাড়াতে পারে।

শিল্পক্ষেত্রে রুপোর চাহিদা বাড়াচ্ছে দাম

বিশেষজ্ঞদের দাবি, বৈদ্যুতিক গাড়ি, সৌর বিদ্যুৎ, চিকিৎসা-সহ একাধিক প্রযুক্তি শিল্পে রুপোর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু উৎপাদন ঘাটতি কয়েক হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। ফলে শিল্পক্ষেত্রের এই চাহিদাই আগামী দিনে রুপোর দামে নতুন র‍্যালি আনতে পারে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে সোনার দাম পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত

টেকনিক্যাল চার্ট অনুযায়ী, সোনার দাম বর্তমানে ৩০ দিনের তলানি থেকে উপরে উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ফিবোনাসি রিট্রেসমেন্ট টেস্টের শেষ ধাপ হতে পারে, যার পরে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। তবে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে নজর রাখার পরই কেনাবেচার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত সপ্তাহের তীব্র দরপতনের পরে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে সোনা ও রুপোর দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের বড় অংশ এখন ‘বাই দ্য ডিপ’ কৌশলেই বাজি ধরছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক পতন কেবল সাময়িক, শিগগিরই ফের ঊর্ধ্বগতি দেখা যেতে পারে এই দুই ধাতুর দামে।

Leave a comment