আয়কর বিল ২০২৫: ছোট করদাতাদের জন্য বিশাল স্বস্তি আসতে পারে

আয়কর বিল ২০২৫: ছোট করদাতাদের জন্য বিশাল স্বস্তি আসতে পারে

আয়কর বিল ২০২৫-এ এমন একটি পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে যা লক্ষ লক্ষ ছোট করদাতাদের জন্য উল্লেখযোগ্য স্বস্তি আনতে পারে। বর্তমানে, আপনার আয় করযোগ্য সীমার নিচে থাকলেও যদি আপনার আয় থেকে টিডিএস (উৎস থেকে কর কাটা) কাটা হয়, তবে সেই টাকা ফেরত পেতে আপনাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। এই বাধ্যবাধকতা এখন বাতিল করা হতে পারে।

সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ

লোকসভার সিলেক্ট কমিটি আয়কর বিল ২০২৫-এর খসড়া পর্যালোচনার সময় একটি বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে। কমিটি ২৬৩ ধারার উপধারা (১)(ix) বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এই ধারা বর্তমানে বাধ্যতামূলক করে যে কোনও করদাতা যদি রিফান্ড চান, তবে তাদের আইটিআর দাখিল করতে হবে, এমনকি যদি তাদের আয় করযোগ্য সীমার নিচেও থাকে।

কমিটি মনে করে যে এই বিধানটি ছোট করদাতাদের জন্য একটি অপ্রয়োজনীয় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়শই, যারা করের আওতায় পড়েন না, তারাও শুধুমাত্র টিডিএস কাটা হয়েছে এবং এটি ফেরত পাওয়ার অন্য কোনও উপায় নেই বলে রিটার্ন দাখিল করেন।

সরাসরি কারা উপকৃত হবেন

এই প্রস্তাবটি সম্ভবত সীমিত আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী হবে, যারা সাধারণত করের আওতায় পড়েন না।

  • প্রবীণ নাগরিক যারা পেনশন পান এবং যাদের আয় মৌলিক ছাড়ের সীমার নিচে
  • ছোট বিনিয়োগকারী যাদের স্থায়ী আমানত থেকে আয় হয় এবং যার উপর ব্যাংক টিডিএস কাটে
  • চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী শ্রমিক যাদের বেতন সীমিত কিন্তু নিয়োগকর্তারা টিডিএস কাটেন

বর্তমান পরিস্থিতি

বর্তমানে, কোনও ব্যক্তি করের আওতায় না পড়লেও যদি তাদের ব্যাংক বা বেতন থেকে টিডিএস কাটা হয়, তবে তাদের রিফান্ড পেতে আইটিআর দাখিল করতে হয়। যদি তারা সময়মতো রিটার্ন দাখিল না করেন, তবে তাদেরLate filing penalty বা আইনি পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে হতে পারে।

কী পরিবর্তন হতে পারে

সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ গৃহীত হলে, যাদের আয় করযোগ্য সীমার নিচে, তাদের শুধুমাত্র রিফান্ড পাওয়ার জন্য রিটার্ন দাখিল করতে বাধ্য করা হবে না।

এটি সিস্টেমকে সহজ করবে এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের বারবার আইটিআর দাখিলের ঝামেলা থেকে মুক্তি দেবে। এটি আয়কর বিভাগের উপর থেকেও বোঝা কমাবে, কারণ প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ রিটার্ন শুধুমাত্র রিফান্ডের জন্য দাখিল করা হয়।

রিপোর্টে কী বলা হয়েছে

কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, শুধুমাত্র রিফান্ড পাওয়ার জন্য স্বল্প আয়ের করদাতাদের আইটিআর দাখিল করতে বাধ্য করা কার্যত ভুল। এটি অপ্রয়োজনীয় আইনি ঝুঁকি এবং ভয়ের সৃষ্টি করে। তাই, কর ব্যবস্থাকে আরও বাস্তবসম্মত এবং করদাতা-বান্ধব করতে এই বিধানটি বাতিল করা উচিত।

বিলটির সংসদীয় যাত্রা

আয়কর বিল ২০২৫ লোকসভায় ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে পেশ করা হয়েছিল।

একই দিনে, বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

সিলেক্ট কমিটির রিপোর্ট ২১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে পেশ করা হয়েছিল, যার সভাপতিত্ব করেন বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডা।

এই কমিটিতে মোট ৩১ জন লোকসভা সাংসদ ছিলেন যারা বিভিন্ন দিক বিস্তারিতভাবে বিবেচনা করেছিলেন।

পরবর্তী প্রক্রিয়া

এখন, এটা দেখা আকর্ষণীয় হবে যে সরকার এই সুপারিশটিকে আইনে অন্তর্ভুক্ত করে কিনা। যদি এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনটি পাস হয়, তবে এটি লক্ষ লক্ষ ছোট করদাতাদের জন্য একটি বড় স্বস্তি হতে পারে, যা শুধুমাত্র তাদের পদ্ধতিকে সহজ করবে না, অপ্রয়োজনীয় জরিমানা বা শাস্তির ভয় থেকেও মুক্তি দেবে।

এই প্রস্তাবটিকে কর ব্যবস্থাকে আরও মানবিক এবং সহানুভূতিশীল করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Leave a comment