হিন্দুধর্মে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া: কেন দাহ করার সময় পিছনে ফিরে তাকানো নিষেধ?

হিন্দুধর্মে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া: কেন দাহ করার সময় পিছনে ফিরে তাকানো নিষেধ?

হিন্দু ধর্মে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কেবল শরীরকে পঞ্চভূতে বিলীন করার প্রক্রিয়া নয়, বরং মৃতের আত্মার শান্তি এবং পরলোক যাত্রার সাথে জড়িত একটি সংবেদনশীল অনুষ্ঠান। গরুড় পুরাণ এবং গীতা অনুসারে, দাহ করার সময় পিছনে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হয় যাতে আত্মা বন্ধনমুক্ত হয়ে এগিয়ে যেতে পারে। ১৩ দিনের কর্মকাণ্ড আত্মার শান্তি নিশ্চিত করে।

Antim Sanskar Rituals: হিন্দু ধর্মে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার গুরুত্ব অত্যন্ত গভীর। ভারতে, যখন কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হয়, তখন শ্মশান ঘাটে মৃতদেহকে আগুনে পুড়িয়ে পঞ্চভূতে বিলীন করা হয়। গরুড় পুরাণ এবং ভগবদ্গীতা অনুসারে, এই সময় পিছনে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হয়, কারণ মৃতের আত্মা মায়ার টানে ফিরে আসতে পারে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সাথে ১৩ দিন ধরে যে কর্মকাণ্ড করা হয় তা আত্মার শান্তি এবং তার পরলোক গমনের যাত্রা নিশ্চিত করে, যা পরিবার এবং সমাজ উভয়কেই সংযম ও শান্তির বার্তা দেয়।

হিন্দু ধর্মে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার গুরুত্ব

হিন্দু ধর্মে মৃত্যুর পরে আত্মার শরীর ত্যাগ করা এবং তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। গরুড় পুরাণ অনুসারে, যখন কারও দাহ করা হয়, তখন মৃতদেহকে শ্মশান ঘাটে আগুনে পুড়িয়ে পঞ্চভূতে বিলীন করা হয়। এই পবিত্র প্রক্রিয়ার সময় পিছনে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হয়, কারণ এই নিয়ম মৃতের আত্মা এবং তার শেষ যাত্রার সাথে জড়িত একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরে আত্মা স্বর্গ, নরক বা পরবর্তী জীবনের দিকে প্রস্থান করে।

দাহ সংস্কারের ঐতিহ্য এবং নিয়ম

দাহ সংস্কারের নিয়ম ও ঐতিহ্য আজও সম্পূর্ণরূপে পালন করা হয়। শ্মশান ঘাটকে শেষ স্থান হিসেবে মনে করা হয়, যেখানে ব্যক্তির শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হয়। এই পবিত্র রীতির কারণে পিছনে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হয়, যাতে মৃতের আত্মার শান্তি এবং তার শেষ যাত্রায় কোনও বাধা না আসে। এই ঐতিহ্য কেবল ধর্মীয় নিয়ম পালনের জন্যই নয়, বরং পরিবার ও সমাজে শান্তি এবং সংযম বজায় রাখার বার্তা দেয়।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় পিছনে ফিরে না তাকানোর কারণ

গরুড় পুরাণ অনুসারে, কারও মৃত্যুতে পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা গভীর আবেগে নিমজ্জিত হয়। শ্মশান ঘাটে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় মৃতের আত্মা তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে উপস্থিত থাকে। এই সময় অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে মনে করা হয় এবং ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা আবশ্যক।

আত্মার অমরত্ব এবং পরলোক যাত্রা

ভগবান কৃষ্ণ গীতায় বলেছেন যে আত্মা অজর, অমর এবং অবিনশ্বর; কেবল শরীর নশ্বর। যখন মৃতদেহকে অগ্নি দেওয়া হয়, তখন আত্মা তার পরলোক যাত্রায় যাত্রা করে। যদি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় কেউ পিছনে ফিরে তাকায়, তবে আত্মা মোহের কারণে তার সাথে ফিরে আসার ইচ্ছা রাখতে পারে। এই কারণে দাহ সংস্কারের পরে পিছনে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হয়, যাতে মৃতের আত্মা বন্ধনমুক্ত হয়ে শান্তিতে তার যাত্রা শেষ করতে পারে।

১৩ দিনের ঐতিহ্য

গরুড় পুরাণ অনুসারে, মৃত্যুর পরে শরীর থেকে নির্গত আত্মাকে ‘প্রেত’ বলা হয়। এই আত্মা এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই আত্মা শরীর থেকে মুক্ত হওয়ার পরে দশ দিন ধরে তার পরিচিত স্থান এবং মূল আবাসস্থলে ঘোরাফেরা করে। এই সময় মৃতের পরিবার এবং প্রিয়জনদের দ্বারা ১৩ দিন ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করা হয়। এর উদ্দেশ্য হল আত্মার শান্তি নিশ্চিত করা এবং তাকে পরলোকের যাত্রায় বাধাহীনভাবে এগিয়ে যেতে দেওয়া।

Leave a comment