গুজরাটের জামনগরে অবস্থিত ভান্তারা পশুর চোরাচালান এবং অর্থ পাচারের মতো অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের আদেশে গঠিত SIT তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়ে সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে এবং ভান্তারাকে ক্লিন চিট দিয়েছে।
New Delhi: গুজরাটের জামনগরে অবস্থিত ভান্তারা গত কিছুদিন ধরে ক্রমাগত আলোচনায় রয়েছে। ভান্তারা একটি জুওলজিক্যাল রেসকিউ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, যা অনন্ত আম্বানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর উদ্দেশ্য আহত এবং অসহায় পশুদের বাঁচানো এবং তাদের যত্ন ও পুনর্বাসন করা। তবে, সম্প্রতি এখানে অভিযোগ উঠেছিল যে পশু উদ্ধার কেন্দ্রের আড়ালে হাতি পাচার এবং অর্থ পাচারের মতো কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে। এই অভিযোগগুলি কেবল ভান্তারাকেই নয়, এর কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল।
সুপ্রিম কোর্ট গঠন করে SIT
ভান্তারার বিরুদ্ধে ওঠা এই প্রশ্নগুলির পর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালত এই অভিযোগগুলির তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল অর্থাৎ SIT গঠন করে। এই SIT-এর সভাপতিত্বের দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জে চেলামেশ্বরাকে দেওয়া হয়। টিমকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যে তারা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করবে। ভান্তারাও আদালতের আদেশকে সম্মান জানিয়ে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।
SIT-এর প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে পেশ
SIT তাদের তদন্ত শেষ করার পর শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে প্রতিবেদন জমা দেয়। সোমবার বিচারপতি পঙ্কজ মিথাল এবং বিচারপতি পিবি ওয়ারলে এই প্রতিবেদনটি দেখেন এবং রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ভান্তারার উপর লাগানো সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তদন্তে এর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। SIT ভান্তারাকে সম্পূর্ণভাবে ক্লিন চিট দিয়েছে।
SIT কী বলেছিল
প্রতিবেদন অনুসারে, SIT ভান্তারায় কমপ্লায়েন্স এবং নিয়ন্ত্রক পদ্ধতিগুলি বিস্তারিতভাবে তদন্ত করেছে। তদন্তকারী দল দেখতে পেয়েছে যে এখানে পশুদের যত্ন এবং পুনর্বাসনের জন্য তৈরি নিয়ম ও মানগুলি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে। দল আরও বলেছে যে ভান্তারায় যে ব্যবস্থা রয়েছে তা সন্তোষজনক এবং এখানে কোনও অবৈধ কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কেন ভান্তারার উপর অভিযোগ উঠেছিল
উল্লেখ্য যে গত কয়েক মাস ধরে ভান্তারার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠছিল যে পশু, বিশেষ করে হাতিদের এখান থেকে পাচারের মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়াও, অর্থ পাচার এবং অবৈধ লেনদেন সংক্রান্ত প্রশ্নও তোলা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি সংগঠন এবং ব্যক্তি এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন এবং বলেছিলেন যে পশু উদ্ধার কেন্দ্রের নাম ব্যবহার করে অবৈধ কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে। এই অভিযোগগুলি ভান্তারার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।
ভান্তারার পক্ষ
এই অভিযোগের মধ্যে ভান্তারা সবসময় বলেছে যে তাদের উদ্দেশ্য কেবল আহত এবং অসহায় পশুদের বাঁচানো এবং তাদের যত্ন নেওয়া। অনন্ত আম্বানির নেতৃত্বে ভান্তারা অনেক পশুকে নিরাপদ জীবন দেওয়ার দাবি করেছে। প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য ছিল যে তাদের উপর লাগানো অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তারা প্রতিটি তদন্তের জন্য প্রস্তুত। সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা গঠিত SIT-এর তদন্তেও ভান্তারা পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান
যখন SIT তাদের প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে পেশ করে, তখন আদালত এটি রেকর্ডে নেয়। আদালত মনে করে যে তদন্তকারী দল যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা বিস্তারিত এবং নিরপেক্ষ। এই প্রতিবেদনের পর ভান্তারার উপর ওঠা গুরুতর অভিযোগ থেকে স্বস্তি মিলেছে। তবে, আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে যে ভবিষ্যতে যদি কোনও নতুন অভিযোগ বা প্রমাণ সামনে আসে, তবে তা বিবেচনা করা হবে।
কেন ভান্তারা বিশেষ
ভান্তারা কেবল একটি পশু উদ্ধার কেন্দ্র নয়, বরং এটি দেশের বৃহত্তম এবং আধুনিক জুওলজিক্যাল রেসকিউ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার বলে বিবেচিত হয়। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পশুদের নিরাপদ পরিবেশে রাখা হয়। আহত বা অসুস্থ পশুদের চিকিৎসা করে তাদের সুস্থ করা হয় এবং তাদের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করা হয়। অনন্ত আম্বানি এটিকে তার বিশেষ প্রকল্প হিসেবে গড়ে তুলেছেন।