আইসিসির ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: ২০২৯ মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১০ দল, মহাদেশীয় গেমসেও ক্রিকেট

আইসিসির ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: ২০২৯ মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১০ দল, মহাদেশীয় গেমসেও ক্রিকেট

আইসিসি (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল) শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে, ২০২৯ সালের মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপ এখন ১০টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বর্তমানে ৮টি দল খেলে। আইসিসি বোর্ড জানিয়েছে যে, টুর্নামেন্টের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং মহিলা ক্রিকেটের প্রসারের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্পোর্টস নিউজ: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) মহিলা ক্রিকেটের জন্য একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে, ২০২৯ সালের মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপ (Women’s ODI World Cup) এখন ১০টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এখনও পর্যন্ত এই টুর্নামেন্ট শুধুমাত্র আটটি দলের মধ্যে খেলা হত। আইসিসি জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ মহিলা ক্রিকেটের বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা এবং প্রতিযোগিতামূলকতা বাড়ানোর দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।

এর পাশাপাশি, আইসিসি আরও ঘোষণা করেছে যে, ক্রিকেটকে আফ্রিকান গেমস (African Games 2027) এবং প্যান-আমেরিকান গেমস (Pan-American Games 2027)-এও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের বৈশ্বিক প্রসারণকে তুলে ধরে, বিশেষ করে যখন এই খেলাটি সম্প্রতি ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০২৯ মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে বড় পরিবর্তন

আইসিসি বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ২০২৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা আট থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হবে। এর উদ্দেশ্য হল মহিলা খেলোয়াড়দের জন্য আরও বেশি সুযোগ এবং বৈশ্বিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। আইসিসি জানিয়েছে যে, গত মহিলা বিশ্বকাপ দর্শকদের সংখ্যার অনেক রেকর্ড ভেঙেছে। 

প্রায় তিন লক্ষ দর্শক স্টেডিয়ামে খেলা দেখেছেন, যেখানে অন-স্ক্রিন দর্শক সংখ্যাতেও ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গেছে। ভারতে প্রায় ৫০ কোটি দর্শক টিভি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ম্যাচ দেখেছেন — যা যেকোনো মহিলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য একটি নতুন রেকর্ড। আইসিসি বোর্ড এটিকে মহিলা ক্রিকেটের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে যে, ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে মহিলা খেলোয়াড়দের জন্য আরও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সরবরাহ করা প্রয়োজন।

অ্যাসোসিয়েট দেশগুলির জন্য তহবিল বৃদ্ধি

আইসিসি তার অ্যাসোসিয়েট সদস্য দেশগুলির (Associate Nations) উন্নয়নের জন্যও একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে এই দেশগুলিকে ১০ শতাংশ বেশি তহবিল দেওয়া হবে, যার ফলে স্থানীয় স্তরে ক্রিকেটের পরিকাঠামো এবং মহিলা ক্রিকেটের উন্নয়নে উৎসাহ পাওয়া যাবে। আইসিসি জানিয়েছে যে, এই সিদ্ধান্ত "সমান উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তি"-এর প্রতি সংস্থার প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। 

বোর্ডকে "প্রজেক্ট ইউএসএ (Project USA)" সম্পর্কেও আপডেট দেওয়া হয়েছে, যা মার্কিন ক্রিকেট স্থগিত হওয়ার পর শুরু হয়েছিল। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল খেলোয়াড়দের পেশাগত এবং উন্নয়নমূলক স্বার্থে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করা।

আফ্রিকান এবং প্যান-আম গেমসেও বাজবে ক্রিকেটের জয়ধ্বনি

ক্রিকেট এখন কেবল অলিম্পিকেই নয়, মহাদেশীয় গেমসেরও অংশ হতে চলেছে। আইসিসি নিশ্চিত করেছে যে, এই খেলাটি কায়রো (মিশর) এ ২০২৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য আফ্রিকান গেমস (African Games) এবং লিমা (পেরু) এ আয়োজিত প্যান-আম গেমস (Pan-Am Games)-এ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। আফ্রিকান এবং ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলিতে ক্রিকেটের বিকাশ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, এবং এই ক্রীড়া ইভেন্টগুলিতে অন্তর্ভুক্তির ফলে এই অঞ্চলে নতুন প্রতিভার উত্থানের সম্ভাবনা বাড়বে।

আইসিসি মহিলা ক্রিকেট প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালি রাজকে আইসিসি মহিলা ক্রিকেট কমিটির (ICC Women’s Cricket Committee) সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

তার সাথে অ্যাশলে ডি সিলভা (শ্রীলঙ্কা), অমল মজুমদার (ভারত), বেন সায়ার (অস্ট্রেলিয়া), শার্লট এডওয়ার্ডস (ইংল্যান্ড) এবং সালা স্টেলা সিয়ালে ভেইয়া (পাপুয়া নিউ গিনি)-কেও এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কমিটি বিশ্বব্যাপী মহিলা ক্রিকেটের নীতি, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং টুর্নামেন্ট কাঠামো নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার কাজ করবে।

Leave a comment