বিহারে ৮৯০ কোটি টাকায় নির্মিত হবে বিশাল জানকী মন্দির ও চত্বর

বিহারে ৮৯০ কোটি টাকায় নির্মিত হবে বিশাল জানকী মন্দির ও চত্বর

বিহারের সীতামারীতে অবস্থিত পুনৌরা ধামে ৮৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে বিশাল জানকী মন্দির ও চত্বর। এই মন্দিরটি ৬৭ একর জমিতে বিস্তৃত হবে এবং ধর্মীয় পর্যটনকে উৎসাহিত করবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।

বিহার: বিহারের সীতামারী জেলায়, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঐতিহাসিক পুনৌরা ধাম এবার নতুন রূপে দেখা যাবে। এখানে মাতা জানকী (সীতা)-র বিশাল মন্দির ও চত্বরের পুনর্নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই স্থানটি মাতা সীতার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এবং এখন এটিকে আন্তর্জাতিক মানের ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।

বিশাল মন্দির নির্মাণে ৮৯০ কোটি টাকা ব্যয়

বিহার সরকারের অনুমোদন এবং কেন্দ্র সরকারের সহযোগিতায় এই পুরো প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৮৯০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন কাঠামো, ধর্মীয় সুবিধা এবং আধুনিক পর্যটন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

  • ১৩৭ কোটি টাকা বর্তমান মন্দিরের মেরামত, সংস্কার এবং আশেপাশের চত্বরের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।
  • ৭২৮ কোটি টাকা দিয়ে মন্দিরের চারপাশে পরिक्रमा পথ, পার্কিং, বিশ্রামাগার, সংগ্রহশালা, বাগান, জল পরিশোধন-এর মতো কাঠামো তৈরি করা হবে।
  • অন্যদিকে ১৬ কোটি টাকা আগামী ১০ বছর রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হবে।

অনুষ্ঠানে ঘোষণা করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন যে এই মন্দির মিথিলা এবং বিহারের ভবিষ্যতের দরজা, যা কর্মসংস্থান, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে নতুন দিশা দেখাবে।

মন্দির ও চত্বরের ক্ষেত্রফল হবে ৬৭ একর

মা জানকী মন্দিরটি মোট ৬৭ একর জমিতে নির্মিত হবে:

  • এর মধ্যে পূর্বে উপলব্ধ ১৭ একর জমি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
  • এর সাথে সরকার অতিরিক্ত ৫০ একর জমি এই প্রকল্পের জন্য উপলব্ধ করেছে।

এই বিশাল অঞ্চলে শুধুমাত্র মন্দির নয়, এর বিস্তৃত চত্বর, ধর্মীয় কার্যকলাপের জন্য হল, যজ্ঞশালা, ধর্মশালা, प्रवचन मंच, ধ্যান কেন্দ্র, যাত্রীদের জন্য থাকার সুবিধা এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও গড়ে তোলা হবে।

পুনৌরা ধামের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য

পুনৌরা ধাম, বিহারের সীতামারী জেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এই স্থানটি মাতা সীতার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত। প্রত্নতাত্ত্বিক, পৌরাণিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই স্থানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছর এখানে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত আসেন। এখন যখন এর পুনর্নির্মাণ হতে চলেছে, তখন এই স্থানটি অযোধ্যা, বারানসী এবং উজ্জয়িনীর মতো প্রধান ধর্মীয় স্থানগুলোর তালিকায় যুক্ত হবে।

ধর্মীয় পর্যটনে বড় উৎসাহ

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, 'এটি শুধু একটি মন্দির নির্মাণ নয়, এটি মিথিলাঞ্চল এবং বিহারের নবজাগরণের শুরু। মোদী সরকার ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলির পুনর্গঠনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং সীতা মন্দির এর একটি প্রধান উদাহরণ।' তিনি বলেন যে এই প্রকল্পটি এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি, স্থানীয় কর্মসংস্থান, এবং সংস্কৃতির সংরক্ষণের মাধ্যম হবে। এর মাধ্যমে বিহারে ধর্মীয় পর্যটনও নতুন মাত্রা পাবে।

মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সমর্থন

বিহার সরকার এই প্রকল্পটিকে আগেই অনুমোদন দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেছেন যে এই পরিকল্পনা বিহারের গৌরব বৃদ্ধির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখারও একটি বড় প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, 'পুনৌরা ধামের এই পরিকল্পনা শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিরও প্রতীক হবে।'

ভবিষ্যতের দিশা ও প্রত্যাশা

বিশাল জানকী মন্দির এবং এর বিস্তৃত চত্বর তৈরি হওয়ার পরে এই অঞ্চল একটি প্রধান তীর্থস্থান এবং পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। এর ফলে শুধু ভক্তদের সংখ্যা বাড়বে তাই নয়, স্থানীয় কারিগর, ব্যবসায়ী এবং পর্যটনের সাথে যুক্ত মানুষেরাও কর্মসংস্থান পাবে। এর পাশাপাশি মিথিলা অঞ্চলের সংস্কৃতি, শিল্প এবং ঐতিহ্যও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে একটি নতুন পরিচিতি পাবে।

Leave a comment