গুজরাটের কচ্ছে ২৪ ঘন্টা অবিরাম বৃষ্টির কারণে বন্যা ও জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জেলার একাধিক বাঁধ উপচে পড়ছে, স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আবহাওয়া দপ্তর রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
কচ্ছ: গুজরাটের কচ্ছ জেলায় রবিবার রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি জলপ্রলয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। জেলার অনেক নদী, হ্রদ এবং বাঁধ উপচে পড়ছে। ধোরডো অঞ্চল, যেখানে প্রতি বছর কচ্ছ রান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, সেখানেও জল জমে যাওয়ায় পুরো এলাকা ডুবে গেছে। প্রশাসন নাগরিকদের সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে নিচু এলাকাগুলিতে জল প্রবেশ করতে পারে। আবহাওয়া দপ্তর পুরো কচ্ছ এবং উত্তর গুজরাটের পাকিস্তান সীমান্তবর্তী জেলাগুলির জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
কচ্ছ জেলার অনেক অংশে জলের পরিস্থিতি গুরুতর। রাপার-এ গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ ইঞ্চি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে শহর এবং আশেপাশের গ্রামগুলিতে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় রাস্তাগুলিতে জল বইছে, যার ফলে যাতায়াত প্রভাবিত হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে কচ্ছের রণ জলমগ্ন
কচ্ছের বিখ্যাত রণও প্রবল বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রণে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত জল ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবনযাত্রাও প্রভাবিত হচ্ছে। জেলার রাপার-এ জলের তীব্র স্রোত অনেক আবাসিক এলাকাকে নদীতে পরিণত করেছে। জল এতটাই বেড়ে গেছে যে গ্রামবাসীদের জমি এবং রাস্তাও সম্পূর্ণ জলে ডুবে গেছে।
অনেক গ্রামকে সংযুক্তকারী রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে গ্রামবাসীদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। প্রশাসন মানুষকে নিরাপদ স্থানে থাকার এবং অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনোর আবেদন করেছে।
কচ্ছে স্কুল ও রাস্তা বন্ধ
কচ্ছ জেলার জেলা কালেক্টরের নির্দেশে, প্রবল বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার কারণে জেলার স্কুলগুলি ৮ সেপ্টেম্বর বন্ধ থাকবে। এছাড়াও, জেলার সাতটি প্রধান জাতীয় সড়ক যানবাহনের চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের অনুরোধ করা হয়েছে যে তারা যেন এই রাস্তাগুলিতে ভ্রমণ না করেন এবং উদ্ধারকার্যে সহযোগিতা করেন।
সৌরাষ্ট্রের অনেক জেলাতেও প্রবল বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সৌরাষ্ট্রের জেলাগুলির জন্যও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। উত্তর গুজরাটের জেলাগুলির জন্য অরেঞ্জ অ্যালার্ট এবং বাকি জেলাগুলির জন্য ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
কচ্ছে প্রশাসন এবং আবহাওয়া দপ্তরের প্রস্তুতি
কচ্ছ জেলা প্রশাসন বন্যা-আক্রান্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম এবং জল নিষ্কাশনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ শিবির এবং উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। আধিকারিকরা জনগণকে নিরাপত্তা বিধি মেনে চলার এবং নিরাপদ স্থানে থাকার আবেদন জানিয়েছেন।
আবহাওয়া দপ্তরের মতে, আগামী কয়েক ঘন্টায় আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, জেলা প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সতর্কতা বাড়িয়েছে। তারা সমস্ত নিচু এলাকা, হ্রদ এবং নদীর আশেপাশে বসবাসকারী ব্যক্তিদের তাদের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।