IMD ভারী বৃষ্টি সতর্কতা ঝেঁপে নামতে যাচ্ছে বর্ষার বর্ষিত ক্রোধ

IMD ভারী বৃষ্টি সতর্কতা ঝেঁপে নামতে যাচ্ছে বর্ষার বর্ষিত ক্রোধ

দক্ষিণবঙ্গের আকাশ এখন যেমন কালো মেঘে ঢাকা, ঠিক তেমনই সামনের কয়েক ঘণ্টায় ঝড়ো বৃষ্টি নামতে চলেছে। ইন্ডিয়ান মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (IMD) একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টি ও দুর্যোগের সম্ভাবনা নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে। মৌসুমী অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের জোড়ার প্রভাবে এখন আকাশ মেঘলা ও বৃষ্টির প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকা, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা গভীর সতর্কতায় রয়েছে। এই এলাকাগুলোতে ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হয়ে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেগবান হবে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা, মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে বাড়ি-বাড়ি ও সড়ক চলাচলে সমস্যা হতে পারে বলে স্থানীয় প্রশাসন সচেতন থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দাপট কমবে, উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে

রু করবে বলে IMD’র পূর্বাভাস। সোমবার থেকে পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসবে। তবে বৃষ্টি পুরোপুরি বন্ধ হবে না। আকাশ মেঘলা থাকার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি বা হালকা ঝড়ো হাওয়া বজায় থাকবে। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা যেমন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং এলাকায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এই এলাকায় নদী-নালা ফুলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীর জলস্তর বেড়ে উঠতে পারে। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের বিশেষ করে হিমালয় পর্বতমালা অঞ্চলে যেতে বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

মৌসুমী অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের জোড়া প্রভাবে আবহাওয়ায় অস্থিরতা

গত কয়েকদিন ধরে মৌসুমী অক্ষরেখা পূর্ব বঙ্গ এলাকা দিয়ে ঢুকে এসে আবার ঘূর্ণাবর্ত আকারে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির আগমন ঘটিয়েছে। এই জোড়া প্রভাব আবহাওয়া অস্থিরতার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে accompanied হয়ে বৃষ্টি প্রবলতর হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকা ও নদীতটবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণাবর্তের দিক পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাতের এলাকা দিনদিন পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই মানুষকে সবসময় আবহাওয়া আপডেট মনোযোগ দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই ঘূর্ণাবর্তগুলি আগামী তিন-চারদিন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। এর ফলে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া থেকে সাময়িক মুক্তি পাওয়া যাবে না।

দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনিক সতর্কতা ও প্রস্তুতি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হয়েছে। নদী ও জলাশয়গুলোয় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলগুলো প্রস্তুত রয়েছে যেকোনও জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত কাজ করার জন্য। জলাবদ্ধতার জন্য শহর এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্কুল ও কলেজগুলোকে বৃষ্টি কমা পর্যন্ত ছুটি রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংস্থাকেও ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব বিবেচনায় রেখে বিশেষ সতর্কতা নিতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতি একবারে বদলে যেতে পারে বলে প্রতিটি সরকারি দফতর উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বর্ষার অনিশ্চয়তা বাড়ছে

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব বেড়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ধরনের আবহাওয়া ঘটনা আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনের আবহাওয়া পরিবর্তন এবং অতিবৃষ্টি বা বন্যার ঘটনা বেড়ে চলেছে। এটি কৃষক, সাধারণ মানুষ ও শহরবাসীর জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষার আগাম সতর্কতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার ও নাগরিক সমাজকে আরও প্রস্তুত থাকতে হবে। আবহাওয়া দফতরের তথ্য ও সতর্কতা গ্রহণে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকে।

আগামী দিনগুলোতে আবহাওয়ার বিস্তারিত আপডেট প্রয়োজন

IMD’র পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়া নিয়ে বিস্তারিত আপডেট আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার প্রকোপ কতদিন থাকবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। এছাড়াও নদীগুলোর জলস্তরের পরিবর্তন কী হবে তাও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাই যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করেন তাদেরকে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। আবহাওয়ার উপর নজর রাখা এবং সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলাই হবে বিপদ এড়ানোর একমাত্র পথ। পাড়াপড়শি ও পরিবারের সবাইকে সতর্ক করা দরকার যাতে কেউ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় না পড়ে।

Leave a comment