গ্রেটার নয়ডায় ফের ছাত্রীর আত্মহত্যা: পরীক্ষার চাপ নাকি অন্য কিছু?

গ্রেটার নয়ডায় ফের ছাত্রীর আত্মহত্যা: পরীক্ষার চাপ নাকি অন্য কিছু?

গ্রেটার নয়ডায় মানসিক চাপের কারণে আরও এক ছাত্রী প্রাণ হারালেন। সর্বশেষ ঘটনাটি নলেজ পার্কের জিএনআইওটি কলেজের। সেখানে বিটেক প্রথম বর্ষের ছাত্রী খুশি পণ্ডিত তার বাড়িতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খুশি মূলত বিহারের বৈশালী জেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং গ্রেটার নয়ডার সিগমা-৪ এ গ্র্যান্ড ফোর্ট সোসাইটিতে তার পরিবারের সাথে থাকতেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে খুশির মরদেহ তার ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পরিবারের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ছাত্রী মানসিক চাপে ছিলেন। আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি শারদা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিডিএস ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনাও সামনে এসেছিল, যা এলাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

পরীক্ষার সময় ঘটে যাওয়া ঘটনা মানসিক চাপের কারণ

জানা গেছে, ৯ জুলাই খুশি কেসিসি কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। অভিযোগ, পরীক্ষার সময় তার কাছে একটি নকলের কাগজ পাওয়া যায়, যার কারণে কলেজ প্রশাসন তার উত্তরপত্র কেড়ে নিয়ে নতুন খাতা দেয়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, যে কাগজের কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে ওই বিষয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তা সত্ত্বেও কলেজের এই পদক্ষেপে খুশি অত্যন্ত মর্মাহত হন এবং মানসিক চাপে পড়ে যান।

পরিবারের মতে, এই ঘটনার পর থেকে খুশি খুবই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। তার ভাই বিকাশ পণ্ডিতের অভিযোগের ভিত্তিতে বেটা-২ কোতোয়ালি পুলিশ কেসিসি কলেজ কর্তৃপক্ষ, এক অজ্ঞাত শিক্ষক ও এক কর্মীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের ধারায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে, যাতে সত্য উদঘাটিত হয়।

কলেজ কর্তৃপক্ষের শোক প্রকাশ

জিএনআইওটি কলেজ কর্তৃপক্ষ এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে। কলেজের ডিরেক্টর ড. ধীরাজ গুপ্ত জানিয়েছেন, খুশি মেধাবী ছাত্রী ছিলেন এবং পরীক্ষার সময় ঘটনার পর তার কাউন্সেলিং করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ছাত্রী ১০ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত থিওরি পেপার এবং ২৪ থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও দিয়েছিলেন।

কলেজের পক্ষ থেকে ছাত্রীর পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনা শিক্ষা ব্যবস্থা, পরীক্ষা পরিচালনা এবং শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক নয়, মানসিক ও আবেগিক স্তরেও সমর্থন দেওয়া উচিত, যাতে তারা চাপের পরিস্থিতিতে সঠিক পথ খুঁজে পায় এবং এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।

Leave a comment