এজবাস্টন টেস্ট: ভারতের লিড ২৪৪, ৪০০+ টার্গেট দিতে চাইবে ভারত

এজবাস্টন টেস্ট: ভারতের লিড ২৪৪, ৪০০+ টার্গেট দিতে চাইবে ভারত

এজবাস্টন টেস্টে ভারতের লিড এখন ২৪৪ রান। টিম ইন্ডিয়া ইংল্যান্ডকে ৪০০+ টার্গেট দিয়ে বদলা নিতে চাইবে, কারণ ২০২২ সালে ইংল্যান্ড এই মাঠেই ৩৭৮ রান চেজ করেছিল।

IND vs ENG: ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে এজবাস্টনের ঐতিহাসিক মাঠে চলমান পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি এখন গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ভারতীয় দল তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৪ রান সংগ্রহ করেছে এবং মোট লিড ২৪৪ রানে পৌঁছেছে। চতুর্থ দিনের খেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, কারণ টিম ইন্ডিয়া আবারও সেই মাঠে 'সেফ টার্গেট' দেওয়ার চেষ্টা করছে, যেখানে দু বছর আগে ইংল্যান্ড ৩৭৮ রান তাড়া করে সহজেই ইতিহাস তৈরি করেছিল।

যখন এজবাস্টন ভারতের জন্য 'যন্ত্রণা-জমি' হয়ে উঠেছিল

২০২২ সালের কথা। ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ টেস্ট ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচটি এজবাস্টনে খেলা হয়েছিল, যা সেই সময়ে পুনঃনির্ধারিত টেস্ট ম্যাচ হিসাবে পরিচিত ছিল। ভারত ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ৩৭৮ রানের লক্ষ্য রেখেছিল, যা চতুর্থ ইনিংসের জন্য বেশ কঠিন বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ইংল্যান্ড বাজবল ক্রিকেট প্রদর্শন করে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে সেই স্কোর অর্জন করে।

এই কারণে, যখন ২০২৪ সালের এই সিরিজ একই মাঠে চলছে এবং ভারত আবারও চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ডকে বড় লক্ষ্য দেওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সবার দৃষ্টি একটাই প্রশ্নের দিকে— এবার কি ভারত ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করা থেকে নিজেকে আটকাতে পারবে?

এজবাস্টনের সফল রানচেজ: ৪০০ কি যথেষ্ট?

এখন পর্যন্ত এজবাস্টনে চতুর্থ ইনিংসে সফল রানচেজের দিকে নজর দিলে পরিসংখ্যান চমকে দেওয়ার মতো:

  • ইংল্যান্ড - ৩৭৮ রান বনাম ভারত, ২০২২
  • অস্ট্রেলিয়া - ২৮২ রান বনাম ইংল্যান্ড, ২০২৩
  • ইংল্যান্ড - ২১১ রান বনাম নিউজিল্যান্ড, ১৯৯৯
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ - ১৫৭ রান বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৯১

এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, 350+ স্কোরও এখন 'অজেয়' নয়। ইংল্যান্ডের বর্তমান আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শৈলী, বিশেষ করে চতুর্থ ইনিংসে, তাদের যেকোনো লক্ষ্যের প্রতি নির্ভীক করে তোলে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য “সেফ টার্গেট” সম্ভবত ৪০০ বা তার বেশি হতে পারে।

ভারতীয় ব্যাটিং-এর পরের সকাল হবে নির্ণায়ক

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ভারত ৬৪/১ রান করে। ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল দ্রুত আউট হয়ে যান, কিন্তু কেএল রাহুল (২৮)* এবং করুন নায়ার (১৮)* ক্রিজে টিকে রয়েছেন। এখন ভারতকে যদি ইংল্যান্ডকে ৪০০-এর বেশি টার্গেট দিতে হয়, তাহলে এই দুই ব্যাটসম্যানের দীর্ঘ ইনিংস খেলা খুবই জরুরি।

কেএল রাহুল এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়ার 'এক্স ফ্যাক্টর' হতে পারেন। প্রথম ইনিংসে তিনি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি, তবে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যাটিং করছেন। যদি তিনি চতুর্থ দিন লাঞ্চ পর্যন্ত ক্রিজে থাকেন, তাহলে ভারত ৪০০+ এর দিকে যেতে পারে।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং সবচেয়ে বড় হুমকি

ইংল্যান্ডের কাছে হ্যারি ব্রুক, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, এবং বেন স্টোকস-এর মতো ব্যাটসম্যান রয়েছে যারা চতুর্থ ইনিংসে ম্যাচের মোড় ঘোরাতে পারে। তৃতীয় দিনে ব্রুক এবং জেমিস্মিথ তাদের প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে দেখিয়েছেন যে এই ব্যাটিং লাইনআপ কতটা গভীরতা এবং শক্তি রাখে।

যদি ইংল্যান্ড আবার 350-380 রানের মধ্যে লক্ষ্য পায়, তাহলে ভারতের বোলারদের প্রতিটি বলে মনোযোগ সহকারে আগ্রাসন এবং ধৈর্য দেখাতে হবে।

সিরাজ-জাদেজা-আকাশের ত্রয়ীর ওপর ভরসা

ভারতের বোলিংয়ের কথা বললে, আকাশের প্রত্যাবর্তন शानदार হয়েছে। তার গতি, নির্ভুলতা এবং রিভার্স সুইং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। একই সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজার মতো অভিজ্ঞ স্পিনার যদি পিচ থেকে সামান্য সাহায্য পান, তাহলে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারকে চাপে ফেলতে পারেন।

ইংল্যান্ডের প্রত্যাশা: ব্রুক-রুট-স্টোকস ত্রয়ী

ইংলিশ শিবিরে বিশ্বাস যে ব্রুকের আত্মবিশ্বাস, জো রুটের অভিজ্ঞ দক্ষতা এবং বেন স্টোকসের ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা যেকোনো লক্ষ্যকে ছোট প্রমাণ করতে পারে। রুট ২০২২ সালে এই মাঠেই অপরাজিত ১৪২ রান করে ৩৭৮ রান তাড়া করা সহজ করেছিলেন—একটি মনস্তাত্ত্বিক সুবিধা যা ভারত ভাঙতে চাইবে।

Leave a comment