গাজা সংঘাতের সমাপ্তি টানতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ পরিকল্পনা: হামাস নিরস্ত্রীকরণ?

গাজা সংঘাতের সমাপ্তি টানতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ পরিকল্পনা: হামাস নিরস্ত্রীকরণ?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূতের দাবি, গাজা সংঘাতের একটি যৌথ সমাপ্তি টানার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল; হামাস নিরস্ত্রীকরণ হবে এবং পুনর্গঠনে সহযোগিতা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইসরায়েল-হামাস সংঘাত: গাজায় কয়েক দশকের সংঘাতের মধ্যে, একটি নতুন পরিকল্পনা যুদ্ধের সমাপ্তির আশা জাগিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, গাজা ভূখণ্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে একটি বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা গাজার চলমান সংঘাতের "স্থায়ী অবসান" ঘটাতে পারে।

গাজা পুনর্গঠন ও হামাসের অবস্থান বিষয়ক পরিকল্পনা

স্টিভ উইটকফের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন গাজা পুনর্গঠনের জন্য ইসরায়েলের সাথে কাজ করছে। এর মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা পুনরুদ্ধার, শিক্ষা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন যে, হামাস, যারা ২০০৭ সাল থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে, তারাও এখন যুদ্ধ বন্ধ করতে ও অস্ত্র সমর্পণে প্রস্তুত।

যদিও এই পরিকল্পনা সম্পর্কে হোয়াইট হাউস বা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে উইটকফের এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে।

অস্ত্র সমর্পণের জন্য হামাসের শর্ত

হামাস এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ফিলিস্তিনকে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেই কেবল তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে। এই দাবি দীর্ঘকাল ধরে ফিলিস্তিনিদের একটি মূল ইস্যু।

গাজায় এখনও হামাসের হাতে ৫০ জনের বেশি ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন এখনও জীবিত আছেন। সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে একজন জিম্মিকে নিজের কবর খুঁড়তে দেখা গেছে, যা বিষয়টির সংবেদনশীলতা এবং গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক চাপ এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলির ভূমিকা

গাজা সংঘাত বন্ধে অন্যান্য দেশগুলোর ভূমিকাও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কাতার, মিশর, ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলো হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করতে এবং শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত হতে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে। এই দেশগুলো গাজার রাজনৈতিক দায়িত্ব পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনপুষ্ট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের জন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

মানবিক সংকট এবং গাজার পরিস্থিতি

গাজায় দীর্ঘদিনের সংঘাতের কারণে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্যসেবার তীব্র অভাব, বিদ্যুৎ ও জলের সংকট এবং বেকারত্ব সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশাপাশি খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে।

সম্প্রতি, গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার খবর পাওয়া গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দিয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা গাজার পরিস্থিতিকে "মানবিক বিপর্যয়" এবং "রক্তপাত" হিসেবে বর্ণনা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, এই পরিকল্পনা গাজার জনগণের জন্য আশার নতুন আলো হয়ে উঠতে পারে।

Leave a comment