ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দল ৪৭০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড তৈরি করেছে, যার মধ্যে ৪২২টি চার এবং ৪৮টি ছয় রয়েছে। এর আগে এই রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার নামে ছিল। এই সিরিজে ১২ জন ভারতীয় ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছেন, যা একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
রেকর্ড: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং আক্রমণ ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এই সিরিজে মোট ৪৭০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুধু রানের রেকর্ডই করেননি, বরং এমন একটি বিশ্ব রেকর্ডও করেছেন যা ভাঙা যে কোনও দলের জন্য সহজ হবে না।
চারের বন্যা, রেকর্ডের সম্ভার
ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এই সিরিজে মোট ৪২২টি চার এবং ৪৮টি ছয় মেরেছেন। এইভাবে, টিম ইন্ডিয়া টেস্ট সিরিজে মোট ৪৭০টি বাউন্ডারি মেরে নতুন বিশ্ব রেকর্ড করেছে। এর আগে এই রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার নামে ছিল, যারা ১৯৯৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪৬০টি বাউন্ডারি (৪৫১টি চার এবং ৯টি ছয়) মেরেছিল। এই প্রথমবার ঘটল যে ভারত একটি টেস্ট সিরিজে ৪০০-এর বেশি বাউন্ডারি মারার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। এর আগে ১৯৬৪ সালে ভারত একটি সিরিজে ৩৮৪টি বাউন্ডারি মেরেছিল, যা সেই সময়ে একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। কিন্তু এবারের পারফরম্যান্স পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
চার এবং ছক্কার মধ্যে লুকানো কৌশলের রহস্য
এই সিরিজে ভারতের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের কৌশল স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা শুধু টেকনিক্যালিই ইংলিশ বোলারদের পিছনে ফেলেননি, মানসিকভাবেও তাদের ক্লান্ত করে তুলেছিলেন। প্রতিটি সেশনে বারবার বাউন্ডারি এটাই দেখাচ্ছিল যে টিম ইন্ডিয়া ইংলিশ পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে বুঝেছে এবং সেটাকে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে শুভমান গিল, यशस्वी জয়সওয়াল, কে.এল. রাহুল, ঋষভ পন্থ, রবীন্দ্র জাদেজার মতো খেলোয়াড়রা বলকে সীমানার বাইরে পাঠাতে কোনও কসরত করেননি। এজবাস্টন টেস্টে গিলের ২৬৯ রানের ইনিংসে ৩৪টি চার এবং ৪টি ছয় ছিল, যা এই রেকর্ডের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
১২ ভারতীয় সেঞ্চুরিয়ানেরও রেকর্ড
বাউন্ডারির পাশাপাশি, ভারতের নামে আরও একটি রেকর্ড যুক্ত হয়েছে – টেস্ট সিরিজে সর্বাধিক খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরি করার রেকর্ড। এই সিরিজে মোট ১২ জন ভারতীয় ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছেন। এর আগে, শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিল। এই ১২টি সেঞ্চুরির মধ্যে রয়েছে यशस्वी জয়সওয়াল, শুভমান, রবীন্দ্র জাদেজা, কে.এল. রাহুল, ঋষভ পন্থ, ওয়াশিংটন সুন্দরের সেঞ্চুরি। এটি ভারতের ব্যাটিং গভীরতা এবং ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করে।
ওভালে টেস্টেও ভারতের দাপট দেখা গেল
সিরিজের শেষ টেস্ট, যা ওভালে খেলা হয়েছিল, তাতে ভারতের ব্যাটিং শক্তি বজায় ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ইংল্যান্ডকে জেতার জন্য ৩৭৪ রানের বড় লক্ষ্য দেয়। यशस्वी জয়সওয়াল এই ইনিংসে ১১৮ রানের একটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন। একই সাথে আকাশ দীপ ৬৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। রবীন্দ্র জাদেজা এবং ওয়াশিংটন সুন্দরও ৫৩-৫৩ রান করে দলকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দেন। তৃতীয় দিন পর্যন্ত ইংল্যান্ড দল ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান করেছিল এবং তাদের জয়ের জন্য তখনও ৩২৪ রান প্রয়োজন ছিল।
ইতিহাসে ভারতের নাম অঙ্কিত
৪৭০টি বাউন্ডারি মেরে ভারত এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা এখন টেস্ট ক্রিকেটেও আক্রমণাত্মক এবং আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খেলা একটি দল। এই রেকর্ড শুধুমাত্র একটি সংখ্যা নয়, টিম ইন্ডিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের ঘোষণা – যেখানে আগ্রাসন এবং সাহসের মধ্যে ভারসাম্য দেখা যায়।