গ্রেটার নয়ডার নিক্কি হত্যাকাণ্ডে সিসিটিভি ফুটেজ এবং বোন কঞ্চনের বিবৃতিতে বড় অসঙ্গতি। ঘটনার সময় বাড়ির দ্বিতীয় তলার ক্যামেরা বন্ধ ছিল, যার ফলে পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে।
নিক্কি হত্যা মামলা: গ্রেটার নয়ডার सिरसा গ্রামে নিক্কি পালিয়া ওরফে নিক্কি ভাটির মর্মান্তিক মৃত্যু গোটা অঞ্চলকে নাড়া দিয়েছে। যৌতুক নির্যাতনের সাথে সম্পর্কিত এই মামলাটি এখন বিভিন্ন নতুন মোড় নিচ্ছে। নিক্কির বোন কঞ্চনের বিবৃতি এবং সিসিটিভি ফুটেজের মধ্যে বড় অসঙ্গতি সামনে এসেছে, যার ফলে পুলিশের তদন্ত সম্পূর্ণ নতুন দিকে মোড় নিয়েছে।
পুলিশ সূত্রমতে, যে সময়ে নিক্কির মৃত্যু হয়েছিল, সেই সময়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলার ক্যামেরা বন্ধ ছিল। যদিও গেট এবং দোকানের বাইরের ক্যামেরাগুলো চালু ছিল। ফুটেজে নিক্কির স্বামী বিপুলকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এই কারণে পুলিশ এখন পুরো মামলাটি নতুন করে খতিয়ে দেখছে।
কঞ্চনের বিবৃতি এবং সিসিটিভি ফুটেজে বড় অসঙ্গতি
নিক্কি হত্যাকাণ্ডে কঞ্চনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে নিক্কির বোন এবং একই বাড়িতে থাকত। সে পুলিশকে বিবৃতিতে বলেছিল যে নিক্কির স্বামী বিপুলই তাকে পুড়িয়ে মেরেছিল। কঞ্চন আরও দাবি করেছিল যে সে তার বোনকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল এবং পরে একটি এফআইআর দায়ের করেছিল।
কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ অনেক প্রশ্ন তুলেছে। পুলিশ সন্দেহ করছে যে ঘটনার সময় বাড়ির দ্বিতীয় তলার ক্যামেরা কেন বন্ধ ছিল। বাইরের ক্যামেরাগুলোতে বিপুলকে দোকানের কাছে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু ভিতরে কী ঘটেছিল তার কোনও প্রমাণ নেই। এখন পুলিশ কঞ্চনের বিবৃতি আবার তদন্ত করবে যাতে সত্য সামনে আসতে পারে।
নিক্কির মৃত্যুর রাতে কী ঘটেছিল
পুরো ঘটনাটি ২১শে অগাস্ট রাতের। নিক্কি আগুনে ঝলসে যায় এবং তার ভিডিও কঞ্চন নিজেই শ্যুট করে। ভিডিওতে নিক্কিকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা যাচ্ছিল, তার শরীরে আগুন জ্বলছিল। কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়।
কঞ্চন অভিযোগ করেছিল যে বিপুল দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে নিক্কিকে পুড়িয়ে মেরেছিল। নিক্কির ছোট ছেলেও একই কথা বলেছিল। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এমন কোনও প্রমাণ পায়নি যা থেকে স্পষ্ট হয় যে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগেছিল। হাসপাতালের রিপোর্টে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু ঘটনাস্থলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
পুলিশের হাতে দাহ্য পদার্থ এবং লাইটারের প্রমাণ
কাসনা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারা সেখান থেকে দাহ্য পদার্থের একটি বাক্স এবং একটি লাইটার পায়। এতে এই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় যে আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছিল কিনা।
ফুটেজে বিপুলকে ৫:৩০ থেকে ৬টার মধ্যে বাড়ির কাছে একটি বেকারির দোকানে ঢুকতে দেখা গেছে। কিন্তু যে সময়ে নিক্কি আগুনে ঝলসে যায়, সেই সময়ে তাকে বাড়ির বাইরে দেখা যাচ্ছে। এই অসঙ্গতির কারণে মামলাটি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
অবৈধ সম্পর্কের নতুন দিক
তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে বিপুলের একটি অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কটি হিংসাত্মকও ছিল কারণ বিপুল যে মহিলার সাথে সম্পর্কে ছিল, তাকে মারধর করত। এই নতুন দিকটি সামনে আসার পর পুলিশ সন্দেহ করছে যে পারিবারিক কলহের কারণেই নিক্কির মৃত্যু হয়েছে কিনা।
মহিলা কমিশনও তদন্ত করছে
উত্তরপ্রদেশ মহিলা কমিশনও এই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছে। তারা নিক্কির বাবা, মা এবং বোন কঞ্চনের সাথে কথা বলেছে। কমিশন চায় যেন পুরো সত্য সামনে আসে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি হয়।