পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চলছে। সরকার নিরাপদ স্থানে থাকার সতর্কতা জারি করেছে।
Pakistan Rain: পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে একের পর এক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পরিস্থিতি গুরুতর। গত ২৪ ঘণ্টায় মুষলধারে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় কমপক্ষে ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে। এছাড়াও, ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং তাদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রাদেশিক কর্মকর্তাদের মতে, বৃষ্টির কারণে নদীগুলোর জলস্তর বেড়ে গেছে এবং অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে, তবে প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কার কারণে পরিস্থিতি এখনও চ্যালেঞ্জিং।
দেরা ইসমাইল খান ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
দেরা ইসমাইল খান জেলায় ভারী বৃষ্টির সময় অনেক বাড়ির ছাদ ধসে পড়েছে এবং গাছ উপড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এই জেলায় তিনজন শিশুসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। অনেক আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা ত্রাণ কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন এবং উদ্ধারকারী দল ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মারদান জেলার তখতভাই এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে একটি বাড়ির ছাদ ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্ষা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৭৮৮ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানে এ বছর ২৬ জুন থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৭৮৮ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং ১,০১৮ জন আহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়া এই বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (PDMA) ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা ও নিরাপদে থাকার পরামর্শ
আবহাওয়া দফতর খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে লাল ও কমলা সতর্কতা জারি করেছে। তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে থাকার এবং নদীর তীর, ঢালু এলাকা ও ভূমিধসের সম্ভাব্য স্থান থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বিভাগটি সতর্ক করেছে যে ভারী বৃষ্টি ও বন্যার কারণে জরুরি পরিস্থিতিতে অবিলম্বে উদ্ধারকারী দলের সাথে যোগাযোগ করুন এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিন।
মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুর প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ত্রাণ ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করার জন্য। তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দলকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং প্রয়োজনীয় সম্পদের দ্রুত ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন।