রেলওয়ে জরুরি কোটা টিকিটের নিয়মে পরিবর্তন এনে ট্রেন ছাড়ার এক দিন আগে পর্যন্ত আবেদন করা বাধ্যতামূলক করেছে। সময়সীমার পরে আবেদন বাতিল করা হবে।
Emergency Quota Ticket: ভারতীয় রেলওয়ে জরুরি কোটা (Emergency Quota) টিকিট বুকিংয়ের নিয়মে বড়সড় পরিবর্তন করেছে। এখন থেকে জরুরি কোটার অধীনে টিকিট পেতে যাত্রীদের আরও বেশি সতর্ক এবং পরিকল্পনা মাফিক চলতে হবে। রেল মন্ত্রক একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে যে, এই কোটার অধীনে টিকিটের জন্য আবেদন ট্রেন ছাড়ার এক দিন আগে করতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃক রিজার্ভেশন চার্ট তৈরির সময়সীমার নতুন বিধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই পরিবর্তন করা হয়েছে।
জরুরি কোটা কী?
জরুরি কোটা হল সেই বিশেষ কোটা যা জরুরি পরিস্থিতিতে যাত্রীদের টিকিট দেওয়ার জন্য সংরক্ষিত থাকে। এর মধ্যে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, আকস্মিক মৃত্যু, সরকারি আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় যাত্রা, প্রতিরক্ষা কর্মীদের মোতায়েন ইত্যাদি কারণে টিকিটের প্রয়োজন হতে পারে। এই কোটা রেলওয়ের বিশেষ আধিকারিকদের অনুমতি সাপেক্ষেই দেওয়া হয়।
নতুন নিয়ম কী বলছে?
রেলওয়ে বোর্ড কর্তৃক জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, যাত্রীদের এখন থেকে ট্রেন ছাড়ার কমপক্ষে একদিন আগে জরুরি কোটার জন্য আবেদন করতে হবে। এই নিয়মাবলীকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
- সকাল ১০:০০ থেকে দুপুর ১:০০-এর মধ্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলির জন্য
জরুরি কোটার অনুরোধ যাত্রার আগের দিন দুপুর ১২:০০ টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট জরুরি বিভাগে পৌঁছানো উচিত।
- দুপুর ২:০১ থেকে রাত ১২:৫৯-এর মধ্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলির জন্য
অনুরোধ যাত্রার আগের দিন বিকেল ৪:০০ টার মধ্যে জরুরি বিভাগে জমা দিতে হবে।
কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?
সম্প্রতি রেলওয়ে অন্য একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে ট্রেনের রিজার্ভেশন চার্ট ট্রেন ছাড়ার ৮ ঘণ্টা আগে তৈরি করা হবে, যেখানে আগে এই সময়সীমা ৪ ঘণ্টা ছিল। এই সিদ্ধান্তের কারণে এই নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন রেলওয়েকে অনেক আগে চার্ট ফাইনাল করতে হয়, ফলে জরুরি কোটা টিকিট বরাদ্দও সেই সময়সীমার মধ্যে করতে হবে। রেলওয়ের মতে, এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হল টিকিট বুকিং প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং পরিকল্পনা মাফিক করা, যাতে কেউ কোটার অপব্যবহার করতে না পারে এবং যাদের সত্যিই টিকিটের প্রয়োজন, তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সাহায্য করা যায়।
যাত্রীদের কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?
যাত্রীদের এখন থেকে তাদের যাত্রার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রাখতে হবে এবং যদি তাদের জরুরি কোটার অধীনে টিকিট প্রয়োজন হয়, তবে তাদের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন করতে হবে। দেরি হলে তাদের অনুরোধ গ্রহণ করা হবে না। এই নিয়ম বিশেষভাবে সেইসব মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যারা শেষ মুহূর্তে সরকারি সুপারিশ পত্র বা মেডিকেল ইমার্জেন্সির ভিত্তিতে টিকিট পাওয়ার আশা করেন।
কারা জরুরি কোটার জন্য আবেদন করতে পারেন?
রেল মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, নিম্নলিখিত শ্রেণির যাত্রীরা জরুরি কোটার জন্য আবেদন করতে পারেন:
- গুরুতর রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্য
- সরকারি বা প্রতিরক্ষা কর্মী যারা ডিউটিতে যাচ্ছেন
- আকস্মিক পারিবারিক কারণ যেমন মৃত্যু বা দুর্ঘটনা
- সংসদ সদস্য, বিচারক বা ঊর্ধ্বতন সরকারি আধিকারিক যাদের যাত্রা আবশ্যক
- প্রত্যেকটি অনুরোধের সঙ্গে যথাযথ নথি এবং প্রমাণপত্র থাকা জরুরি।
तत्काल টিকিটের বুকিংয়েও পরিবর্তন হয়েছে
রেলওয়ে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে तत्काल টিকিট বুকিংয়ের নিয়মেও পরিবর্তন করেছে। এখন থেকে শুধুমাত্র ভেরিফায়েড ব্যবহারকারীরাই तत्काल টিকিট বুক করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্তটি জালিয়াতি বুকিং এবং বট দ্বারা টিকিট ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগের পরে নেওয়া হয়েছে। এর জন্য ব্যবহারকারীকে আইডি প্রুফ, মোবাইল নম্বর এবং ইমেল ভেরিফিকেশন করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রেলওয়ের উদ্দেশ্য কী?
রেল মন্ত্রকের স্পষ্ট বক্তব্য হল, এই সমস্ত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হল ব্যবস্থাকে আরও বেশি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং যাত্রীবান্ধব করা। জরুরি কোটার মাধ্যমে অভাবীদের সাহায্য করা জরুরি, কিন্তু এতে কোনো ধরনের শিথিলতা বা দুর্নীতির সম্ভাবনাকে खत्म করাও সমানভাবে জরুরি।