বঙ্গোপসাগরে ভারতের বড় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা: অগ্নি-প্রাইমের পরীক্ষা হতে পারে

বঙ্গোপসাগরে ভারতের বড় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা: অগ্নি-প্রাইমের পরীক্ষা হতে পারে

ভারত ২৪-২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে বড় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করবে। ডিআরডিও-র সম্ভাব্য অগ্নি-প্রাইম পরীক্ষা ভারতের কৌশলগত প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। সুরক্ষা প্রোটোকল সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিরক্ষা সংবাদ: ভারত ২৪ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে চলেছে। এর জন্য ডিআরডিও প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই পরীক্ষা উপলক্ষে NOTAM অর্থাৎ Notice to Airmen জারি করা হয়েছে এবং ১৪০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষাটি ওড়িশা উপকূলের আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে করা হবে। মনে করা হচ্ছে, এটি অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হতে পারে, যা ভারতের কৌশলগত শক্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য কী প্রস্তুতি

জারি হওয়া NOTAM থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝারি বা দীর্ঘ পাল্লার হতে পারে। এই পরীক্ষাটি ১৪০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে কার্যকর ক্ষেপণাস্ত্রের হবে। ডিআরডিও-র পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম জানানো হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি নতুন প্রজন্মের অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হতে পারে।

অগ্নি-প্রাইমের বৈশিষ্ট্য

অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্র হল ডিআরডিও দ্বারা তৈরি একটি নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র। এটি হালকা, অত্যন্ত নির্ভুল এবং ১০০০ থেকে ২০০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। পুরানো অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় এটি আরও আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এর ছোট আকার এটিকে সহজে স্থাপনযোগ্য করে তোলে। এটি মোবাইল লঞ্চিংয়ের জন্যও উপযুক্ত এবং তার লক্ষ্যকে অনেক বেশি নির্ভুলভাবে ভেদ করতে পারে।

ভারতের ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি

গত কয়েক বছরে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। ডিআরডিও দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তৈরি করেছে। সম্প্রতি ভারত অগ্নি-৫, পৃথ্বী-II এবং অগ্নি-I-এর সফল পরীক্ষা করেছে। অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম এবং এর মাধ্যমে এশিয়া ও ইউরোপের অনেক অংশ ভারতের কৌশলগত নাগালের মধ্যে চলে আসে। এই পরীক্ষাগুলি ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

কেন এই পরীক্ষা জরুরি

ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রতিবেশী দেশগুলির কার্যকলাপ বিবেচনা করে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উত্তেজনা এবং এশীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ভারতকে তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ক্রমাগত উন্নত করতে হয়। অগ্নি-প্রাইমের মতো ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতকে কেবল আত্মনির্ভরশীলই করে না, বরং যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা করতেও সক্ষম করে তোলে।

ডিআরডিও-র কৌশল

ডিআরডিও-র লক্ষ্য হল ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আধুনিক করা এবং ভবিষ্যতের যেকোনো নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকা। আগামী সপ্তাহগুলিতে আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হবে, যেখানে বিভিন্ন কৌশলগত প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপগুলি ভারতের সামরিক ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করার দিকে নেওয়া হচ্ছে।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সময় সুরক্ষার ব্যাপারে সম্পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পরীক্ষা অঞ্চলটিকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে যাতে কোনো নাগরিক বা বাণিজ্যিক উড়ানের উপর প্রভাব না পড়ে। সামুদ্রিক জাহাজগুলিকেও ওই এলাকা থেকে দূরে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর ক্ষেপণাস্ত্রটির প্রযুক্তিগত ক্ষমতা এবং পারফরম্যান্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

Leave a comment