সরকার ITR ফাইল করার সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়াল না, বরং ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাত্র একদিনের জন্য অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করল। এর পেছনে চারটি প্রধান কারণ রয়েছে: পর্যাপ্ত সময় আগেই দেওয়া হয়েছে, পোর্টালে বড় কোনও সমস্যা দেখা যায়নি, বেশিরভাগ মানুষ আগেই ITR জমা দিয়েছেন, এবং সময়সীমার গুরুত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন।
ITR ফাইলিংয়ের শেষ তারিখ: ট্যাক্স পেশাদারদের আবেদন সত্ত্বেও সরকার ITR ফাইল করার শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়াতে রাজি হয়নি। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (CBDT) কেবলমাত্র ২৪ ঘন্টার অতিরিক্ত সময় দিয়ে শেষ তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছে। এর কারণ হলো, বেশিরভাগ করদাতা ইতিমধ্যেই তাঁদের রিটার্ন জমা দিয়েছেন, পোর্টালে কোনও বড় প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল না, আগে থেকেই পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়েছিল এবং শেষ তারিখের গুরুত্ব বজায় রাখা অপরিহার্য ছিল। এটি একটি বার্তা দেয় যে, সরকার শেষ তারিখের ব্যাপারে কঠোর নীতি অবলম্বন করে।
পর্যাপ্ত সময় আগেই দেওয়া হয়েছিল
সরকার অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৫-২৬ এর জন্য নন-অডিট মামলার ITR ফাইল করার শেষ তারিখ আগেই বাড়িয়ে দিয়েছিল। মে ২০২৫-এ ঘোষণা করা হয়েছিল যে, ITR ফাইল করার শেষ তারিখ ৩১ জুলাই থেকে বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে। এর মানে হল, বেশিরভাগ করদাতার রিটার্ন ফাইল করার জন্য যথেষ্ট সময় ছিল।
তবুও, ১৫ সেপ্টেম্বরের সন্ধ্যায় পোর্টালে ভিড় এবং কিছু ছোটখাটো সমস্যার কারণে সরকার একদিনের জন্য অতিরিক্ত সময় দেয়। তাই শেষ তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
বড় প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল না
সরকার সাধারণত তখনই সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় যখন পোর্টালে বড় ধরনের প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয় বা অতিরিক্ত ভিড় হয়। এবার তেমন পরিস্থিতি ছিল না। ১৫ সেপ্টেম্বরের আগে আয়কর পোর্টালে শুধুমাত্র কিছু ছোটখাটো অভিযোগ এসেছিল, কোনো বড় সমস্যা ছিল না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শেষ তারিখের ব্যাপারে বেশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা ছাড়াই দীর্ঘ সময়ের জন্য তারিখ বাড়াতে তারা ইচ্ছুক নয়।
সময়সীমার গুরুত্ব বজায় রাখা, এটাই সরকারের উদ্দেশ্য
সরকার যদি শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিত, তাহলে করদাতাদের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হতে পারত যে ভবিষ্যতেও শেষ তারিখ বাড়ানো হতে পারে। এর ফলে কাজ দেরিতে করার প্রবণতা বাড়ত এবং শেষ তারিখের গুরুত্ব কমে যেত।
সরকারের জন্য এর সরাসরি প্রভাব পড়ত কর সংগ্রহ এবং ফেরত প্রক্রিয়ার ওপর। দেরিতে ফাইল করা রিটার্নের কারণে কর সংগ্রহে বিলম্ব হত এবং ফেরত প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যেত। এই কারণেই সরকার মাত্র ১ দিনের জন্য সময় বাড়িয়েছিল।
বেশিরভাগ করদাতা ইতিমধ্যেই ফাইল করেছেন
১৫ সেপ্টেম্বরের রাত পর্যন্ত প্রায় ৭.৩ কোটি মানুষ ITR ফাইল করেছিলেন। এই সংখ্যা গত বছর ৩১ জুলাইয়ের শেষ তারিখে ফাইল হওয়া ৭.২৮ কোটি রিটার্নের চেয়েও বেশি ছিল।
আয়কর বিভাগ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্বের টুইটার)-এ জানিয়েছে যে, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ কোটির বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে এবং এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এটি নির্দেশ করে যে, অধিকাংশ করদাতা সময়মতো তাঁদের রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
এখন করদাতাদের জন্য পরিস্থিতি কী
করদাতাদের এখন আর অতিরিক্ত সময়সীমা বাড়ানোর আশা করা উচিত নয়। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্তই রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। দেরিতে জমা দেওয়ার জন্য জরিমানা এবং অতিরিক্ত কর দিতে হতে পারে।
এছাড়াও, যদি ITR সময়মতো ফাইল না করা হয়, তবে লস ক্যারি ফরওয়ার্ডের মতো অনেক সুবিধা হারানো যেতে পারে। তাই করদাতাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, দেরি না করে তাঁদের রিটার্ন জমা দিন।