আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন জানাচ্ছে, রাজ্যের আকাশে এখন বর্ষার মেঘ আরও ঘনীভূত হতে চলেছে। আগামী এক সপ্তাহ ধরে উত্তর থেকে দক্ষিণ—দুই বাংলাতেই চলবে বৃষ্টি। কোথাও হালকা, কোথাও মাঝারি, আর কোথাও আবার ভারী বর্ষণ নেমে আসবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। বিশেষত দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় শুক্রবার থেকেই আবহাওয়া বদলের সম্ভাবনা প্রবল।
দক্ষিণবঙ্গের ৮ জেলায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস
শুক্রবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদে বৃষ্টি হবে প্রবল মাত্রায়। আবহাওয়াবিদদের মতে, বর্ষণসঙ্গী ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে, যা গাছ উপড়ে পড়া বা কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও বৃষ্টি
দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায়ও হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনায় মাঝে মাঝে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিকেলের পর থেকে আকাশ ধীরে ধীরে মেঘে ঢেকে যাবে, যা শুক্রবার রাতের দিকে আরও ঘনীভূত হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের জন্যও সতর্কতা
শুক্র থেকে রবিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি ও সমতল জেলা—দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। ফলে স্থানীয় প্রশাসনকে পর্যাপ্ত সতর্কতা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টির কারণ—আবহাওয়াবিদদের বিশ্লেষণ
বর্ষার সক্রিয়তা বাড়ানোর জন্য মূলত দায়ী বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মেঘ জমার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই নিম্নচাপ কয়েকদিন সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
চাষিদের জন্য বার্তা
বৃষ্টির এই সময় কৃষিক্ষেত্রে যেমন সুফল বয়ে আনতে পারে, তেমনই অতিবৃষ্টি হলে শস্যক্ষেতের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের মাঠের জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। পাটচাষিদের জন্যও সতর্কবার্তা—অতিরিক্ত জল জমে গেলে ফলন নষ্ট হতে পারে।
শহুরে জীবনে প্রভাব
কলকাতা ও আশপাশের শহরাঞ্চলে ভারী বর্ষণ হলে জল জমে গাড়ি চলাচল ব্যাহত হতে পারে। বিশেষ করে অফিস টাইমে রাস্তায় যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি বা গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।
সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ
আবহাওয়া দপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতর সাধারণ মানুষকে অপ্রয়োজনীয় বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছে। খোলা জায়গায় বজ্রপাতের সময় মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, মাছধরা নৌকাগুলিকে সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে।