প্রবল বিরোধিতার মুখে WCL ভারত-পাক লিজেন্ডস ম্যাচ বাতিল করল। খেলোয়াড়দের অসন্তোষ ও জনমতকে সম্মান জানিয়ে আয়োজকরা ক্ষমা চেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
IND-PAK: ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লিজেন্ডস (WCL)-এ ক্রিকেটপ্রেমীরা ভারত ও পাকিস্তানের লিজেন্ডস ম্যাচটি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেই বহু প্রতীক্ষিত ম্যাচটি শুরু হওয়ার আগেই বাতিল হয়ে গেল। এই সিদ্ধান্ত শুধু আয়োজকদের নয়, এর পেছনে ছিল দেশবাসীর আবেগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় জনরোষ এবং খেলোয়াড়দের স্পষ্ট আপত্তি।
খেলোয়াড়দের অসন্তোষই প্রধান কারণ
এই ম্যাচের ঘোষণা হওয়ার পর প্রথম বিরোধিতা করেন ভারতের প্রাক্তন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। তিনি টুইটারে লেখেন, "আমার কাছে আমার দেশ সবার আগে। দেশের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনও সিদ্ধান্তকে আমি সমর্থন করি না।" তাঁর এই বিবৃতির পর হরভজন সিং, সুরেশ রায়না ও ইউসুফ পাঠানের মতো তারকারাও এই ম্যাচ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। দেশের সম্মান ও সুরক্ষার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না, এই বিষয়ে সমস্ত ক্রিকেটার একমত হন।
আয়োজকদের ক্ষমা প্রার্থনা
WCL-এর পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, "ক্রিকেটপ্রেমীদের আনন্দ দেওয়ার জন্য আমরা এই ম্যাচটি আয়োজন করতে চেয়েছিলাম। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হকি ও ভলিবল ম্যাচ হয়েছে, তাই আমরা ভেবেছিলাম একটি ক্রিকেট ম্যাচও আয়োজন করা যেতে পারে। কিন্তু আমরা বুঝতে পেরেছি, অজান্তে অনেকের ভাবাবেগে আঘাত করেছি।" বিবৃতিতে এও স্বীকার করা হয়েছে যে, প্রাক্তন ভারতীয় খেলোয়াড়দের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলা আয়োজকদের একটি বড় ভুল ছিল। পাশাপাশি, ব্র্যান্ডগুলির উপরও এর প্রভাব পড়েছে, যারা শুধুমাত্র খেলার প্রতি ভালোবাসার কারণে সহযোগিতা করছিল।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও ছিল তীব্র
শিবসেনা (ইউবিটি)-র সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইট করে আয়োজকদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, "ধন্যবাদ! সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনও আলোচনা নয়। দেশের কষ্টের সময় যারা চুপ থেকেছে বা অপমানজনক মন্তব্য করেছে, তাদের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করা হবে না।" তিনি আরও যোগ করেন, "দেশের সম্মিলিত আওয়াজ পাহাড়কেও নাড়াতে পারে।" এই সিদ্ধান্ত उन लोगों की जीत है जो भारत की सुरक्षा और गरिमा के पक्ष में खड़े हुए।
ম্যাচের পেছনের উদ্দেশ্য
WCL এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সারা বিশ্বের অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটাররা আবারও মাঠে ফেরেন এবং দর্শকদের পুরনো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনেন। আয়োজকদের মতে, ভারত-পাক ম্যাচটি শুধুমাত্র খেলার স্পিরিটকে বাড়িয়ে তোলার জন্য ছিল, যেখানে কোনও রাজনীতি বা মতাদর্শ জড়িত ছিল না। কিন্তু যখন এই ইভেন্ট নিয়ে বিতর্ক বাড়তে থাকে, খেলোয়াড়দের অসন্তোষ প্রকাশ্যে আসে এবং সাধারণ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় এর তীব্র বিরোধিতা করে, তখন আয়োজকরা পিছু হটতে বাধ্য হন।
ক্রিকেটের মাঠের চেয়েও বড় দেশ
এই পুরো ঘটনা আবারও প্রমাণ করে দিল যে, ভারতে ক্রিকেট ধর্মের মতো হলেও দেশের চেয়ে বড় কিছু নয়। খেলোয়াড়, দর্শক এবং সাধারণ নাগরিক—সকলেই একসুরে এই বার্তা দিয়েছেন যে, খেলা ও সম্মান ততক্ষণই একসঙ্গে চলতে পারে, যতক্ষণ না তা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া জনমতের সবচেয়ে বড় মঞ্চ
টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। #NoMatchWithTerror-এর মতো হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করতে শুরু করে এবং হাজার হাজার ইউজার এই ম্যাচটি বাতিল করার দাবি জানান। এমন পরিস্থিতিতে আয়োজকদের উপর সামাজিক চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে, সিদ্ধান্ত নেওয়া অনিবার্য হয়ে পড়ে।